আল্লাহ তা’আলা মানুষকে তাঁর দেয়া রিজিক হতে তাঁরই পথে দান করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। তা হলো মানুষকে আল্লাহ যে সম্পদ দিয়েছেন সে সম্পদের জাকাত আদায়ের নির্দেশ। আল্লাহ তাআলা মানুষকে জাকাত ছাড়া সাধারণ দানের ব্যাপারেও নসিহত করেছেন।
জাকাত আদায় এবং সাধারণ দানের ব্যাপারে তাগিদ দেয়ার পেছনে রয়েছে বান্দার জন্য অনেক গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আমি যে রিজিক তোমাদেরকে প্রদান করেছি তা থেকে ব্যায় কর; সেদিন আসার আগে, যেদিন ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ হয়ে যাবে এবং বন্ধুত্ব ও সুপারিশ কোনো কাজে আসবে না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৫৪)
এ আয়াতে জাকাতের ব্যাপারে সতর্কবাণী করা হয়েছে। যারা যথা নিয়মে জাকাত আদায় করে না তাদেরকে উদ্দেশ্য করেও এ আয়াত নাজিল করা হয়েছে। যারা জাকাত আদায়ে গাফলতি করে এবং যারা আল্লাহর পথে দান করতে কৃপনতা করে, তাদের সম্পর্কে বিশেষ সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে।
জাকাত আদায়ের গুরুত্বের প্রতি জোর তাগিদ দিয়ে হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর খেলাফত আমলে জাকাত আদায়ে যারা অস্বীকার করেছিল তাদের বিরুদ্ধে জেহাদ করেছিলেন।
দুনিয়াতে যদি কোনো মানুষের কাছে অর্থ-সম্পদ না থাকে তবে সে ব্যক্তি তাঁর নিজের ও পরিবারের খরচ বহনে কতটা অসহায়, তা ভূক্তভোগী মাত্রই অনুধাবন করতে পারে।
এবার চিন্তা করে দেখুন, কেয়ামতের দিন যদি কারো কাছে নেক আমলের সম্পদ না থাকে তবে তারা সেখানে কত অসহায় এবং নিরুপায় হবে। উল্লেখিত আয়াতে সেই কেয়ামতের দিনের ভয়াবহ চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে।
বলা হয়েছে যে, কেয়ামতের দিন প্রতিটি মানুষকেই একা একা উপস্থিথ করা হবে। সবাই সে দিন নাফসি, নাফসি করবে। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, প্রিয়জন কেউ কারো পাশে থাকবে না; কেউ কারো কোনো কাজে আসবে না।
এমনকি জাকাত আদায় না করে, সাধারণ দান-সাদকা না করে দুনিয়াতে মানুষ যে সম্পদের পাহাড় রেখে যায়; সেদিন তাও তার কোনো কাজে আসবে না।
উপায় একটি আছে-
যদি কেউ আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী দুনিয়ায় সম্পদের জাকাত আদায় করে এবং আল্লাহর দেয়া ধন-সম্পদ থেকে সাধারণ দান-অনুদান দিয়ে থাকে; তবে সেদিন ওই ব্যক্তি তার জাকাত আদায় এবং দান-অনুদানের প্রতিদান লাভ করবে।
এ কারণেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা (আল্লাহর বিধান পালনে) যা আমল করেছে; তা কেয়ামতের দিন দেখতে পাবে আর তোমাদের প্রতিপালক কারো জুলুম করেন না।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ৪৯)
সুতরাং কল্যাণাকমী মানুষ মাত্রেরই একান্ত কর্তব্য হলো অর্থ-সম্পদ আল্লাহর পথে দান করে পরকালীন চিরস্থায়ী জীবনের মহা সফলতা লাভের সুনিশ্চিত ব্যবস্থা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর বিধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে যথাযথ নিয়মে জাকাত আদায়ের পাশাপাশি তাঁরই দেয়া সম্পদ থেকে তাঁর পথে অসহায়-গরিব-দুঃখীর মাঝে দান-অনুদান দেয়ার তাওফিক দান করুন। পরকালের কঠিন বিপদের দিনে এ দানের বরকতে সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
ধর্ম ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১ : ০০ পিএম, ১১ নভেম্বর, ২০১৭ শনিবার
এইউ