বিশ্ব শিক্ষক দিবস ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা

আজ ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস। প্রতিবছরই নির্দিষ্ট কিছু উদ্দেশ্য নিয়ে পালিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস’। বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৪ এর প্রতিপাদ্য বিষয় রয়েছে। জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো প্রতিবছর দিবসটি পালন করে আসছে। এবার ২০২৪ এর প্রতিপাদ্য বিষয় হলো:“ শিক্ষকের কন্ঠস্বর:শিক্ষায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকার’(Valuing teacher voices: towards a new social contract for education”) এ স্লোগান দিয়ে বিশ্বব্যাপি এবার দিবসটি পালিত হচ্ছে। প্রতি বছরের মতো এ রকম একটি প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়। বর্তমান সরকারের শিক্ষামন্ত্রণালয় ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস’ উদযাপনে ওচমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আলোচনা সভা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ।

শিক্ষকতা হচ্ছে মহান ও একটি মর্যাদাপূর্ণ পেশা। এখনো সব পেশার মানুষ শিক্ষকদেরকেই বেশি ভক্তি ও শ্রদ্ধা করে। পৃথিবীতে যতগুলো পেশা রয়েছে- তার মধ্যে শিক্ষকতাকে মর্যাদার চোখে দেখা হয়। পৃথিবীতে মা বাবার পরের স্থান হচ্ছে শিক্ষকের। সমাজ ও দক্ষ মানবসম্পদ বির্নিমাণে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। শিক্ষক সমাজকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার কারিগর। শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের মাঝে মূল্যবোধ ও নৈতিকতা সৃষ্টি করে। যার ফলে একজন শিক্ষার্থী সুন্দর মানুষ হয়ে গড়ে ওঠে এবং সমাজ ও দেশের প্রতি দায়িত্বশীল হয়- শ্রদ্ধাশীল হয়। শিক্ষকের এসব কৃতিত্বের স্বীকারোক্তির জন্য তাদের স্মরণ করতে ও কল্যাণ কামনার জন্য শিক্ষকের যে গুরুত্ব সেটা স্বীকার করার জন্য প্রতিবছর তাদের সম্মানার্থে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ পালিত হয়।

শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের লালনপালন এবং শিক্ষাগত অগ্রগতি চালনা করে ভবিষ্যত গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তাদের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর জন্য, তাদের কণ্ঠস্বর শোনা এবং তাদের পেশাকে প্রভাবিত করে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াগুলিতে মূল্যবান হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বছরের বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষকদের যে পদ্ধতিগত চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হয়- তা’মোকাবেলা করার এবং শিক্ষায় তাদের ভূমিকা সম্পর্কে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরার কাজই শিক্ষকের । “শিক্ষকের কণ্ঠের মূল্যায়ন: শিক্ষার জন্য একটি নতুন সামাজিক চুক্তি বা অঙ্গীকার বলা যেতে পারে”।

ইউনেস্কো সদর দফতরে আয়োজিত এ বৈশ্বিক ইভেন্টটি শিক্ষাগত নীতিতে শিক্ষকদের দৃষ্টিভঙ্গি একীভূত করার এবং তাঁদের পেশাগত উন্নয়নের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলার গুরুত্বের ওপর জোর দেবে। এ থিম টিচিং পেশার উপর জাতিসংঘের মহাসচিবের উচ্চ-স্তরের প্যানেল দ্বারা হাইলাইট করা উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জগুলির প্রতি সাড়া দেয়া এবং শিক্ষকদের উপর আমাদের সাম্প্রতিক বৈশ্বিক প্রতিবেদন- যার মধ্যে ক্রমবর্ধমান শিক্ষকের ঘাটতি এবং ক্রমহ্রাসমান কর্মপরিস্থিতির মূল নতুন তথ্য উপস্থাপন করা। দিবসটি ইউনেস্কো, আইএলও, ইউনিসেফ এবং এডুকেশন ইন্টারন্যাশনালের উচ্চ-পর্যায়ের বার্তাসহ একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করবে। এটি শিক্ষায় একটি নতুন সামাজিক চুক্তির প্রয়োজনীয়তা এবং সারা বিশ্ব থেকে শিক্ষকদের কণ্ঠস্বর প্রদর্শন করে, নীতি ও অনুশীলনের উন্নতির বিষয়ে তাদের অন্তর্দৃষ্টি ভাগ করে নেয়ার একটি অংশের উপর একটি মূল বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত করবে। শিক্ষক উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য ইউনেস্কো-‘ হামদান পুরস্কার’ প্রদান করবে বলে জানা যায়।

