বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডনে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘দলের ঐক্য বড় বিষয়। দলের মধ্যে মতবিরোধ থাকতেই পারে। মুরুব্বিদের সম্মান দিতে হবে। তরুণদের প্রাধান্য দিতে হবে। অবশ্যই সিনিয়রদেরও প্রয়োজন আছে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এ সময় দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বলেন, ‘তরুণদের কাজে লাগাতে চেষ্টা করবেন। এখানে যারা ছাত্র আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তাঁরা রাজনীতি না করলেও দেশে গিয়ে ভোট দেবে।’
লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেওয়ার আগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। ভিআইপি টার্মিনাল থেকে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে এই বক্তব্য দেন তিনি। নেতাকর্মীরা বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়িয়ে দলীয়প্রধানের বক্তব্য শুনেন।
লন্ডনের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ১৫ মিনিট) খালেদা জিয়াকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের বিমানটি (ইকে-৫৮৬) হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে ছেড়েছে। বিকেল সোয়া ৫টায় তাঁর ঢাকা হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।
দলীয় ঊর্ধ্বতন নেতাকর্মীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন। বিএনপি এ নিয়ে কোনো কর্মসূচি না রাখলেও দলের নেতাকর্মীরা বিমানবন্দরের বাইরে অবস্থান নিয়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাবেন বলে দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।
চিকিৎসার জন্য গত ১৫ জুলাই চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সেখানে তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আছেন। বড় ছেলে ও দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগে থেকেই লন্ডনে অবস্থান করছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এমন এক সময়ে দেশে ফিরছেন যখন তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। বাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলায় গত ৯ অক্টোবর বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন বেগম।
এ ছাড়া ১২ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ঢাকায় দুটি আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মানহানির মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম নূর নবী এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিশেষ আদালতের বিচারক ড. আক্তারুজ্জামান এ দুটি পরোয়ানা জারি করেন।
বিএনপি মনে করে, রাজনৈতিক কারণেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অপরদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লন্ডন মহানগর বিএনপির প্রচার সম্পাদক মাইনুল ইসলামের উদ্ধৃতি দিয়ে শাসদুদ্দীন দিদার বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে জানিয়েছেন, হিথ্রো বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ভিড়ের কারণে, নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে সেখানকার পুলিশ নেতাকর্মীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে দেয়নি। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য টেলি-কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন খালেদা জিয়া।
এ সময় বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষমান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি আপনাদের সঙ্গে মিটিং করতে পারিনি। আপ্যায়ন করতে চেয়েছেন, আমি অংশ নিতে পারিনি। আমি এসেছিলাম চিকিৎসার জন্য। মঙ্গলবারও ডাক্তারের কাছে গিয়েছি।’
‘আপনারা যারা প্রবাসে আছেন, তাঁরা দেশে ভোটার হতে পারবেন। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে হতে পারবেন।’
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে খালেদা জিয়া আরো বলেন, ‘আল্লায় বাঁচিয়ে রাখলে, ভবিষ্যতে ইনশাল্লাহ আপনাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করব। মিটিং করব। ভালোভাবে যেন দেশে পৌঁছাতে পারি, দোয়া করবেন। আপনাদের ভাইয়ার (তারেক রহমান) সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, তাঁর খেয়াল রাখবেন।’
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১২ : ৪৫ পিএম, ১৮ অক্টোবর, ২০১৭ বুধবার
এইউ