ঢাকা শহরে পুকুর খুঁজে পাওয়া দুর্লভ। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই রয়েছে তিনটি পুকুর। এর মধ্যে শহীদুল্লাহ হলের পুকুরটিকে বলা হয় ‘রহস্যময়’ বা ‘ভৌতিক’ পুকুর। রূপকথার মতো নানা গল্প রয়েছে এই পুকুরকে ঘিরে।
শহীদুল্লাহ হল এবং ফজলুল হক হলের মাঝামাঝি জায়গায় এ পুকুরটি অবস্থিত। পুকুরের দুই পাড়ে রয়েছে বড় বড় তিনটি ঘাট। পাড়ের চারপাশে গাছ লাগানো।
বিকালে গাছের ছায়ায় সবুজ ঘাসের ওপর বসে গল্পে মেতে উঠে হলের শিক্ষার্থী ও বাইরে থেকে আসা অথিতিরা। জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি তাদের আড্ডায় ঠাঁই পায় এই পুকুরকে নিয়ে প্রচলিত নানা মিথ। একজন আরেকজনকে শোনায় এই পুকুরের রহস্যাবৃত ঘটনা।
জনশ্রুতি রয়েছে, এই পুকুরে সাঁতার কাটতে গিয়ে বিভিন্ন সময় মারা গেছে অনেকেই। কেউ বলে এই পুকুরে ভূতপ্রেত আছে। কেউবা বলে এখানে ডাইনি বুড়ি আর রাক্ষসেরা বসবাস করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, ২০০৯ সালে এই পুকুরে সাঁতার কাটার সময় দুপুর বেলায় পানির নিচে তলিয়ে যায় এক ভর্তি পরীক্ষার্থী। এর আগে বন্ধুর সঙ্গে গোসল করতে এসে মারা যান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।
এভাবে সাঁতার কাটার সময় দিনদুপুরে ১০-১২টি তাজা প্রাণ কেড়ে নেয় এই পুকুর। যে কারণে পুকুরটিকে ঘিরে কল্পকাহিনী আরও বেশি পাকাপোক্ত হয় মানুষের মনে। সাঁতার কাটতে গিয়ে এক ছাত্রের মৃত্যুর পর পর এখানে গোসল করা ও সাঁতারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
ঘাটের পাশে একটি সাইনবোর্ডে বড় বড় অক্ষরে বিজ্ঞপ্তি আকারে লেখা আছে- ‘পুকুরে গোসল ও সাঁতার কাটা নিষেধ’।
জানা যায়, যে কর্মচারী নোটিসটি টাঙায় সে একদিন স্বপ্ন দেখে তাকে এক লম্বা চুলওয়ালা ডাইনি বলছে, তুই আমার আহার কেড়ে নিয়েছিস, তোর খবর আছে। এরপর ওই কর্মচারী চাকরি ছেড়ে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়।
হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই পুকুরের নিচে উদ্ভিদের পরিমাণ বেশি হওয়ায় পানিতে অক্সিজেন স্বল্পতা রয়েছে। হয়তো সে কারণে সাঁতার কাটতে গিয়ে অনেকে মারা গেছেন।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান বলেন, পুকুরে অনেকবার গোসল করেছি, সাঁতার কেটেছি। কোনো দিন কোনো সমস্যা হয়নি।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৭:৪৮ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০১৬,শুক্রবার
এইউ