Saturday, 25 July, 2015 04:35:00 AM
চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক:
স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফিরছিল ছাত্রীটি। মাঝপথে পথরোধ করে চার বখাটে। দেয় কুপ্রস্তাব। একজন হাত ধরে টানা হেঁচড়া শুরু করে। কেউ ওড়না টেনে খুলে ফেলে। কেউ মুখে মুখেই (অশ্লীল কথা) ধর্ষণ করে! প্রকাশ্যে দিনের বেলায় রাস্তায় ঘটে এ ঘটনা।
সম্ভ্রম রক্ষায় ছাত্রীটি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করে। এসময় আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে আসে। এর আগেই পালিয়ে যায় বখাটেরা। এরপর জানাজানি হয়। পুলিশ কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালতের আশ্রয় না নিয়ে বসে গ্রাম্য সালিশ। ডাকা হয় বখাটেদের। কানধরে উঠবস, হাতজোড় করে ক্ষমা প্রার্থনা করে তারা। শাস্তিটা লঘু হওয়ায় মাতবররা আরেকটু কঠিন শাস্তির (!) ব্যবস্থা করেন। নিজের থুথু নিজেই চেটে খেতে বলেন।
এমনি সালিশের ঘটনা ঘটেছে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার চিকনী গ্রামের আঙ্গুর আলীর বাড়িতে। সাজাপ্রাপ্ত বখাটেরা হচ্ছে- জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও চিকনী গ্রামের বাসিন্দা সেলিম সরকার মানিকের ছেলে মিম সরকার, তার ভাতিজা মেহেদী হাসান, একই গ্রামের নুরুল হকের ছেলে নুরশাদ মিয়া ও অবিজল মিয়ার ছেলে হযরত মিয়া।
চিকনী গ্রামের বাসিন্দা ফারুক, তোহা সরকার, কবির, মঞ্জুরুল, মোতালেবসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, প্রকাশ্য দিনের বেলায় রাস্তার মধ্যে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ঘটালেও থানা পুলিশকে জানানো হয়নি। তার পরিবর্তে রাতের আঁধারে গোপনে সালিশি বৈঠকে ওই বখাটেদের নামমাত্র সাজা দেয়া হয়েছে। ওই বখাটেরা এর আগেও এলাকায় নানা অপকর্ম করেছে। তাই তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে নিয়ে বিচার করা উচিৎ ছিল।
ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মাসুদ সরকার মিলন এ প্রতিবেদককে জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে অষ্টম শ্রেণীর ওই ছাত্রী স্কুল ছুটির পর নাগবাড়ি-চিকনী রাস্তা ধরে বাড়ি ফিরছিল। মাঝপথে ওসমান মাস্টারের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে ওই চার বখাটে তার পথরোধ করে। এক পর্যায়ে বখাটে মেহেদী ছাত্রীর হাত ধরে টানাহেঁচড়া করতে থাকে। এ সময় ছাত্রীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ছাত্রীকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে।
বখাটেদের নামমাত্র সাজার বিষয়ে জানতে চাইলে সালিশ বৈঠকে উপস্থিত থাকা ইউপি সদস্য মাসুদ সরকার বলেন, ‘সালিশ বৈঠকে বখাটে চার যুবকের বাবা-মা ও গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সালিশ বৈঠকের বিচার ছাত্রীর পরিবার মেনেও নিয়েছে।’
চাঁদপুর টাইমস : ডিএইচ/২০১৫।
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur