ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন ভাষাতত্ত্ববিদ,শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক । তার জন্ম ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনায়। তিনি ১৯৬৯ সালের ১৩ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন ।
তিনি হাওড়া জিলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা, কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফএ করে হুগলি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন । অসুস্থতার কারণে বিরতির পর কলকাতা সিটি কলেজ থেকে সংস্কৃতে অনার্সসহ বিএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে এমএ পাস করেন।
দু’ বছর পর বিএল ডিগ্রিও নেন। যশোর জিলা স্কুলের শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীনেশচন্দ্র সেনের তত্ত্বাবধানে শরতচন্দ্র লাহিড়ী গবেষণা-সহকারী হিসেবে কাজ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত ও বাংলা বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন।
ঘরোয়া পরিবেশে উর্দু, ফারসি ও আরবি এবং স্কুলে সংস্কৃত শিখেছিলেন। ইউরোপ গিয়ে শেখেন প্রাচীন ভারতীয় বৈদিক সংস্কৃত, প্রাকৃতসহ বিভিন্ন ভাষা। তিনি ‘চর্যাপদাবলি’ বিষয়ে গবেষণা করে প্যারিসের সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে প্রথম ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
এ বছরই ধ্বনিতত্ত্বের মৌলিক গবেষণার জন্য তিনি প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা লাভ করেন। ১৯৩৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ হন। ১৯৪৪ সালে অবসর নেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস নিযুক্ত হন। মৌলিক গবেষণার মাধ্যমে তিনিই প্রমাণ করেন গৌড়ী বা মাগধী প্রাকৃত থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি।
তার কাজের মধ্যে অভিধান তৈরি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। উর্দুকে বাদ দিয়ে তিনিই প্রথম বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার যৌক্তিক দাবি তোলেন। তার রচনার মধ্যে আছে,‘সিন্দবাদ সওদাগরের গল্প’, ‘ভাষা ও সাহিত্য,‘বাঙ্গালা ব্যাকরণ’, ‘দীওয়ান-ই-হাফিজ’,‘রুবাইয়াত-ই-উমর খইয়্যাম’,‘পদ্মাবতী’,‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’ প্রভৃতি।
বার্তা কক্ষ
১৩ জুলাই ২০২০