বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে এক লাখ ৬১,০০০ এর বেশি মানুষ মারা যায় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অফিসের বাংলাদেশ ফ্যাক্টশিট ২০১৮-এ বলা হয়েছে, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে এক লাখ ৬১,০০০ এর বেশি মানুষ মারা যায়।”
বৃহস্পতিবার ৭ সেপ্টেম্বর সংসদে সরকারি দলের সদস্য এম. আব্দুল লতিফের টেবিলে উত্থাপিত এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা মতে, তামাক ব্যবহার, ধূমপান ও পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বাংলাদেশে বছরে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগ (এফাইসিমা, অ্যাজমা, সিওপিডি ইত্যাদি), ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগ দেখা দেয়।”
তিনি বলেন, “তামাকজনিত কারণে মৃত্যুহার কমানোর জন্য তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। এ লক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তর/দপ্তর, সরকারি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে।
সারা দেশে আইন বাস্তবায়ন জোরালো করতে বিভাগীয় প্রশাসন,জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিন্ন কার্যক্রম আয়োজন করা হচ্ছে। গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইন সম্পর্কে প্রচারণা, দক্ষতাবৃদ্ধি প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও সভা আয়োজন করা হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের পরিচালনার মাধ্যমে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
জাহিদ মালেক বলেন, “তামাকের ব্যবহার কমানোর জন্য তামাকের ওপর উচ্চহারে করারোপ করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরের বাজেট পেশের আগেই তামাকের ওপর কর বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব সম্বলিত ডিও লেটার অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “ই-সিগারেট নামে নতুন একটি নেশাজাতীয় তামাক পণ্য বাজারে চালু হয়েছে। শিশু-কিশোর-তরুণদের তামাকের নেশায় ধাবিত করতে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো এ পণ্য বাজারে এনেছে। ইতোমধ্যে ভারত, শ্রীলংকাসহ ৩২টির বেশি দেশে এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হয়েছে এবং আরও অনেক দেশে কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশেও ই-সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধ করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।”
মন্ত্রী বলেন, “সর্বোপরি বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫’-এর দুর্বলতাসমূহ দূর করার লক্ষ্যে সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মতামতের ভিত্তিতে একটি খসড়া প্রস্তুত করে মন্ত্রিপরিষদ সভায় উত্থাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সভায় প্রস্তুত করা খসড়া গৃহীত হলে এটি জাতীয় সংসদে পাশের লক্ষ্যে উত্থাপন করা হবে।”
৮ সেপ্টেম্বর ২০২১৩
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur