প্রচন্ড গরম ও পবিত্র রমজান মাসকে ঘিরে চাঁদপুরে ব্যাপক হারে তরমুজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অভিযানে মাঠে নেমেছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। তারা মাঠে নামতেই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা মুহুর্তেই কেজি দরের তরমুজ পিস হিসাবে বিক্রি করে বলে জানান। কিন্তু অভিযান শেষে আবারো খুচরা ব্যবসায়ীরা তাদের নিজেদের খামখেয়ালী মতোই কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করতে দেখা যায়। অনেকে পিস হিসেবে বিক্রি করলেও কেজি দরে যে পরিমান মূল্য আসার কথা, সে মূল্যই ক্রেতাদের কাছ থেকে দাম হাকিয়ে নিচ্ছেন।
২৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে খোলা বাজারের বিভিন্ন ফলের দোকানে অভিযান চালায় চাঁদপুর জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। এসময় চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেস, বাস স্ট্যান্ড, পালবাজার, কালীবাড়ি শপথ চত্বর, বাবুরহাট বিসিক শিল্প নগরী এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন চাঁদপুর জেলা ভোক্তা অধিকার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নূর হোসেন। অভিযানে বিভিন্ন ফল ব্যবসায়ী ও তরমুজ ব্যবসায়ীদেরকে কেজিতে তরমুজ বিক্রি না করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। এমনকি কোনো ব্যবসায়ী কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এদিকে ভোক্তা অধিকার অভিযানে মাঠে নামতেই চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে কোট স্টেশন, কালিবাড়ি এলাকার বিভিন্ন ফল ব্যবসায়ীরা মুহূর্তে তাদের রূপ পরিবর্তন করে দাম কমিয়ে ফল বিক্রি করতে দেখা গেছে। যেসব তরমুজ ব্যবসায়ীরা কয়েক মিনিট আগেও সেখানে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করেছেন। সেখানে ভোক্তা অধিকার কে মাঠে নামতে দেখে তারা ওই তরমুজ পিস হিসাবে বিক্রি করেন বলে জানান। তবে অভিযানে কাউকে কোন প্রকার জরিমানা করা হয়নি।
এছাড়াও বিভিন্ন ঔষধের দোকান এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরীর ওপর অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে বাবুরহাট বিসিক শিল্পনগরী এলাকার নিউ লাচ্ছা সেমাই বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরির দায়ে ২ হাজার টাকা ও চাঁদপুর শহরের গাজী ফার্মেসী ও আখন ফার্মেসিকে ১ হাজার টাকা করে দুই প্রতিষ্ঠানকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সবমিলিয়ে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বমোট ৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রশাসন কিংবা ভোক্তা অধিকার অভিযানে মাঠে নামলেও ওইসব সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা হুট, তরমুজ, বাঙ্গি সহ বিভিন্ন পানিয় ফল তাদের খামখেয়ালি মতোই ব্যবসা করে চলেছেন।
প্রশাসন যখন মাঠে নামে তখন তারা জানান, তরমুজ কেজিতে নয়, তারা পিস হিসেবে বিক্রি করে থাকেন। কিন্তু যখন প্রশাসন চলে যায়, তখন তারা সে পূর্বের মতোই ৭০/৮০ টাকা দরে কেজি বিক্রি করে। অনেকে কেজি দরে বিক্রি না করলেও একটি তরমুজ কেজির হিসাব করে যত টাকা মূল্য আসে, সেই মূল্য অনুযায়ীই দাম চেয়ে তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে অধিক মূল্য আদায় করছেন।
প্রতিবেদকঃকবির হোসেন মিজি