১৯৪৬ সালে ইউনেস্কো শিক্ষকদের পেশাগত স্বাধীনতা,অধিকার এবং আর্থ-সামাজিক ও নৈতিক ভিত্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্ব শিক্ষক সনদ নামক একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে। বিশ^ শিক্ষক দিবস পালনের যৌতিকতা সম্পর্কে বলা হয়েছে- ১৯৬৬ সালের ৫ অক্টোবর ইউনেস্কোর উদ্যোগে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্ত : সরকার সম্মেলনে শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা সংক্রান্ত বিশেষ সুপারিশ মালা গ্রহণ করা হয়। ১৯৯৩ সালে বিশ্বের ১৬৭ টি দেশের ২১০ টি জাতীয় সংগঠনের ৩ কোটি ২০ লাখ সদস্যদের প্রতিনিধিত্বকারী আন্তর্জাতিক শিক্ষক সংগঠন “ এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল” গঠিত হয় এ আন্তর্জাতিক সংগঠন ।

জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলো কর্তৃক প্রণীত দলিলটি যথাযথ বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করার অর্থবহ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ক্রমাগত অনুরোধ ও আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কোর ২৬তম অধিবেশনে গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ইউনেস্কোর মহা-পরিচালক ড.ফ্রেডারিক এম মেয়রের যুগান্তকারী ঘোষণার মাধ্যমে ৫ অক্টোবর “ বিশ্ব শিক্ষক দিবস” পালনের শুভ সূচনা করা হয়। ফলে এ সালের ৫ অক্টোবর থেকে ইউনেস্কো দ্বারা বিশ্ব শিক্ষক দিবস দিনটি সূচিত হয়।

এটি সারা দেশ-বিদেশে শিক্ষক পেশাজীবীদের জন্য সেরা সম্মান। পরবর্তী প্রজন্মও যাতে কার্যকরি ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে এ দিনটি পালন করে সেটাও উদ্দেশ্য। এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল মনে করে,জাতীয় স্তরে সমগ্র বিশ্বেই একটি বিশেষ দিনকে স্বীকৃতি দেয়া জরুরি যেটি সমাজ-সংস্কার-শিক্ষায় শিক্ষকদের উপযুক্ত মান্যতা দান করার যোগ্য দিন। এর পর থেকে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা স¤পর্কিত সাফল্যকে সমুন্নত রাখাসহ আরো সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালের ৫ অক্টোবর থেকে বিশ্বের ১শ টি দেশে এ দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।

বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন,“ তুমি যদি একটা পুরুষকে শিক্ষা দাও,তাহলে শুধু ওই পুরুষটি শিক্ষিত হয়ে উঠবে। আর যদি একটা নারীকে শিক্ষা দাও,তাহলে গোটা জাতিকে শিক্ষিত করবে।”

সক্রেটিসের মৃত্যুর পর তাঁর ছাত্র এরিস্টোটল শোক বইয়ে লিখেছিলেন,‘‘ I owe to my life to my father & I owe to my education to my teacher Socrates .‘‘ আমি আমার জীবনের জন্যে আমার পিতার কাছে ঋণী আর আমার শিক্ষার জন্যে আমি আমার শিক্ষক সক্রেটিসের নিকট ঋণী। ’’

গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল আরোও বলেছেন,“ যাঁরা শিশুদের শিক্ষাদানে ব্রতী তাঁরা অবিভাবকদের থেকেও অধিক সম্মাননীয়। পিতামাতা আমাদের জীবনদান করেছেন ঠিকই। কিন্ত শিক্ষকরা সেই জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেন।”

পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু বলেছিলেন,‘পৃথিবীতে যে যত মহৎ হোক না কেন, সে কোনো না কোনো শিক্ষকের অধীনে জ্ঞান অর্জন করেছে।’

