চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে প্লাটফর্মে প্রতিদিনই শত শত মানুষের সমাগম ঘটে। কেউ ট্রেন যাতায়াতের জন্যে আসেন, আবার কেউবা এখানে গল্পগুজব কিংবা আড্ডা দিতে আসেন।
স্টেশনটিতে কিছু মানুষ রয়েছেন, যারা প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার লড়াইয়ে যাত্রীদের কাছে হাত পেতেই দিনের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করেন। এদের অনেকেই আছে মানসিক ভারসাম্যহীন আবার কেউ আছেন শরীরে কোনো না কোনো অঙ্গ হারিয়ে প্রতিবন্ধী।
জীবন সংগ্রামে কিছুটা নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা মানুষ এখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সময় কাটান, যাদের একমাত্র আশ্রয় স্থল স্টেশন।
এ স্টেশনের নানা ধরনের স্টলের ফাঁকেই রয়েছে জেলার একমাত্র পত্রিকার স্টল ‘দোয়ালগঞ্জ রেলওয়ে বুক স্টল’। জেলার এ বৃহত্তম পত্রিকা স্টলের সাামনে দাঁড়িয়ে নানা শ্রেণি পেশার পাঠক পত্রিকা পড়েন। কিন্তু একটু দৃষ্টিকটু ও স্বাভাবিক আচরণের বাইরে হওয়ায় সরাসরি মেঝেতে বসে কাউকে পত্রিকা পড়তে কখনো দেখা যায়নি।
সংবাদে নিয়োজিত ক্যামেরার ক্লিকে এমনই একটি ছড়ি ধরা পড়ে। ছবিটি দেখে পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগবে তিনি কি পত্রিকা পড়তে পারেন? পত্রিকা পড়ার মতো শিক্ষা যদি তাঁর মাঝে থাকে, তাহলে মেঝেতে বসে কেনো।
তাহলে তিনি কি শারিরীক প্রতিবন্ধী? পাঠকের মতো ক্যামেরার পেছনে থাকা মানুষ হিসেবে প্রতিবেদকের মনেও প্রশ্ন জাগে। তাঁর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতে ইংরেজিতে কিছু বলার চেষ্টা করলেন, কিন্তু প্রশ্নের সাথে তা প্রাসঙ্গিক মনে হলো না।
পাশের অন্য কিছু স্টল মালিকদের সাথে কথা বলে তার নাম পরিচয়ও জানা গেলো না, তবে তারা একটি বিষয়ে নিশ্চয়তা দিলেন, ভদ্রলোক কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। ইংরেজি বলার ভঙ্গি ও পত্রিকা পড়ার ধরনে তাঁরা মনে করেন, তিনি শিক্ষিত।
স্থানীয় এ মানুষগুলোর সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, সারাদিন মানুষের কাছ থেকে হাত পেতে যা পান, তার কিছু অংশ দিয়ে প্রতিদিন একাধিক ইংরেজি ও জাতীয় দৈনিক কিনে পড়েন।
অন্যান্য মানুষের মতই তিনিও দৈনিক পত্রিকাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়েন। কিন্তু একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
ছবি-শরীফুল ইসলাম
প্রতিবেদন- বার্তা কক্ষ
৯ জানুয়ারি, ২০১৮