প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চাঁদপুর জেলায় নির্বাচনী প্রচারণায় যোগাদন করেছেন।
বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চাঁদপুরে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখেন।
ভিডিও কনফারেন্স উপলক্ষে চাঁদপুরের ৫টি আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা-উপজেলা পর্যায়েল নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ ভোটাররা শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চাঁদপুরে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার চাঁদপুরবাসীর কাছে আবেদন আগামী ৩০ ডিসেম্বর নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন। আমরা বাংলাদেশ ক্ষুদামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ।
আমরা এই দেশ থেকে সন্ত্রাস-দারিদ্র দুর করেছি। আমরা মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরনে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা নির্বাচনে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তার চাইবে বেশি কাজ করবো ইনশাল্লাহ। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। চাঁদপুরে জনসভায় চাঁদের হাট বসেছে। তাই ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে চাঁদপুর-৫ আসনে সকলে নৌকা মার্কায় ভোট দিন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের মানুষ নৌকায় ভোট দিতে উদগ্রীব, তাই ঐক্যফ্রন্ট সন্ত্রাস করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে চায়। এক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ধৈর্য্য সহকারে কাজ করতে হবে। যেহেতু তারা সন্ত্রাস করে নেতা-কর্মীদের খুন করছে তাই নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের নিয়ে রাখতে হবে।
‘বিএনপি-জামায়াত জোট এরা সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে। এরা হত্যা, সন্ত্রাস ও গুমের রাজনীতিতে অভ্যস্থ। তারা জানে বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট দিবে। এ জন্যা তারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
আজকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার করে যাচ্ছে, বোমা হামলা করে যাচ্ছে, নির্বাচনী প্রচার মিছিলের ওপর হামলা করছে, আমাদের নির্বাচনে অফিস পোড়াচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের ৪৫ জন আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপি-জামায়াত জোটের হাতে।’
তিনি বলেন, যেখানেই সুযোগ পাচ্ছে তারা সেখানেই হামলা করে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসনে বিএনপি- জামায়াত জোটের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে যাচ্ছে। এটাই তাদের চরিত্র, সেটাই তারা করে যাচ্ছে। এবার হামলায় আমাদের পাঁচজন নিহত ও বহু আহত হয়েছে যেটা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এসেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তারা জানে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী মানি লন্ডারিং দুর্নীতি অগ্নিসংযোগকারীদের মানুষ ভোট দেবে না। আর সেই কারণে তারা তাদের পেশী শক্তি দেখানোর চেষ্টা করছে। অতীতে তারা যেভাবে মানুষকে আক্রমণ করেছে ঠিক সেভাবে এখনও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে।
দেশের মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, জনগণের কাছে আহ্বান জানাবো, নির্বাচন জনগণের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার সুযোগ। আপনারা যারা ভোটার সকলে ভোট দেবেন। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। আমরা এখানে দেখেছি- ঐক্যফ্রন্ট তাদের আচার-আচরণ থেকে কেউ-ই রেহাই পাচ্ছে না।
ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তিনি নির্বাচন কমিশনে গিয়েও পুলিশকে গালিগালাজ করে এসেছেন। তার যে অকথ্য ভাষা- তিনি নাকি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন। তার মুখ থেকে অকথ্য ভাষা নোংরা গালি এটা নিশ্চয়ই কেউ আশা করে না। এ রকমই তার চরিত্র।
কোর্টে বসে আমার অ্যাটর্নি জেনারেলকে নোংরা গালি দিয়েছে। এখন আবার পুলিশ বাহিনীতে নোংরা গালি দিয়ে বসেছেন। সাংবাদিকদের খামোশ বলে দেখে নেব হুমকি দিয়েছেন। এই আচরণ থেকে বোঝা যায় তাদের নেতা কর্মীদের আচরণটা কতটা জঘন্য। আমরা এসবের তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই।
চাঁদপুরের ভিডিও কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ।
সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মজিবুর রহমান ভুঁইয়ার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর-৪ আসন (ফরিদগঞ্জ) আওয়ামীলীগ থেকে মনোনিত প্রার্থী সাংবাদিক মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, চাঁদপুর-৫ আসন (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আওয়ামীলীগ থেকে মনোনিত প্রার্থী মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী,
সংরক্ষিত আসনের নারী এমপি নুর জাহান বেগম মুক্তা, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ডা. মোহাম্মদ শামছুল ভূঁইয়া এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহেমদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
প্রতিবেদক- মাজহারুল ইসলাম অনিক ও শরীফুল ইসলাম
২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