২০০১ সালে বিয়োগান্তক ঘটনার ১৯ বছর আজ শুক্রবার। ওই ঘটনা পুরো বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসকে বদলে দিয়েছিলো। সারা বিশ্বের মানুষ প্রথমবারের মতো জেনেছিলো একটি সন্ত্রাসীগোষ্ঠী-আল কায়দা ও তার নেতা ওসামা বিন লাদেনের নাম।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে জড়িত ১৯ জঙ্গি চারটি বিমান ছিনতাই করে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি স্থানে। সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে আমেরিকান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট-বোস্টন থেকে উড়ে এসে হামলে পড়ে নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর ভবনটিতে।
জানা যায়, হামলা চালানোর আগে সকাল ৮ টা ১৯ মিনিটে একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট সতর্ক করে বলেন , তাঁদের উড়োজাহাজ ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছে। ককপিট থেকে কোনো উত্তর আসছে না এবং ছিনতাইকারীদের কাছে বিস্ফোরক রয়েছে।
এ ছাড়া জানানো হয়, এক যাত্রীসহ দু ‘জন অ্যাটেনডেন্টকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। পরে জানা যায়, হামলার শিকার হওয়া ওই যাত্রীর নাম ড্যানিয়েল লেউইন। তিনি ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।
ধারণা করা হয়, তিনি ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে উড়োজাহাজের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন এবং নাইন-ইলেভেনের হামলায় তিনিই প্রথম ভুক্তভোগী।
এ হামলার বিষয়টি ঠিকমতো বুঝতে না বুঝতেই ১৭ মিনিট পর ৯ টা ৩ মিনিটে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দক্ষিণ ভবনে আছড়ে পড়ে ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ফ্লাইট-১৭৫। সেটিও বোস্টন থেকে উড়ে এসে হামলা চালায়।
পরে জানা যায়, উড়োজাহাজটি ছিনতাইয়ের পরই একজন অ্যাটেনডেন্ট ইউনাইটেড এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের কবলে পড়েছে এবং দুজন পাইলটই নিহত হয়েছেন। তবে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়েও শেষরক্ষা হয়নি কারো।
এছাড়া একটি বিমান পেনসিলভেনিয়া স্টেট ও অপরটি ভার্জিনিয়া স্টেটে বিধ্বস্ত হয়েছিলো। বলা হয়,হোয়াইট হাউসে একটি বিমান বিধ্বস্ত করতে চেয়েছিললো ষড়যন্ত্রকারীরা। কিন্তু তা পেনসিলভেনিয়ায় ভেঙে পড়ে।
টুইন টাওয়ারের ঘটনায় মারা গেছেন ২ হাজার ৯৯৬ ব্যক্তি, যাদের মধ্যে ২ হাজার ৭৫৩ জনের ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছিলো। বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
টুইন টাওয়ার হামলায় ৪০ জন বাংলাদেশিও মারা গেছেন। এ হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক প্রশ্নের জবাব আজও পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে এসব প্রশ্ন ঘুরেফিরে বারবার আলোচিত হচ্ছে, যার জবাব আদৌ কোনোদিন পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
ওই ঘটনায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছিলো ১২ বিলিয়ন ডলার। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি পরিশোধ করেছিল ৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের দাবিনামা। শুধু বিধ্বস্ত ভবন পরিষ্কার করতে ব্যয় হয়েছিল ৭৫০ মিলিয়ন ডলার।
এসব পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হল এ কারণে যে, ১১ সেপ্টেম্বরের হামলা কোনো সাধারণ ঘটনা ছিলো না। যারাই এ কাজটি করে থাকুক না কেন, এর পেছনে ছিলো একটি গভীর ষড়যন্ত্র। তাদের উদ্দেশ্য কী ছিলো, তা আজও পুরোপুরি পরিষ্কার হয়নি অনেকের কাছেই।
বার্তা কক্ষ, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০
এজি