অন্যান্য অটোরিক্স চালকের মতোই ইকবাল হোসেন (২০) তার ভাড়া করা তিন চাকার ছোট্র যানটি নিয়ে বিভিন্ন অলিগলি দাপিয়ে বেড়াতেন। মাত্রারিক্ত অটোরিক্সার শহরে সারাদিন পরিশ্রম করে মহাজনের জমার ৭শ’ টাকা রোগজার করতে অনেকটাই বেগ পেতে হয় ইকবালদের।
এতে করে কখনো কখনো সংসারে চাহিদা অনুযায়ী বাড়তি টাকা যোগান দিতে অনেকটাই ব্যর্থ হতেন। তাই অনেকসময় সংসার খরচের টাকা নিয়ে পিতার সাথে সামান্য কথা কাটাকাটিও হতো।
সংগ্রামী ও স্বার্থপরতার এ সমাজে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে না পেরে ও দারিদ্র নামক অভিশপ্ত জীবন পেয়ে অবশেষে বুধবার (১৭ আগস্ট) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন ইকবাল হোসেন।
জীবনের কাছে আত্মসর্মপণ করা অটোরিক্স চালকের অসহায় মা নাজমা বেগমের কাছ থেকে ছেলের এই পরাজয়ের কথা শুনে উপস্থিত সংবাদকর্মীসহ অনেকেই নিস্তব্দ হয়ে যান।
হৃদয় বিদায়ক ঘটনাটি ঘটে চাঁদপুর শহরের বড়স্টেশন সড়কের রেলওয়ে কাচা কলোনীতে ঘটে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, রেলওয়ের একটি পরিত্যক্ত ঘরে দীর্ঘ দিন ধরে মো খলিল দর্জি তার পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। খলিল দর্জি পেশায় একজন অটোচালক। তার ৩ ছেলে ১ মেয়ে। ছোট ছেলে মো. ইকবাল হোসেন (২০) অটোরিক্সা চালাতো। গত কয়েকদিন রোজগার খুব একটা ভালো না হওয়ায় বাবা ও মায়ের সাথে কথা কটাকাটি হয়।
ইকবালের মা নাজমা বেগম জানায়, ‘১৬ আগস্ট মঙ্গলবার রাত ভর গাড়ি চালিয়ে পরদিন বুধবার সকালে বাসায় ফিরে মায়ের হাতে ৪শ’ টাকা হাতে দিয়ে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল ১১টায় তার মা গোসল করে ফিরে এসে ছেলের ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করে ওঠে।’
খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল থেকে ইকবালের লাশ ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে মর্গে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।