তুরস্কে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের নিয়ে মানবিক সংকটের আশঙ্কা করছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দিকী। সেখানে প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশি আটকে পড়েছে। আটককেন্দ্র থেকে মুক্তি পেয়ে তাদের কেউ কেউ আবার অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) ঢাকায় সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে ইউরোপ গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের এ ধরনের অবৈধ অভিবাসনের ঝুঁকির বিষয়ে আরো সচেতন ও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে ইরান, লেবানন, জর্দানে বৈধভাবে কর্মরত বাংলাদেশিদের ইউরোপে অনুপ্রবেশের সুযোগ লাভের আশায় তুরস্কে আসার প্রবণতা বেড়েছে।
তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, ইউরোপে অবৈধভাবে গমন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ কারণে তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ওই দেশটিতে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনে শ্লথগতি ও মানবিক সংকটের আশঙ্কা করছেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাস ও ইস্তাম্বুলের বাংলাদেশ কনসু্যুলেট জেনারেলের হিসাব অনুযায়ী দেশটিতে আটকে পড়া বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। এতে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। যারা অবৈধভাবে তুরস্কে অবস্থান করছে অথবা যারা তুরস্কের ডিটেনশন সেন্টার থেকে ছাড়া পাচ্ছে, তাদের অনেকে আবার ইউরোপ যাওয়ার জন্য সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার চেষ্টাকালে মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে। এদের অনেকেই তুরস্কে সক্রিয় মানবপাচারকারী দলের প্রলোভনে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছে। সম্প্রতি ইস্তাম্বুলে একজন বাংলাদেশি মারাও গেছে।
রাষ্ট্রদূত আরো জানান, বাংলাদেশি নাগরিকরা তুরস্কে সক্রিয় বিভিন্ন সংঘবদ্ধ সংগঠনের খপ্পরে পড়ে টাকার লোভে সন্ত্রাসমূলক কার্যক্রমে জড়িত হচ্ছে। সম্প্রতি তুরস্কে সংঘটিত ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় উজবেক ও কিরগিজ নাগরিকদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
রাষ্ট্রদূত জানান, অবৈধভাবে আসা ব্যক্তিদের তুরস্ক কখনোই বৈধ কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয় না। ফলে এসব লোককে দীর্ঘদিন ধরে স্বল্প বেতনে বিপজ্জনক কাজ করতে হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বিদ্যমান অভিবাসন চুক্তির আওতায় তুরস্ক থেকে ইউরোপে পাড়ি জমানো অসম্ভব এবং এ অপচেষ্টা অর্থহীন। তাই তিনি ইউরোপ গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের এ ধরনের অবৈধ অভিবাসনের ঝুঁকির বিষয়ে আরো সচেতন ও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯ : ৪০ এএম, ৫ জুলাই ২০১৭, বুধবার strong>
এইউ