Home / সারাদেশ / তিন মাসে বেকারের সংখ্যা পৌনে ১১ লাখ
বেকারের

তিন মাসে বেকারের সংখ্যা পৌনে ১১ লাখ

চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কাজে নিয়োজিত মানুষের সংখ্যা কমেছে প্রায় পৌনে ১১ লাখ। এ সময় শ্রমশক্তি হিসেবে কাজে যোগদানে যোগ্য মানুষের সংখ্যা কমেছে ৯ লাখের বেশি। সার্বিক বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৪১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সারাদেশে দৈব চয়নের ভিত্তিতে এক হাজার ২৮৪ নমুনা এলাকার এক লাখ ২৩ হাজার ২৬৪টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।

কর্মে নিয়োজিত বলতে বোঝানো হয়েছে, যারা গত ৭ দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা বেতন বা মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে অথবা খানার নিজস্ব ভোগের জন্য পণ্য উৎপাদনমূলক কাজ করেছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নির্দেশনা অনুসরণে এ সংজ্ঞা গ্রহণ করেছে বিবিএস।

বিবিএসের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে দেশে কর্মে নিয়োজিত মানুষের সংখ্যা ৬ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজারে নেমে এসেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার। এ হিসাবে এক বছরে কর্মসংস্থান কমেছে ১০ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষদের ৩ লাখ ৩০ হাজার ও নারীদের ৭ লাখ ৪০ হাজার কাজ কমেছে।

অন্যদিকে ওই তিন মাসে নতুন করে বেকার হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার কর্মক্ষম মানুষ। এ সময় দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৪০ হাজারে। গত বছরের একই সময়ে বেকার মানুষের সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ। এর আগে ২০১৬ সালের একই প্রান্তিকে দেশে ২৭ লাখ বেকার ছিল।

লিঙ্গভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পুরুষদের মধ্যে ওই তিন মাসে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ, যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে দেশে বেকারের সংখ্যা এখন ২০ লাখ ৬৪ হাজার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন বেকারদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি। এ সময় দেশের বেকার পুরুষ ছিল ১৮ লাখ ৫০ হাজার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৬ লাখ ৭০ হাজার। অর্থাৎ পুরুষদের মধ্যে বেকারত্ব বেড়েছে এক লাখ ৮০ হাজার। তবে আশ্চর্যজনকভাবে এ সময় নারীদের মধ্যে বেকারত্ব আগের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। ৮ লাখ ৩০ হাজার থেকে কমে নারী বেকারত্ব ৭ লাখ ৯০ হাজারে নেমে এসেছ। নারীর মধ্যে বেকারত্ব কমে আসা এবং পুরুষদের মধ্যে বেড়ে যাওয়ার গড় ধরে মোট বেকারত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে।

বেকারের সংজ্ঞায় বিবিএস বলেছে, সেসব জনগোষ্ঠীই বেকার যারা মূলত গত ৭ দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টাও কোনো কাজ করেনি। অথচ কাজ করার জন্য প্রস্তুত ছিল এবং গত ৩০ দিনে বেতন কিংবা মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কোনো না কোনো কাজ খুঁজেছেন।

অন্যদিকে শ্রমশক্তির বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর সংখ্যাও বেড়েছে এপ্রিল-জুন সময়ে। বিবিএসের প্রতিবেদন বলছে, নতুন করে ২০ লাখ ১৯ হাজার মানুষ শ্রমশক্তির বাইরে অবস্থান করছে। এ সংখ্যা এখন ৪ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪ কোটি ৭৩ লাখ ২০ হাজার। নারী-পুরুষ উভয় ক্ষেত্রেই এ ধরনের জনগোষ্ঠী বেড়েছে।

যারা কর্মে নিয়োজিত নন অথবা বেকার হিসেবেও বিবেচিত নন, তারাই মূলত শ্রমশক্তির বাইরের জনগোষ্ঠী। সাধারণত ছাত্র, অসুস্থ, বয়স্ক, কাজ করতে অক্ষম, অবসরপ্রাপ্ত এবং কর্মে নিয়োজিত নন কিংবা নিয়োজিত হতে অনিচ্ছুক। বিবিএসের সংজ্ঞায় তাদেরকেই শ্রমশক্তির বাইরের জনগোষ্ঠী বলা হয়েছে।

চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/ ৩০ আগস্ট ২০২৪