ধর্মতত্ত্ববিদ উইলিয়াম এলারারি চ্যানিং বলেনÑ,‘‘ একটি শিশুকে শিক্ষিত করে তোলা একটি বড় কাজ এবং সঠিকভাবে বলতে গেলে-একটি রাষ্ট্র শাসনের চেয়েও বড় কাজ।’’

খ্যাতনামা সাংবাদিক এ্যান্ডি রনি বলেন, ‘‘ বেশিরভাগ লোককে বড়জোর ৫ থেকে ৬ জনের বেশি স্মরণ করে না, কিন্তু একজন শিক্ষককে হাজার হাজার মানুষ আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।’’

নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, ‘ একমাত্র শিক্ষাই হচ্ছে বিশ্বকে বদলানোর মোক্ষম অস্ত্র।’

১৯৯৩ সালের ১৭ নভেম্বর ইংল্যান্ডের রাজকীয় পরিবারের সদস্য প্রিন্সেস ডায়না লন্ডনের একটি সমাজসেবামূলক অনুষ্ঠানের বক্তব্যে বলেছিলেন,‘কোনো কিছূ বদলে দিতে আমরা ভয় পাই।’

২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম ‘অন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস’ পালনাকালে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল বলেছিলেন, একমাত্র শিক্ষাই ব্যক্তির জীবন বদলে দিতে পারে।’
মালালা ইউসুফজাই বলেছিলেন, ‘একটি বই, একজন শিক্ষক ও একটি পেন বিশ্বকে বদলে দিতে পারে’। ’ কবি কাদের নেওয়াজের কালজয়ী ‘‘ শিক্ষকের মর্যাদা ’’ কবিতাটির সারমর্ম কথা।

বলতে দ্বিধা নেই-সরকারে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে আজ যাঁরা শিক্ষানীতি তৈরি করছেন ও কাজ করছেন, শিক্ষা অধিদপ্তর চালাচ্ছেন, স্যালেবাস বা কারিকুলাম তৈরি করছেন, পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনছেন, গাদা গাদা বই লিখছেন কিন্তু শিক্ষকদের কথা নেই, অবসর ও কল্যাণে যাঁরা কাজ করছেন-তারা সবাই কোনো এক সময়ে কোনো এক প্রাথমিক,স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা ও বিশ^বিদ্যালয়ে কোনো না কোনো শিক্ষকের কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন।

শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষার্থী ও সমাজের নানান শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে যাতে সম্মান-শ্রদ্ধাবোধ বাড়ে-সে জন্য র‌্যালি-সভা-সেমিনার থেকে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করতে হবে। শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সম্মানবোধ ও মর্যাদা যেন বৃদ্ধি পায়। নির্দেশনায় বলা হয়- শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও সাবেক-বর্তমান শিক্ষক নিয়ে র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সেমিনার করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজ উদ্যোগে শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকা এবং শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষার্থীসহ সবার শ্রদ্ধাবোধ এবং সম্মান বৃদ্ধির জন্য সচেতনতা তৈরিতে ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রেখে র‌্যালি, আলোচনা সভা, সেমিনারের ব্যবস্থা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আমার শিক্ষকতার ৩৫ বছরের জীবনে ডাক্তার, বিচারক, প্রফেসর, মাধ্যমিক শিক্ষক, প্রাথমিক শিক্ষক, ব্যাংকার, প্রবাসী, সেনাবাহিনীর সদস্য,পুলিশ কর্মকর্তা, শিক্ষিকা, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও নানা পেশায় নিয়োজিত রয়েছে শত সাবেক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। বিশ্ব শিক্ষক দিবসের আজকের এ দিনে তাদের কথা মনে ভেসে আসে ও আত্মতৃপ্তিতে মন ভরে উঠে। জাগ্রত হয়-তাদের চেহেরা মনের মণিকোঠায়। ইচ্ছে হয় আবার ফিরে যাই-সেই পেশায় যে টুকু আদর্শ শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছিলাম- তা’ পুষিয়ে দিতে। হয়তো বয়স ও সময়ের কারণে এটা আর কখনোইা সম্ভব হবে না। কেননা -বয়স মানুষের জীবনে একটি বড় ফ্যাক্টর।

