Home / শীর্ষ সংবাদ / ঈদকে ঘিরে চাঁদপুরে নিন্মমানের সেমাই প্রস্তুত
ঈদকে ঘিরে চাঁদপুরে তৈরী হচ্ছে নিন্মমানের সেমাই প্রস্তুত
ফাইল ছবি

ঈদকে ঘিরে চাঁদপুরে নিন্মমানের সেমাই প্রস্তুত

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার ও নতুনবাজারসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় রাত দিন দেদারছে কাজ করে তৈরি করছে নানা ধরনের নিন্মমানের সেমাই প্রস্তুত।

প্রতিবছর এসব কারখানাগুলোকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পোড়া ভোজ্য তেল ব্যবহার, নিষিদ্ধ ঝুড়ি সেমাই তৈরিসহ নানা কারনে ভ্রাম্যামাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমাণা আদায় করা হয়।

তাই প্রথমবারের মত এ বছর রমজানের পূর্বেই চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মানসম্মত সেমাই তৈরির জন্য কারখানার শ্রমিকদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু প্রশিক্ষণ নিলেও তা মানছে না কেউ। পূর্বের ন্যায় যে যার ইচ্ছে মতই চালাচ্ছে সেমাই তৈরির কার্যক্রম।

অনুমোদনহীন বিভিন্ন নামে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হওয়া এসব খোলা সেমাই বাজার জাত করা হচ্ছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদি ইউনিয়নের হারুন বেকারী, শহরের বাসস্ট্যান্ড মধুফুড বেকারী, হাজী মহসিন রোডের ঢাকা কনফেকশনারী, বাবুরহাট আর এস ফুড বেকারী, পুরানবাজার রয়েজ রোড এলাকার কোহিনুর বেকারী, ফায়ারসার্ভিস সংলগ্ন আলম বেকারী, মীম বেকারী, বাতাসা পট্টিতে প্রাইম বেকারী, হাজী বেকারী, মতলব উপজেলায় ২ টি, হাজীগঞ্জে ২ টি, ফরিদগঞ্জে ১টি, কচুয়ায় ১টিসহ জেলা উপজেলায় এ ধরনের অসংখ্য কারখানায় সেমাই তৈরি হচ্ছে বলে জানা যায়।

সরজমিন ঘুরে দেখাযায়, কারখানাগুলো পূর্বের চাইতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় কিছুটা পরিবর্তন হলেও খোলা সেমাই তৈরিতে প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা।

প্রসঙ্গত অধিকাংশ সেমাই কারখানাগলোতে দীর্ঘদিনের পোড়া নিন্মমানের পামওয়েল তেলে ভাজা হচ্ছে সেমাই।

কারখানাগুলোতে দীর্ঘ এলাকা জুড়ে সারিবদ্ধভাবে খোলাসেমাই সাজানা রয়েছে। শ্রমিকদের হাতে নেই হ্যান্ডগ্লাবস, ময়লা ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে তৈরি হচ্ছে এ সেমাইগুলো।

আবার সেমাই তৈরির ময়দার খামিরের উপরে নেই ঢাকনা। এতে করে শ্রমিকদের শরীরের ঘাম এ খামিরের সাথে মিশে যাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও নিন্মমানের পণ্য দিয়ে তৈরি হচ্ছে এসব সেমাই।

আরো দেখা যায়, সেমাই প্যাকেটজাত না করে অধিক মুনাফার আশায় পলিথিন মুড়িয়ে বাশের তৈরি ঝুঁিড় করে বাজারজাতের জন্য প্রস্তুত করছে মালিকরা।

প্রশাসনিকভাবে এধরনের অস্বাস্থকর ঝুঁড়ি সেমাই তৈরি করা নিষিদ্ধ রয়েছে বলে জানাযায়।

কোন কোন বেকারী প্রস্তুতের অনুমোদন নিলেও অনেকেই অনুমোদন না নিয়ে সেমাই তৈরিতে ব্যস্থ হয়ে পরেন। শুধু খোলা সেমাই তৈরিই নয় অনেক কারখানায় বিভিন্ন নামীদামী ব্যান্ডের মোড়ক ব্যবহার করে অনেকে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করছে।

কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক জানায়, ক’দিন পর ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে নিজ বাড়ীতে চলে যাবো। তাই পূর্ব থেকেই সেমাই প্রস্তুত করে বাজারজাত করলে আমাদের কাজের ব্যস্ততা একটু বেশি। মালিকরা আমাদেরকে যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছে আমরা সেভাবেই কাজ করছি। তা স্বাস্থ্য সম্মত কিনা আমরা জানিনা।

পুরানবাজার আলম বেকারী এন্ড ফুডসের স্বত্ত্বাধিকারী শাহ আলম জানান, আপনারা অন্যান্য ফ্যাক্টরীগুলোতে ঘুরে আসেন, তারা আমাকে ফোন করলে আমি আাপনাদের সাথে যোগাযোগ করবো।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মিজানুর রহমান জানান, নিন্মমানের তেলে ভাজা এসব সেমাই খেয়ে শিশুসহ সকল বয়সের মানুষ অসুস্থ হয়ে পরার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্যাষ্টিক, আলসার, ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের রোগ হতে পারে।

এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর সেমাই প্রস্তুতকারকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।

প্রতিবেদক-মাজহারুল ইসলাম অনিক
: আপডেট, বাংলাদেশ সম ১১ : ৫৯ পিএম , ১০ জুন ২০১৭, শনিবার
এইউ

Leave a Reply