স্বাস্থ্য

ঢ্যাঁড়স শুধু সবজিই নয়, মহা ঔষধও

কচি সবুজ ঢ্যাঁড়স মানেই শরীরের জন্য দারুণ উপকারী এক সবজি। বাজারে এখন প্রচুর কচি ঢ্যাঁড়স পাবেন। অনেকের প্রিয় খাবার ঢ্যাঁড়স। এতে যে ফাইবার বা তন্তু আছে, তা হজমে সাহায্য করে। এতে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে বলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্য ঢ্যাঁড়স আদর্শ খাবার। কারণ, এটি পেট ভরা রাখে।

ঢ্যাঁড়সের গুণাগুণ সম্পর্কে ‘দ্য জার্নাল অব নিউট্রিশনাল বায়োকেমিস্ট্রি’ সাময়িকীতে ২০১৪ সালে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ওই নিবন্ধে বলা হয়, ঢ্যাঁড়স পুষ্টিগুণে ভরা। রক্তে চিনির মাত্রায় এটি প্রভাব ফেলে। ওই গবেষণা অনুযায়ী, হাইপারগ্লাইসেমিয়া এবং হাইপার ট্রাইগ্লিসারিডিয়ার ক্ষেত্রে ডায়েটারি থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করা যায় ঢ্যাঁড়স। গবেষকেরা ইঁদুরের ওপর গবেষণা করে ইতিবাচক ফল পেয়েছেন।

এতে যে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে, তা শরীরে রোগবালাই সৃষ্টিকারী ফ্রি র‍্যাডিকেলসকে প্রতিরোধ করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধের জন্য তাই ঢ্যাঁড়স খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ঢ্যাঁড়স খাবারের তালিকায় রাখার কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ঢ্যাঁড়সের দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ফাইবার থাকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ডায়েটে প্রচুর ফাইবার থাকে। এটি ইনসুলিন কার্যক্রমকে উদ্দীপ্ত করবে। ঢ্যাঁড়সের বীজ ও খোসা রক্তের গ্লুকোজের স্তর কম করে। প্যানক্রিয়াসে প্রচুর ইনসুলিন উৎপন্নকারী কোষ তৈরিতে কাজ করে ঢ্যাঁড়স।

‘হিলিং ফুডস’ নামের একটি বইয়ে ঢ্যাঁড়সের গুণ সম্পর্কে বলা হয়, এতে ফাইবার, ভিটামিন বি৬ ও ফোলেটের মতো নানা পুষ্টিগুণ আছে। বি ভিটামিন ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি বেড়ে যাওয়ার গতি কমাতে পারে। এর দ্রবণীয় আঁশ রক্তে চিনির পরিমাণ স্থিতিশীল রাখে।

ঢ্যাঁড়স সেদ্ধ ও ভাজি দুভাবেই খাওয়া যায়। তরকারি হিসেবে মাছেও ব্যবহার করা হয়। ঢ্যাঁড়সে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, লোহা ও ভিটামিন এ, বি, সি।

ঢ্যাঁড়সের পড বা ফলে রয়েছে ক্যারোটিন, ফলিক অ্যাসিড, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, অক্সালিক অ্যাসিড এবং অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড। এর রিবোফ্লাভিনের পরিমাণ বেগুন, মুলা, টমেটো ও শিমের চেয়েও বেশি। ঢ্যাঁড়সে রয়েছে সলিউবল ফাইবার পেকটিন, যা রক্তের বাজে কোলেস্টেরলকে কমাতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে আঁশ, ভিটামিন এ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া রয়েছে আরও অনেক গুণ।

তাই উপকারী ঢ্যাঁড়স কেনার সময় তাতে যেন কোনো পোকামাকড় না থাকে তা দেখে কিনতে হবে। রান্না করার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। কচি ও ছোট ঢ্যাঁড়স সহজে সেদ্ধ হয় এবং তা খেতেও সুস্বাদু। তবে দীর্ঘদিন ঢ্যাঁড়স সংরক্ষণ না করাই ভালো। কিছুদিন রাখতে চাইলে তা ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করতে পারেন।

Share