স্বাধীনতার পর থেকেই বেসরকারি স্কুল, কলেজ ,কারিগরি ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের জীবন বাঁচানোর জন্যে মাঠে নামতে হয়েছে। বিশেষ করে ১৯৮০- ২০২৩ পর্যন্ত ৪৩ বছরে এসে দাঁিড়য়েছে-শিক্ষক সমাজের দাবি আদায়ের আন্দোলন। বিগত বছরগুলোতে বেসরকারি স্কুল, কলেজ, কারিগরি ও মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি আদায়ের আন্দোলন তেমন অগ্রগতি হয় নি। তবে কিছু নিয়ম কানুন সংশোধন করা হয়। ১৯৮৭ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ‘ জামিয়াতুল মোদাচ্ছেরীনের আহবানে বিজয়স্মরণীতে এসে বক্তব্য দেন এবং শিক্ষকদের দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে মাসে ১শ টাকা বাড়ি ভাড়া,১শ টাকা মেডিক্যাল ভাতা ও একটি ইনক্রিমেন্ট দিয়ে বলেছিলেন,‘ আমি এ দিয়ে শুরু করলাম; ভবিষ্যতে এটা বাড়তে থাকবে। ১শ টাকার বাড়িভাড়া ভাতা শিক্ষকগণ তা’ফিরিয়ে নিতে সরকারকে অনুরোধ করেছেন এবং ‘অসম্মানজনক বাড়ি ভাড়া ভাতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। জেলায় জেলায় পলিথিন ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে শিক্ষকগণ ঘর বানিয়ে দেখিয়েছেন।

শিক্ষকগণ ঈদের দিন বাড়ি বাড়ি কালো পতাকা উড়িয়ে আজকের উৎসব ভাতা আদায় করেন। যদিও মূল বেতনের ২৫% ভাগ শিক্ষক ও ৫০% কর্মচারীরা পাচ্ছেন। পৃথিবীর কোনো দেশে উৎসব ভাতা ভগ্নাংশে প্রদানের রেওয়াজ আছে বলে জানা নেই। সাবেক সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ পর পর দু’ বার বাড়িয়ে বর্তমানে বাড়ি ভাড়া ১ হাজার টাকা ও মেডিকেল ভাতা ৫শ’ টাকায় উন্নীত করেন যা শিক্ষক-কর্মচারীগণ পাচ্ছেন। এদিকে দেশের সকল শিক্ষক কর্মচারী কাছ থেকে কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা ফান্ডে জমা দানের লক্ষ্যে প্রত্যেক শিক্ষক কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৬% হারে কেটে রাখার রেওয়াজ চালু ছিল। বর্তমানে ১০% কাটা হচ্ছে।

১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অবসর সুবিধা শুরু হয় ২০০২ সালে এবং কল্যাণ চালূ হয় ২০০৫ সালে। বর্তমানে ৪ % হারে কল্যাণ ট্রাস্টে এবং ৬% অবসর সুবিধার জন্যে বেতন থেকে কেটে ঔ ফান্ডে নেয়া হয়। বিশ্বব্যাপি ১শ টি দেশের সাথে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতে যথাযথ মর্যাদা,তাৎপর্য ও গুরুত্বসহকারে শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ দিবসটি পালন করে আসছে।

সুতরাং আমাদের নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ,আমাদের দায়বদ্ধতা বিশ্বাস,অন্যকে মান্যতা দেয়া,গুরুজনকে সম্মান জানানো, নিজেদের পারিবারিক রীতিকে মর্যাদা দেয়া-এ সমস্ত কিছুই শিখি বাড়ির গুরুজন ও অভিভাবকদের থেকেই। আদর্শ ও চরিত্রগঠন সব কিছুর প্রাপ্তি তাঁদের থেকেই। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও শিক্ষকতা একটি মহান পেশা হিসেবে সর্বকাল থেকেই স্বীকৃত।

লেখক পরিচিতি : আবদুল গনি, শিক্ষক, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক, চাঁদপুর টাইমস, চাঁদপুর । ফোন : ০১৭১৮-২১১ ০৪৪ ।

Share