ইসলাম

দু’বছরের শিশুর ইসলামি জ্ঞানে অবাক বিশ্ব

দুই বছরের শিশু ফাতিমা মাসুদ। ঠিক করে কথা ফুটেনি মুখে। কিন্তু ইসলাম ধর্ম প্রসঙ্গে যে প্রশ্নই করা হচ্ছে, অনর্গল উত্তর দিয়ে যাচ্ছে এ খুদে জ্ঞানি।

সব উত্তর ঠিকঠিক দিয়ে যাচ্ছে শিশুটি। প্রশ্নগুলো করছে তার বড় বোন মারইয়াম মাসুদ।

ফাতিমার প্রতিটি উত্তরই জানিয়ে দিচ্ছে এ বয়সেই নিজের ধর্মের ব্যাপারে কতকিছু জেনে গেছে সে, যা অনেক বয়স্ক মুসলিমও ভালো করে জানেন না।

সামাজিক মাধ্যমে এ ভিডিওটি এখন বেশ ভাইরাল। ফেসবুকে ইতিমধ্যে ভিডিওটি ৫২ লক্ষ ২৫ হাজার বার দেখে ফেলেছে বিশ্ব।

প্রশংসার কমেন্টে ভাসছে এ দুই বোন। মারইয়াম ও তার ছোট্ট বোন ফাতিমাকে দোয়া ও শুভেচ্ছা বার্তা দিচ্ছেন অনেকে।

ভিডিও দেখে অনেকে বলছেন, এ ধরনের চর্চার মাধ্যমে শিশুরা নৈতিক শিক্ষা লাভ করবে এবং তাদের ভবিষ্যত জীবনে প্রতিভা বিকাশের পথ প্রশস্থ হবে। কেউ বলছেন, প্রত্যেক মুসলিম পরিবারের শিশুদের এমন চর্চা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০ বছর পরে এ দেশের সামাজিক চিত্র রূপকথার মতই হবে।

মুসলিম জাতি হিসাবে সব বাবা-মায়ের উচিত এভাবে ইসলামিক শিক্ষা দিয়ে বাচ্চাদের গড়ে তোলা মন্তব্য করে এই দুই বোনকে উদাহরণ হিসাবে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন অনেকে।

এ সহোদরের মতো সন্তানের বাব- মা হওয়া ভাগ্যের ব্যাপার বলে উল্লেখ করছেন অনেকে। ভিডিওটির প্রথমে দেখা যায়, মারইয়াম তার দুই বছর বয়সী বোনকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। এটাই ফাতিমার প্রথম সাক্ষাৎকার উল্লেখ করে মারইয়াম ফাতিমাকে প্রথম প্রশ্ন করে, আমাদের সৃষ্টিকর্তা কয়জন? কোনো সময় না নিয়েই ফাতিমা উত্তর দেয় – একজন।

দ্বিতীয় প্রশ্ন আমাদের সৃষ্টিকর্তার নাম কি? আলকোরআন কার প্রেরিত? সবকিছু কে সৃষ্টি করেছেন? এসব প্রশ্নের উত্তরে ফাতিমা জানায় – আল্লাহ দ্য অলমাইটি (সর্বশক্তিমান আল্লাহ)

ফাতিমার ধর্মের নাম ইসলাম, ইসলাম অর্থ শান্তি, নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর নাম সবই ভালো করে জানা দুবছরের ফাতিমার।

ইসলামের পাঁচটি ভিত্তি সম্পর্কেও জ্ঞান রাখে ফাতিমা। ঠিক করে কথা না বলতে শেখা ফাতিমা কালিমা তাইয়্যেবা, ঘুমাতে যাবার দোয়া ও জ্ঞান বৃদ্ধির দোয়া শিখে ফেলেছে। বিসমিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, ইনশাআল্লাহ কখন বলতে হয় জানে এই শিশু।

রমজান মাসে রোজা রাখার ব্যাপারেও জ্ঞান রাখে মারইয়ামের বোন ফাতিমা।

এ সাক্ষাৎকারের শেষের দিকে আলকোরআনের সবচেয়ে ছোট সুরা আলকাওসার পুরোটা পাঠ করে শুনায় ফাতিমা।

অনেকের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে, কে এই ফাতিমা ও মারইয়াম মাসুদ? নেটিজেনদের উত্তর, এ দুই শিশু বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকা নিবাসী।

সম্প্রতি মারইয়াম মাসুদকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা টেলিভিশন।

সেখানে বলা হয়েছে, মাত্র নয় বছর বয়সে হাফেজে কোরআন হয়েছে মারইয়াম। যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে শিশু মারইয়াম ও ফাতিমা।

বাংলাদেশের বগুড়া জেলা শহরের জলেশ্বরীতলায় মারইয়ামের বাবার বাড়ি। শিশু বয়সেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মারইয়াম।

অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী এই শিশুটি এখন একজন জনপ্রিয় ইউটিউবার। ইউটউবে মারইয়ামের ভিডিওগুলো ৭ কোটি ১০ লাখ বারের বেশি দেখা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র তথা সারাবিশ্বে মুসলিম শিশু-কিশোরদের মধ্যে ইসলামি শিক্ষার প্রসারে অবদান রাখছে মারইয়াম।

ইউটিউব চ্যানেলে মারইয়াম কোটি কোটি মুসলিম শিশুকে আরবি পড়তে ও লিখতে শেখাচ্ছে।

এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমকে মারইয়াম জানায়, ‘আমি তরুণ প্রজন্মকে কোরআন শিখতে ও পড়তে উৎসাহিত করতে চাই। তাদের উচিত ছোটবেলা থেকেই কোরআন পড়া এবং কোরআন মোতাবেক জীবন গড়া। এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে আমি ইউটিউব ও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করছি।’

জানা গেছে, মারইয়াম মাসুদ পারিবারিক সম্পর্কে জনপ্রিয় দস্যু বনহুর সিরিজ লেখিকা রোমেনা আফাজের দৌহিত্রী।

ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন:

ইসলাম ডেস্ক
২২ সেপেটম্বর,২০১৮

Share