বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তক মাইকেল মধুসুদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদের জায়গা দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন মহব্বত হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী।
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর শহরের ব্রীজঘাট নামক স্থানে কপোতাক্ষ নদের মধ্যেই এই পাঁকা ভবন নির্মান করেছেন।
কোটচাঁদপুর পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন অবৈধভাবে দখল করে কপোতাক্ষ নদ শেষ করে ফেলা হচ্ছে। দখলবাজরা প্রশাসনের নাকের ডগায় একের পর এক নদী দখল করে মার্কেট বা বাড়ি তৈরি করলেও প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই।
মাইকেল মধুসুধন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক সনেট কবিতার কপোতাক্ষ নদটি ঝিনাইদহের মহেশপুর হয়ে কোটচাঁদপুর শহর অতিক্রম করে যশোরের চৌগাছা হয়ে কেশবপুরে চলে গেছে। বিভিন্ন সময় এই নদের জায়গা দখল করে চাষাবাদ, পুকুর খনন ও পাঁকা ভবন নির্মান করে দখল অব্যহত রেখেছে।
কপোতাক্ষের পাড় ঘুরে দখলের এসব চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শিমুল হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার বলিদাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মহব্বত হোসেন নামে এক ব্যক্তি নদীর কিনার ঘেঁষে নদীর অনেকাংশ দখল কের ভবন নির্মানণ করছেন। ব্রীজঘাট নামক স্থানের সেতুর নিচে প্রায় ৬ শতক জমি দখল করে এই ভবন নির্মান করা হচ্ছে। এতে বর্ষা মৌসুমে কপোতাক্ষ নদের পানি প্রবাহ বাঁধাগ্রস্থ হবে। এভাবে দখল করে নদ এর নাব্যতা শেষ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মহব্বত হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, তিনি ওই স্থানের ৮ শতক জমি কিনেছেন। সেখানে কিছু জায়গা ছেড়ে দিয়ে তিনি ঘর করছেন। কার কাছ থেকে ক্রয় করেছেন জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
জায়গাটি ঠিকমতো মেপে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে এ ব্যক্তি জানায়, একাধিকবার জায়গাটি মাপের পর তিনি এই ঘর নির্মান করা হচ্ছে। আর যে স্থানে তিনি ঘর করছেন তাতে নদের কোনো ক্ষতি হবে না বলেও জানান।
বিষয়টি নিয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশাফুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, বিষয়টি তাদের জানা নেই। তবে তিনি নিজে সরেজমিনে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন।
এ ব্যাপারে বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানান, তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য শাখা (এসও) কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে এই দখলের প্রতিবাদে কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের কর্মীরা সম্প্রতি মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছেন।
এ সময় তারা অবিলম্বে ভবন নির্মান বন্ধ ও দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এছাড়া ঝিনাইদহ পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদারের কাছে স্মারক লিপি দিয়েছেন। তারা কপোতাক্ষ নদের মধ্য থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি করেছেন।
ঝিনাইদহ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সভাপতি সংবাদিক আমিনুর রহমান টুকু ও সাবেক উপধাক্ষ্য এম এন শাহজালাল জানান, কপোতাক্ষ নদের জমি ছেড়ে না দিলে তারা আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।
জাহিদুর রহমান তারেক, ঝিনাইদহ করেসপন্ডেন্ট [/author]
: আপডেট ৮:৪৪ পিএম, ২ মার্চ ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