ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দেশে প্রথমবারের মতো সরকারি ব্যবস্থাপনায় “টেস্টটিউব শিশুর” জন্ম হয়েছে। প্রায় দু সপ্তাহ আগে জন্ম নেয় শিশুটি।
শনিবার ১৬ সেপ্টেম্বর ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক ‘ঢাকা ট্রিবিউন ‘ কে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “ঢামেক হাসপাতালের বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞদের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সরকারি ব্যবস্থাপনায় টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হলো। প্রায় দু সপ্তাহ আগে জন্ম নেয় শিশুটি। এ বিষয়ে পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত জানানো হবে।”
শিশুটির মা-বাবাসহ টেস্টটিউব শিশু জন্মদানের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
২০০১ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দেশে প্রথম টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হয়। এরপর একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের শিশুর জন্ম হয়েছে। দেশে বেসরকারি টেস্টটিউব শিশুর জন্য ব্যয় অনেক বেশি। এবারই প্রথম সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কোনো শিশুর জন্ম হলো। এর মধ্য দিয়ে নিম্নবিত্ত “বন্ধ্যা” দম্পতিও নতুন করে সন্তান জন্ম দেওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করবেন।
বন্ধ্যা নারীর মা হওয়ার আধুনিকতম পদ্ধতি হলো “টেস্টটিউব শিশু” নেয়া। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সংবাদমাধ্যমকে জানান, এ পদ্ধতিতে স্ত্রীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয় আর স্বামীর শরীর থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়।
গবেষণাগারে সেই ডিম্বাণু ও শুক্রাণু নিষিক্ত করে কৃত্রিমভাবে ভ্রূণ সৃষ্টি করা হয়। পরে সেই ভ্রূণ স্ত্রীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। স্বাভাবিক ভ্রূণ যেভাবে গর্ভাশয়ে বেড়ে ওঠে,কৃত্রিম ভ্রূণও একইভাবে বেড়ে উঠতে থাকে। এভাবে ৯ মাস পর যে শিশুর জন্ম হয়,তাকে টেস্টটিউব শিশু বলা হয়।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ ডা.ইভা রানী নন্দী ইংরেজি ভাষার সংবাদমাধ্যম ‘ বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে ’ বলেন, “টেস্টটিউব পদ্ধতি প্রায়ই অনেক ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার চূড়ান্ত ধাপ হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রাইভেট সেন্টারের মান অনুযায়ী এ চিকিৎসার খরচ তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা।
তবে আশা করা যাচ্ছে, এখন থেকে ঢামেক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফার্টিলিটি সেন্টারে কম খরচে এ চিকিৎসা প্রদান করবে। দরিদ্র,নিঃসন্তান দম্পতিরা সেখানে চিকিৎসা নিতে পারবেন।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম দৈনিক পত্রিকা ‘প্রথম আলোকে’বলেন,“টেস্টটিউব শিশুর ব্যাপারে মা-বাবা এবং চিকিৎসক কেউই সামান্যতম কোনো ঝুঁকি নিতে চান না,তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশুর জন্ম হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে।”
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
এজি