তিশা বিনে অর্ধেক ফারুকী : তিশা ফারুকীর দুর্লভ কিছু ছবি

চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ১১:০৩ অপরাহ্ন, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার

টানা পাঁচ বছরের প্রেম। তারপর বিয়ে। একই ছাদের নিচে কাটিয়ে দিলেন আরো পাঁচবছর। হাতে হাত রেখে অনায়াশেই দশটা বছর কাটিয়ে দিলেন তারা। ‘তারকাদের সংসার টেকেনা’ প্রচলিত ধারণাকে তুড়ি মেরে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তারা। প্রমান করেছেন, ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে সারাটাজীবন কাটিয়ে দেয়া যায়। রুদ্র হকের পরিকল্পনায় বাংলামেইলের ঈদ আয়োজনে সফল জুটি নন্দিত নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রতিভাবান অভিনয়শিল্পী নুসরাত ইমরোজ তিশার প্রেম, বিয়ে ও সংসারের গল্প লিখেছেন সাইমুম সাদ

প্রেম শুরুর আগে…

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
সরাসরি প্রেমের কথা বলতে পারতেন না। তবে ইনিয়ে বিনিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন বেশ ক’বার। মজার ছলে বলতেন, ‘তোমার বড় বোন থাকলে তাকে আমি অবশ্যই বিয়ে করতাম।’ অথবা কখনো কখনো আরো পরিস্কারভাবে বোঝানোর জন্য বলতেন, ‘তোমার মতো মেয়ের ফটোকপি চেহারা পেল বিয়ে করতাম।’

তিশা
ডিরেক্টর সাহেবের মনের মতিগতি ধরে ফেলেছিলেন তিশা! কিন্তু তিনি কম যান না, সরেস কাঠি! মুখ ফুটে বলেননি, ‘তোমাকে ভালোবাসি’। অপেক্ষা করছিলেন ওপাশ থেকে সরাসরি প্রস্তাবটা কখন আসে। তবে সরয়ার ফারুকীর প্রশ্নের উত্তরে বলতেন,আমার বড় বোন থাকলে সত্যি সত্যিই আপনার সঙ্গে বিয়ে দিতাম!

প্রেমের জন্য স্যাক্রিফাইস

একটা সময় প্রচুর সিগারেট খেতেন সরয়ার ফারুকী। তিশার প্রেমে পড়ে তারই নির্দেশনায় সিগারেট ছেড়ে দেন। তারপর কখনোই আর সিগারেট মুখে তোলেননি তিনি। ফারুকী সিগারেট ছাড়ার পর তিশার মনটা গলে যায়। তার প্রতি দুর্বলতা কাজ করে। বলা চলে তখনই প্রেমে পড়েছিলেন।

প্রেমের আগেই বিয়ের প্রস্তাব

প্রেমের কথা বলতে না পারলেও সরয়ার ফারুকী কিন্তু সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিশাকে। ‘এই মেয়ে আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। করবা? তিশার সম্মতিও ছিল বটে। কিন্তু বিয়েটা হবে হচ্ছে করেও বছরের পর বছর আটকে ছিল।

বিষয়টা নিয়ে বেশ গোস্বা করে ছিলেন তিশা। লোকটা প্রতিবছর বছর, ‘বিয়ে বিয়ে’ করে মাথা নষ্ট করে। কিন্তু বিয়েটা সেরে ফেলার মুরোদ নাই। শেষে আল্টিমেটাম জারি করলেন তিশা, ‘এই বছর যদি বিয়ের কথা বলছো তাহলে কিন্তু আর বিয়েই করবো না’। মজার ব্যাপার সেই বছরই তাদের বিয়েটা হয়ে যায়।

বিয়ে আগে

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
দুজনের পরিবারকে বিষয়টা জানানো হলো মে মাসে। ঠিক করা হলো জুলাইয়ের ১৬ তারিখে তাদের বিয়ে। সরয়ার ফারুকীর ঘুম হারাম! বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। ভাবতে শুরু করলেন, ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা যদি নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া দুজন মানুষের অ্যাডজাস্টমেন্টের একটা ব্যাপার আছে। ঠিকঠাক মতো সব অ্যাডজাস্ট হবে তো!

তিশা
তিশা অবশ্য ওসব চিন্তার ধারে কাছেও ছিলেন না। প্রেম শুরুর পর থেকে তিন-চার বছর ধরে ফারুকীর বাসায় ছিল তার আসা-যাওয়া। বাড়ির প্রত্যেকটা জানালার কপাট তার চেনা। সরয়ারের বাবা-মার সঙ্গে সম্পর্কটা খুব ভালো ছিল। তাই বিয়ের আগের চিন্তা ছিল না বললেই চলে।

বিয়ের পর

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
যেমনটা ভেবেছিলেন তেমনটা ঘটেনি। তিশা একদম আলাদা। তার ব্যক্তি স্বাধীনতায় কখনোই হস্তক্ষেপ করেনি। সরয়ার বরং আগের মতোই আছে। জীবনের পার্থক্য খুব একটা নেই। তবে একটা পরিবর্তন হয়েছে। আগে গাড়ির ড্রাইভারে পাশে বসতেন। এখন গাড়ির পেছনের সিটে দুজন বসেন। বিয়ের পর স্ত্রীরা সাধারণত পছন্দ-অপছন্দ জামাইয়ের উপর চাপিয়ে দিতে পছন্দ করেন। কিন্তু তিশা কোন ডিশিসন চাপিয়ে দেয়নি।

তিশা
তিশা জানালেন,‘ও ক্রিয়েটিভ মানুষ। তাই কোন কিছুই ওর উপর চাপিয়ে দেইনা। ওকে আগের মতোই থাকতে দিয়েছি।’

তাদের চোখে সংসার

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
সরয়ার ফারকীর চোখে, ‘স্ত্রীর সাথে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে যে, আপনারা দুজন এক হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি। অনেক কিছুই দুজনের মধ্যে মিলবেনা। রুচি-চাহিদার ভিন্নতা থাকতেই পারে। এটা পরিস্কারভাবে মাথায় রাখতে হবে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রাখতে হবে।’

তিশা
তিশার ভাষ্য, ‘আমরা বিয়ে করেছি। সংসার করছি। একে অপরের ভুলত্রুটিগুলো জেনে শুনেই বিয়ে করেছি। তাই সবকিছু মেনে নিয়েই সংসারটা করতে হবে। আমার কথা হলো আমি সুখে থাকবো, পাশের মানুষটাকেও সুখে রাখবো।’

বন্ধুত্ব বনাম দাম্পত্য

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
তিশাকে বন্ধুও ভাবেন তিনি। বেশিরভাগ স্বামী-স্ত্রীর যে সমস্যা হয়, অনেক কথা শেয়ার করলে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া বাধে। প্রেমিকা তিশার কাছে অনেক কিছুই শেয়ার করতেন কিন্তু স্ত্রী তিশার কাছে অনেক কিছুই শেয়ার করা হয়না। যেমনটা কেউ তাকে চোখ মারলে প্রেমিকা তিশাকে বলতেন কিন্তু বিয়ে করার পর শেয়ার করেননা।

তিশা
মাঝে মধ্যে ফারুকীকে বন্ধু মনে করেন। সবকিছুই শেয়ার করেন। তবে কিছু বিষয় শেয়ার করেননা। কারণ শেয়ার করলে যদি ফারুকী কষ্ট পান!

চাঁদপুর টাইমস-ডিএইচ/২০১৫।

Share