তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে চার দিন ধরে চলা দাবানাল আরও বিস্তৃত হয়েছে। দমকা বাতাস আগুনের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
গত বুধবার থেকে তুরস্কের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় বনাঞ্চলে অন্তত ১০০টি বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসব আগুন এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়েছে এবং দুজন অগ্নিনির্বাপক কর্মীসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন।
বহু ঘরবাড়ি ও কৃষিক্ষেত আগুনে পুড়ে গেছে এবং হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে গেছেন। দাবানলের তীব্রতা এত বেশি যে, তুরস্কের আনতালিয়া ও মারসিন প্রদেশ থেকে ধোঁয়া গ্রিস পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, যার দূরত্ব দাবানলের স্থান থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার।
এরই মধ্যে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় ১৭ প্রদেশের অন্তত ৭০ এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতির সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে আজিয়ান সাগর উপকূলবর্তী পর্যটন নগরী মারমারিসের। সেখানকার বেশ কয়েকটি রিসোর্টে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে পর্যটন ব্যবসা।
দেশি বিদেশি বহু পর্যটক ও স্থানীয় অধিবাসীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি অগ্নিনির্বাপক পাঁচটি বিমান, ৪৫টি হেলিকপ্টার এবং ড্রোনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে এক হাজারেরও বেশি দমকলকর্মী।
তুরস্কের কৃষি ও বন মন্ত্রী বেকির পাকদেমিরলি জানিয়েছেন, গত চার দিনে ৯৮টি দাবানল শুরু হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে ৮৮টিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
দেশটির উপকূলীয় প্রদেশ আদানা, ওসমানিয়ে, আনথাইলিয়া, মেইসিন ও পশ্চিম উপকূলীয় প্রদেশ মুগলায় দাবানল অব্যাহত আছে।
পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান মানবগাতের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত সব বাড়ি পুনর্নির্মাণের ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এরদোগান বলেছেন, আজারবাইজন, রাশিয়া, ইউক্রেন ও সর্বশেষ ইরান থেকে অগ্নিনির্বাপক বিমান এসে পৌঁছার ফলে দাবানল নেভানোর কাজ অনেকটা সহজ হয়েছে।
উপগ্রহ থেকে নেওয়া ছবিতে দেখা গেছে, আনথাইলিয়া ও মেইসিন প্রদেশের দাবানল থেকে ছড়িয়ে পড়া ধোঁয়া দেড়শ কিলোমিটার দূরে সাইপ্রাস দ্বীপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
তপ্ত গ্রীষ্মের সময় তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে দাবানল দেখা গেলেও এবারের আগুন অনেক বড় অংশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলো জানিয়েছে।
আন্তজার্তিক ডেস্ক, ০১ আগস্ট, ২০২১;