চাঁদপুরে স্কুলে তালা ঝুলানো কর্মসূচি অব্যাহত : সংগ্রাম কমিটি গঠন

চাঁদপুরে মাধ্যমিক স্কুলে তালা ঝুলানো কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে এবং গতকাল আন্দোলন চালিয়ে নিতে সংগ্রাম কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি,চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি ও সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক প্রধানশিক্ষক মো.আব্বাস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য-সচিব প্রধানশিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন আজ রোববার দুপুরে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন।

শিক্ষক নেতৃবৃন্দ যৌথভাবে জানান, সারাদেশে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে আজ রোববার ১৬ জুলাই থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করার ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। শুক্রবার ১৪ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এমন ঘোষণা দেন বিটিএ’র নেতারা।

ঐ কেন্দ্রিয় কর্মসূচির আলোকে চাঁদপুর জেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ডাকে চাঁদপুর পৌরসভাসহ উপজেলাগুলোর অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। ১৭ জুলাই থেকে বাকি স্কুলগুলো স্কুলে তালা ঝুলানো কর্মসূচি পালন করবে বলে জানানো হয় । এ কর্মসূচির আলোকে ঢাকার প্রেসক্লাবের সামনে সারা বাংলাদেশের শিক্ষকগণের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য-সচিব প্রধানশিক্ষক মোহাম্মদ হোসেনের সভাপতিত্বে শনিবার সন্ধ্যায় ডি এন হাই স্কুলে একসভা অনুষ্ঠিত হয়। সঞ্চালনায় ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করীম। বক্তব্য রাখেন- প্রধানশিক্ষক মো. খোরশেদ আলম, প্রধানশিক্ষক মো.ইলিয়াছ মিয়া,প্রধানশিক্ষক মো.আবুল কাসেম, প্রধানশিক্ষক মো.আনোয়ার হোসেন,প্রধানশিক্ষক ওমর ফারুক, মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো.বিল্লাল হোসেন,কেন্দ্রিয়-সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন, সদর সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন ঢালী,আবু জাফর গাজী,সওকত হোসেন ও মাহবুবুর রহমান ।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- প্রধানশিক্ষক মো. সাখাওয়াত হোসেন, প্রধানশিক্ষক খোরশেদ আলম, প্রধানশিক্ষক রুহুল আমিন, প্রধানশিক্ষক ইমাম হোসেন, প্রধানশিক্ষক মো. হান্নানুর রহমান, প্রধানশিক্ষক সফিকুর রহমান, প্রধানশিক্ষক নাজনিয়া সুলতানা, প্রধানশিক্ষক মো. মুকবুল হোসেন , প্রধানশিক্ষক আ. মান্নানসহ সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকনেতৃবৃন্দ।

প্রসঙ্গত : পূর্বে ঘোষিত কর্মসূচির আলোকে জানা যায়- এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ % উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া এবং ৫শ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য। তাছাড়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেলের এক ধাপ নিচে প্রদান করা হয়। উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন।

তাছাড়া কয়েক বছর ধরে কোনো প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রfস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ % কর্তন করা হচ্ছে। তাই অতিরিক্ত ৪ % কর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। পূর্বে কর্মসূচি পালনের ঘোষণায় ছিল- বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল দাবি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ।

৮ মার্চে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১০ মার্চ সারা দেশের জেলা সদরে ও কেন্দ্রীয়ভাবে প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলা প্রশাসক-বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

১৪ মার্চে বেসরকারি সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দু’ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালনসহ ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং জাতীয়করণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া বিগত অর্থবছরের তুলনায় নতুন অর্থবছরে শিক্ষা বাজেটে বরাদ্দ কম রাখায় ১১ জুলাই থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে পূর্বঘোষিত লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
এজি

Share