তারেক রহমানের অভ্যর্থনায় ব্যাপক আয়োজন
প্রায় দেড় যুগ যুক্তরাজ্যের লন্ডনে নির্বাসিত থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে অভ্যর্থনায় ব্যাপক আয়োজন চলছে দলে। তিনি ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন। প্রস্তুতি সভা, উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে নানা পর্যায়ের সভায় নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে দল থেকে। গঠন করা হয়েছে অভ্যর্থনা কমিটি। নিরাপত্তার জন্যও নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি।
নেতাকর্মীরা জানান, তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই দলে উৎসবের আমেজ। নেতাকর্মীরা এখন চাঙ্গা। তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর বিষয়ে এরই মধ্যে সারাদেশে প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্মরণকালের সেরা সংবর্ধনা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে দল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মীরাও এই বিশেষ দিনটির জন্য অপেক্ষা করছেন।
দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতাকে স্বাগত জানানোর লক্ষ্যে গত সোমবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের যৌথ সভা হয়। এতে তারেক রহমানকে কীভাবে অভ্যর্থনা দেওয়া হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের নির্দেশনা পেয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো এখন মহাব্যস্ত।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে অভ্যর্থনা ও সাংগঠনিক তৎপরতা সমন্বয়ের জন্য গঠিত হচ্ছে একাধিক বিশেষ কমিটি। কমিটিগুলোর তত্ত্বাবধানেই কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে। এরই মধ্যে গতকাল গঠিত হয়েছে অভ্যর্থনা কমিটি। এর আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং সদস্য সচিব সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দলের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, অভ্যর্থনা কমিটিতে ১০ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবরা সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
এদিকে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলাম।
সূত্রগুলো বলছে, ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের দেশে ফেরার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশাল জনসমাগমের মাধ্যমে তাঁকে বরণ করে নেওয়া হবে। দক্ষ কর্মীদের নিয়ে একটি বিশেষ নিরাপত্তা দল গঠনের কাজ চলছে, যারা তারেক রহমানের পুরো যাত্রাপথে এবং কার্যালয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। দেশে ফিরে তারেক রহমান সরাসরি কোথায় যাবেন, কোন বাসভবনে উঠবেন, কোথায় অফিস করবেন সেসব বিষয়ে প্রস্তুতি শেষ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, দেশে ফিরে তারেক রহমান তাঁর মা খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। বিমানবন্দর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতাল পর্যন্ত নেতাকর্মীরা রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
তারেক রহমান গুলশান অ্যাভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাসায় উঠবেন। এই বাসার পাশেই খালেদা জিয়ার বাসা ‘ফিরোজা’। এ ছাড়া গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয় ও নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তারেক রহমানের বসার জন্য কক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশবাসী আমাদের নেতার অপেক্ষায় আছে। ২৫ ডিসেম্বর দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নিয়ে প্রিয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। আমরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
সূত্র জানায়, দেশে ফিরে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়বেন তারেক রহমান। সময় বিবেচনায় রেখে বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ আয়োজনের কথা ভাবছে দল। জনসভাগুলোয় তারেক রহমান সশরীরে অংশগ্রহণ করবেন। বিষয়টি তিনি নিজেই গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে খোলাসা করেছেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তারেক রহমান ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি নির্বাচনী প্রচারে নিজে অংশ নেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। নেতাকর্মীদের তুমুল করতালির মধ্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে, ওয়ার্ডে-মহল্লায়, অলিগলিতে, রাজপথে জনগণের নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার এই নির্বাচনে মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকব।
চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