ফরিদগঞ্জ

দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ফরিদঞ্জের বিএনপির প্রার্থীরা

বিএনপি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, নাকি করবে না। এই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও (সংরক্ষিত মহিলা) ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক বিএনপির প্রার্থীরা।

২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এখানে তিনটি পদেই জয় পায় বিএনপি সমর্থিতরা। কিন্তু,২০১৪ সালের নির্বাচনে তা হাতছাড়া হয়ে যায়। তখন তিনটি পদেই আ.লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা।

এদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, দলীয় প্রতীকে মার্চে অনুষ্ঠিত হতে পারে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।এ নির্বাচন নিয়ে সরকারি দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। অনেকেই প্রচার প্রাচরাণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এক্ষেত্রে বিএনপি কোন প্রচার-প্রাচরাণা না করলেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদেরকে প্রস্তুত রাখছেন নির্বাচনের জন্যে। কেউ কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই মূহুর্তে বিএনপির প্রার্থী তালিকা সংক্ষিপ্ত হলেও নির্বাচনের সময় কাছে আসার সাথে সাথে বিএনপির প্রার্থী তালিকা আরো বাড়তে পারে।

চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মঞ্জিল হোসেন(ভিপি)। টানা ১৪ বছর তিনি পৌরসভার মেয়র, প্রশাসক ও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। একসময় ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব প্রদানকারী এই নেতা ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভিপি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৩নং ফরিদগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন।

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে জয় লাভ করেছিলেন তিনি। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছে তার নিকটস্থ বিভিন্ন সূত্র।

অপরদিকে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মোহাম্মদ ইউনুছ। ওই নির্বাচনে আ’লীগের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচনের দিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি নির্বাচন বর্জন করেন।

চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শরীফ মোহাম্মদ ইউনুছ আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী। এবিষয়ে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাহলে আমি চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন চাইবো।’

এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য আরেক প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান দুলাল। তিনি ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ ছাত্রসংসদের ভিপি ছিলেন। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে তিনি চেয়ারম্যান পদে দলীয় সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হতে চান বলে জানিয়েছেন।

এদিকে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির আরেক প্রার্থী বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক আলহাজ্ব মো. আলমগীর হোসেন পাটওয়ারী। ১০নং গোবিন্দপুর ইউনিয়নের কৃতি সন্তান আলমগীর হোসেন পাটওয়ারী প্রবাসী থাকা অবস্থায় সৌদি আরব বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ছাত্রদলের মাধ্যমে রাজনীতিতে পথচলা শুরুকরা এই নেতা এলাকাতেও বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয়। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছিলেন আলমগীর হোসেন পাটওয়ারী।

কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপির দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়া সর্ম্পকে তিনি বলেন,‘সকলের দোয়া ও সমর্থন নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে চাই। দল নির্বাচনে আসলে মনোনয়ন চাইবো আর না আসলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো।’

ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী জেলা যুবদলের সদস্য মো. আব্দুল মতিন। তিনি সদ্য বিলুপ্ত হওয়া চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। দায়িত্ব পালন করেছেন উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে।

ফরিদগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে অত্যন্ত পরিশ্রমী ও ত্যাগী এই নেতা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়া সর্ম্পকে চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘বর্তমানে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ আছে কি নাই সে বিষয়ে আপনারা ভালো করে জানেন। তারপরেও বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাহলে দলীয় সমর্থন নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হবো। এজন্যে দলীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী সমর্থক-সহ সকলের দোয়া চাই।’

ভাইস চেয়ারম্যান (সংরক্ষিত মহিলা) প্রার্থী উপজেলা বিএনপির মহিলা সম্পাদক রেবেকা সুলতানা স্মৃতি। তিনি ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন।

এছাড়া সর্বশেষ অনুষ্ঠিত জেলা পরষিদ নির্বাচনে (সংরক্ষিত নারী) আসনে সদস্য পদে জয়ের কাছাকাছি গিয়ে আ’লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। তিনি আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান (সংরক্ষিত নারী) পদে প্রার্থী হবেন বলে চাঁদপুর টাইমসকে জানিয়েছেন।

স্টাফ কসেপন্ডেট
১৯ জানুয়ারি,২০১৯

Share