চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কাদিরখিল-প্রসন্নকাপ সুন্দরী খালে নির্মিত ব্রিজে উঠতে হয় বাঁশ ও কাঠের তৈরি মই দিয়ে। ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় জনগুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ জনগণের কোনো কাজেই আসছে না। এই এলাকায় কোনো ব্রীজ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার হতো, কিন্তু নৌকা যুগের ভোগান্তি দূর করতে তৈরি হয়েছে একটি ব্রীজ। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় নবনির্মিত সেতুটি জনগণের কোনো কাজে আসছে না। দুই পাড়ের লোকজন বাঁশ-কাঠের মই লাগিয়ে ব্রীজে উঠে পারাপার হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। ব্রীজ নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার এক বছরেও নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক। যে কারণে ব্রীজ পারাপার হতে হলে দু’পাড়ের মানুষকে ব্যবহার করতে হচ্ছে বাঁশের মই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৫নং পশ্চিম সহদেবপুর ইউনিয়নের কাদিরখিল-প্রসন্নকাপ গ্রামের খালের ওপর ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। বছর খানেক আগে ঠিকাদার ব্রিজ নির্মাণ সম্পন্ন করলেও সংযোগ সড়ক না করায় ওই ইউনিয়নের কাদিরখিল, মালচোয়া, শাসনপাড়া, তারাবাড়িয়া, প্রসন্নকাপ, তুলপাই, কান্দিরপাড়, চারটভাঙ্গা,সেঙ্গুয়া গ্রাম সহ প্রায় ১০টি গ্রামের শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষকে বাঁশের মই দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজ দিয়ে পাড় হতে হচ্ছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, দীর্ঘদিন পর এ স্থানে একটি ব্রীজ নির্মান হয়েছে। কিন্তু ব্রীজ নির্মাণ হলেও কোনো কাজে আসছে না। কারন ব্রীজের দুপাশের কোনো মাটি নেই, যার কারণে ব্রীজ থেকে নামতে বা উঠতে বাশেঁর মই ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে আমার কষ্টের শিকার হচ্ছি। কয়েকদিন আগে বৃদ্ধ নারী ব্রীজে উঠতে আকস্মিক ভাবে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। তাই দ্রুত ভাবে ব্রীজের দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মানের দাবি জানাই।
শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতিদিন এ ব্রীজ দিয়ে আমরা যাতায়াত করি কিন্তু ব্রীজে উঠতে ও নামতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। কয়েক বার পরে আমরা মারত্মক ব্যথা পেয়েছি। আমরা চাই অচিরেই ব্রীজের সংযোগ সড়ক নির্মান করা হোক।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন জানান, ব্রিজের নির্মাণ কাজ প্রায় বছর খানেক পূর্বে শেষ হলেও সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট করেননি ঠিকাদার। ঠিকাদারের গাফলতির কারনে প্রতিনিয়ত লোকজনকে বাঁশের মই দিয়ে উঠে ব্রিজ পারাপার হতে হয়। সংযোগ সড়ক না থাকার কারণে এই ব্রিজটি আমাদের এলাকার লোকজনের কোনো কাজেই আসছে না।
ইউপি সদস্য মো. শাহজাহাল সিকদার বলেন, ব্রিজের সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করে দেয়ার জন্য ঠিকাদারকে অসংখ্যবার তাগিদ দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি। এতে করে মানুষের চরম দুভোর্গের শিকার হচ্ছে। দ্রুত ব্রীজের দু’পাশে মাটি ভরাট করার আহ্বান জানাই।
এ ব্যাপারে কচুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো.আব্দুল আলীম লিটন বলেন, ‘ঠিকাদার আহসান হাবীব অরুন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় একটু বিলম্বিত হচ্ছে। তবে ব্রিজটি সচল করতে এবং দুই পাশের সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শুরুর জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। সংযোগ সড়ক তৈরি হলে ব্রিজ দিয়ে মানুষের যাতায়াতে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।’
প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ২ ডিসেম্বর ২০২৪