মালিক পক্ষের সাথে সরকারের প্রতিনিধিদের দু’টি বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অয়েল ট্যাঙ্কার ব্যতিত সকল নৌ-যান শ্রমিকরা কর্মবিরতী চলমান রয়েছে।
এতে করে সারা লঞ্চ শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট অব্যহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বৃহস্পতিবার মালিকদের সাথে ঢাকায় শ্রম অধিদপ্তরে শ্রমিকদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে বৈঠকটি কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়া শেষ হয়।
এর আগে বুধবার রাতে শ্রমিকদের সাথে সরকার প্রতিনিধিদের বৈঠকটিও কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। এদিকে সরকার প্রতিনিধির এক সদস্য জানিয়েছেন ধর্মঘট প্রত্যাহেরর সিদ্ধান্ত না হলেও দুটি বৈঠকেই এ ব্যাপারে অগ্রতগি হয়েছে।
শ্রম দপ্তরের পরিচালক এসএম আশরাফুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে। মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে আবারও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও সোমবার রাত ১২.১ মিনিট থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত লঞ্চ শ্রমিকদের কর্মবিরতী অব্যাহত রয়েছে। তবে চাঁদপর লঞ্চঘাট থেকে দু’একটি লঞ্চ ছেড়ে যেতে দেখে গেছে।
অপরদিকে শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে লঞ্চ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হঠাৎ করে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করায় জেলার বিভিন্ন স্থান এবং আশপাশের অন্যান্য জেলা থেকে বহু যাত্রীরা লঞ্চঘাটে এসে ফিরে যেতে দেখা যায়।
এ নিয়ে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মালিক ও শ্রমিকদের সমস্যার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।
ফরিদগঞ্জ থেকে আসা লঞ্চযাত্রী আবুল কাশেম ও লক্ষ্মিপুর থেকে আসা রাহেলা বেগম জানান, ‘প্রতিবারের ন্যায় ঢাকা যাবার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে আসি। এসে শুনি লঞ্চ শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছে। তাই সকল লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখে তারা। আমরা সীমিত টাকা নিয়ে এসে এখন অন্যপথে ঢাকা যেতে হলে আমরা সমস্য পড়তে হবে।’
কেন্দ্রীয় নৌ-যান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য মো. হারুনুর রশীদ জানান, ‘নৌ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা মজুরী, পাইপ লাইনের মাধ্যমে তেল সর্ববরাহ, নৌ পথে অবৈধ চাঁদাবাজি, নৌ পথে অবৈধ মার্কিং, নৌ আদালতের হয়রানি বন্ধ করতে হবে, নদী পথে স্বাভাবিক ভাবে নৌচলাচলে ড্রেজিং এর ব্যবস্থা করা, প্রত্যেক নদী বন্দরে নৌ আদালত স্থাপন করা, নৌ শ্রমিকদের বোনাস ও চাকুরীকালীন চিকিৎসা ভাতা প্রদান করতে হবে।’
তিনি আরো জানান, ‘অতীতে মালিক পক্ষ শ্রমিকদের সকল দাবিদাওয়া মেনে নিবে বললেও তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় এ কর্মবিরতীর আহ্বান করা হয়। তাদের দাবি অয়েল ট্যাঙ্কার মালিকগণ শ্রমিকদের দাবি মেনে নিলেও অন্যান্য নৌ-পরিবহণের মালিকগণ তা মেনে না নেওয়ায় এ ধর্মঘট ডাক দেওয়া হয়েছে।