দশমীতে সন্ধ্যার মধ্যেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার নির্দেশ : ডিসি

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসিন উদ্দিন বলেছেন, এবার জেলায় উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে। যদি কেউ উৎসবে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করে, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দশমীতে দিনের আলোতে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পূজা মন্ডপ গুলো নিরাপত্তা দেয়া এবং অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার কাজ করবে।

২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এ কথা বলেন।

ডিসি আরও বলেন, জরুরি নম্বরগুলো লিখে দৃশ্যমান স্থানে টাঙাতে বলা হয়েছে। যাতে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সহজেই ফোন দেয়া যায়। তাছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দেওয়ার কথা বলা হয়। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। ফেসবুকে গুজব নিয়ন্ত্রণে হিন্দু মুসলমান সবাইকে সচেতন থাকতে বলা হয়। তাছাড়াও এদিন ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল প্রস্তুত থাকবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি মেজর আরিফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সলিমুল্লাহ সেলিম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাও: বিল্লাল হোসাইন মিয়াজী, সেক্রেটারী এড. মাসুদুল ইসলাম বুলবুল, প্রেসক্লাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত, সিভিল সার্জন শাহাদাত হোসেন, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, ইসলামী আন্দোলন চরমোনাই জেলা সভাপতি মাও: জয়নাল আবেদীন, খেলাফত মজলিস জেলা সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, হেফাজত ইসলাম জেলা সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাহবুবুর রহমান, দৈনিক চাঁদপুর দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মুহাম্মদ ইলিয়াছ পাটওয়ারী।

দীর্ঘ পর্যালোচনা শেষে জেলা প্রশাসক বলেন, চাঁদপুরে অতীতে কোন কিছু ঘটেনি, এবারও ঘটবে না। সংশ্লিষ্ট সকলকে এক মিনিটের জন্যেও শৈথিল্য প্রদর্শন না করার নির্দেশনা দেন। ইভটিজিং প্রতিরোধে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। কিশোর গ্যাং এর অপতৎপরতা নির্মূলে প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। আযানের পাঁচ মিনিট পূর্বে এবং জামাত শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট পর পর্যন্ত উচ্চস্বরে বাদ্যযন্ত্র বন্ধ রাখায় নির্দেশনা দেওয়া।

জেলা পুলিশ সুপার বলেন, প্রত্যেকটি পূজা মন্ডপে পুলিশ, সাদা পোশাকধারী পুলিশ উপস্থিত থাকবে। যেকোনো অপ্রিয় ঘটনা মোকাবেলায় টহল টিম সক্রিয় থাকবে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য পূজা মন্ডপে পরিকল্পিত আক্রমণ করতে পারে এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা সাধারণ সম্পাদক জানান, জেলায় ২২০ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ৫ই আগস্টের পর চাঁদপুরের কোথাও সংখ্যালঘুদের সাথে কোন অপ্রিয় ঘটনা ঘটেনি, তাই আমরা শতভাগ আশাবাদী আসন্ন দুর্গাপূজাও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হবে।

সভায় বক্তব্য রাখেন পূজা উদযাপন পরিষদের চাঁদপুরের আটটি উপজেলার নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন চাঁদপুরের প্রতিটি উপজেলা শান্তিপূর্ণ, এখানে কখনোই কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি আশাকরি এবারও ঘটবেনা।

ফায়ার সার্ভিস কোস্ট গার্ড এবং আনসার সদস্যরা পূজার নিরাপত্তায় সতর্ক থাকবে বলে জানানো হয়। বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা মোকাবেলায় বিদ্যুৎ কর্মীরা ও সতর্ক থাকবেন বলে জানানো হয়।

সভায় সংশ্লিষ্ট সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, এ বছর চাঁদপুর জেলায় ব্যক্তিগত ও সার্বজনীন মিলিয়ে মোট ২২০টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে। এর মধ্যে চাঁদপুর পৌরসভায় ৩৫ টি এবং সদর উপজেলায় ৬টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

Share