ঢালিউডের এক সময়ের আলোচিত নায়িকা ময়ূরী, তৃতীয় বারের মতো বিয়ে করেছেন— এমন খবরে সরগরম গণমাধ্যম। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত ময়ূরী জানান, তৃতীয় নয়, এটি তাঁর দ্বিতীয় বিয়ে।
ময়ূরী আজ বুধবার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘হ্যাঁ আমি বিয়ে করেছি, তবে তা তৃতীয় বিয়ে নয় দ্বিতীয়। আমি তৃতীয়বার বিয়ে করেছি এমন কথা রটিয়ে আমাকে হেয় করা হচ্ছে। আমার স্বামীকে বিব্রত করা হচ্ছে। না জেনে এমন নিউজ করায় আমাদের দুই পরিবারই বিব্রত। সবার বুঝতে হবে একসময় চলচ্চিত্রে কাজ করলেও আমি মানুষ। সবার মতো আমারও জীবন আছে।’
কবে বিয়ে করেছেন জানতে চাইলে ময়ূরী বলেন, ‘গত মাসে আমি শফিক জুয়েলকে বিয়ে করেছি। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। আমরা সুখে আছি, শান্তিতে আছি। প্লিজ আমাদের শান্তিতে থাকতে দিন।’
শফিক জুয়েলের সঙ্গে পরিচয়ের বিষয়ে ময়ূরী বলেন, ‘তার সঙ্গে আমার পরিচয় এক বছরেরও বেশি হবে। সে আমার মেয়েকেও অনেক পছন্দ করে। এক সময় আমাদের মাঝে একটা মানসিক সম্পর্ক হয়, আমরা বিয়ের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি, শফিকের যেহেতু আমার মেয়েকে নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, তাই একটা সময় তাঁকে আমি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। আমাদের দুই পরিবারকে জানিয়ে পারিবারিকভাবেই আমরা বিয়ে করেছি।’
শফিক ধার্মিক মানুষ জানিয়ে ময়ূরী বলেন, ‘আমার স্বামী একজন ধার্মিক মানুষ। তিনি নামাজ পড়েন, তাবলিগ জামাতে যান। আমাকেও নামাজ পড়তে উৎসাহ দেন। আমি এখন ঠিক মতো নামাজ কালাম পড়ি। এর মধ্যে একবার তাবলিগেও গিয়েছিলাম, আবারও যাওয়ার ইচ্ছে আছে।’
ময়ূরীর প্রথম স্বামী ছিলেন রেজাউল করিম খান। সে সম্পর্কে ময়ূরী বলেন, ‘আমি ভালোবেসে ২০০৯ সালে প্রথম বিয়ে করেছিলাম, রেজাউল করিম খানকে। তিনি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। আমরা সুখেই দিন কাটাচ্ছিলাম। আমাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কিন্তু আমার প্রথম স্বামী মারা যান ২০১৫ সালে, তারপর থেকে এতদিন আমি আমার মেয়ে অ্যাঞ্জেলকে নিয়ে একাই ছিলাম। কিন্তু মেয়ের জন্য আমাকে নতুন করে ভাবতে হয়েছে।’
নব্বইয়ের দশক থেকে এ পর্যন্ত ময়ূরীর তিন শতাধিক ছবি মুক্তি পেয়েছে, যার প্রায় সবই অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত। মরণ কামড়, মরণ নিশান, ইজ্জতের লড়াই, টক্কর, বোবা খুনি, আজব গজব, ডাকু ফুলান, মৃত্যুর মুখেসহ অসংখ্য আলোচিত ছবির নায়িকা তিনি। আবার নার্গিস আকতার পরিচালিত ‘চার সতীনের ঘর’ ছবিতে নায়ক আলমগীরের বিপরীতে অভিনয় করে প্রশংসিত হন ময়ূরী।
১৯৯৮ সালে ‘মৃত্যুর মুখে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন তিনি। তাঁকে চলচ্চিত্রে নিয়ে আসেন মাহমুদ নামের একজন প্রযোজক। কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের পরই ময়ূরী জড়িত হন তথাকথিক অশ্লীল ছবির সঙ্গে। কাটপিস সিনেমার খ্যাতিমান অভিনেত্রী ছিলেন তিনি।
পরে চলচ্চিত্রে ‘অশ্লীলতা বন্ধে’র আন্দোলন শুরু হলে কাজ হারাতে শুরু করেন মূয়রী। সেই সময় মঞ্চে ও যাত্রাপালায় কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে থাকেন। চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে গেলেও চলচ্চিত্রের দর্শক তাঁকে ভোলেনি। তবে ময়ূরী বরাবরই গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলেন। সম্প্রতি দ্বিতীয় বিয়ের কারণে আবারও গণমাধ্যমে উঠে আসে তাঁর নাম।
বাতর্া কক্ষ