চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভার অপিকল্পিত ড্রেন নির্মাণে সরকারের ২ কোটি টাকা গচ্ছায় যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া ফরিদগঞ্জ উপজেলার উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং চাঁদপুর জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের বিকল্প সড়ক হিসাবে এ ড্রেন নির্মাণে ও এ সড়কে বড় এবং ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ার আশংকা করছে এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ পৌরসভা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ৩ হাজার ৭ শত ৫০ মিটার ড্রেনের জন্য আবেদন করলে সাড়ে ১৪ শত মিটার ড্রেন নির্মাণে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়ে কার্যাদেশ পায় উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর।
এ রিপোর্ট লেখাকালীন বুধবার পর্যন্ত পশ্চিম বাজার থানার মোড় হতে পিছনের গলির প্রায় ৩ শ’ মিটার ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হয়। ফরিদগঞ্জ- চান্দ্রা সড়কের কেরোয়া মোড় হতে-কেরোয়া ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ৫০ মিটার সড়ক সরু হওয়ায় এ অংশে কাজ করতে শুরু করলে ব্যাপক ভোগান্তির স্বীকার হয় ওই পথে চলাচল কারীদের। তাছাড়া এ অংশে একই ধরণের ড্রেন নির্মাণ করলে উপজেলা সদরের সাথে পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের মানুষের যাতায়েত বন্ধ হয়ে পড়বে।
এ সড়কটি ব্যবহার করে উপজেলার প্রায় অর্ধেক মানুষ যাতায়াত করছে। অঞ্চল গুলোর মধ্যে রয়েছে,চান্দ্রা, গল্লাক, মুন্সির হাট,আষ্টা, আনন্দ বাজার,কড়ৈতলী, একতা বাজার,গাজীপুর, হক মার্কেট, রাধা মার্কেট, পাটওয়ারী বাজার, শোল্লা বাজার, জামতলা বাজার ,বড়গাঁও, কামতা, বাসারা বাজারসহ অনেকগুলো অঞ্চল। কেননা এ অংশে ৪ ফুট প্রস্থ্য ড্রেন বাদে সড়ক থাকবে মাত্র ৬/৭ ফুট প্রস্থ এতে কোন ভাবেই বড় ও ভারি যানবাহন চলতে পারবেনা। সড়কের এ অংশে সব সময়েই যানজট লেগে থাকে।
সড়কের দুপাশের দোকান মালিক, ভাড়াটে ও রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ অনেকেই অভিযোগ করে জানান, এ অংশে আন্ডার গ্রাউন্ড ড্রেন নির্মাণ অথবা সড়ক সম্প্রসারন পূর্বক ড্রেন ণির্মান করা দরকার। এখন যে ভাবে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে ভারি যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেইতো চলাচল করা যাবেনা। আমাদের দাবি সড়ক সম্প্রসারন পূর্বক ড্রেনের কাজ করার। তাছাড়া কাজের গুণগত মানও রক্ষা হচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠে। ইটা ও খোয়া ক্লিন করা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে সড়কের দুপাশের দোকান মালিক ইসলমাইল হোসেন, মোস্তফা কামাল , জাহিদুল ইসলাম, তপন মজুমদারসহ অনেকেই জানান, যে ভাবে ড্রেন নির্মাণ হচ্ছে, তাতে যাতায়াত ও যানবাহন কোনটাই চলাচল সম্ভব হবে না। আমাদের দাবী সড়ক সম্প্রসারণ করে ড্রেন ণির্মান করার।
এ বিষয়ে পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মিজি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আকবর হোসেন মনির জানান, অপরিকল্পিত ভাবে এ ড্রেন নির্মাণ করে আমাদের যাতায়াতে বড় ধরনের অসুবিধা হবে। আমরা কোন ভাবে ড্রেনের কাজ মেনে নেবো না। আমরা এ কাজের প্রতিবাদ জনাই।
কাজের বিষয়ে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরী চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমরা শুধু পৌনে ৪ কিলোমিটার ড্রেনের জন্য জন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বরাবরে আবেদন করেছি। এছাড়া আর কিছুই জানিনা। ষ্টিমেট ও ডিজাইন কোটাই আমরা দেইনি। এ বিষয়ে অধিদপ্তর ভালো জানে। তিনি আরোও বলেন, উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তর কাজ বাস্তবায়ন করছে। তারা আমাকে কিছু জানালে আমি জানি নচেৎ নহে। তবে তিনি স্বীকার করে জানান, এ সড়কে এভাবে ড্রেন নির্মাণ করা হলে ভারি ও বড় যানবাহন চলতে পারবেনা। সড়ক সম্প্রসারণ বা আন্ডার গ্রাউন্ড ড্রেন করতে হবে। ডিজাইন ও ষ্টিমেটের দায়িত্ব কার ? প্রশ্নের জবাবে বলেন,সেটা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরই জানে।
এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমার দপ্তর কাজটি বাস্তবায়ণ করছে মাত্র। ডিজাইন ও ষ্টিমেট পৌরসভার। আমি সিডিউল মোতাবেক কাজটি বাস্তবায়ণ করছি। সড়কের ওই অংশে সমস্যা হলে সরেজমিন কাজ দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।সড়ক সম্প্রসারণ করা আমার কাজ নহে। কাজের গুণগত মান সঠিক আছে দাবী করে জানান, কোন ত্রুটি পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রোহী দাস বণিকের পক্ষে মানিক চাঁদপুর টাইমসকে জানান, সিডিউল ও কার্যাদেশ মোতাবেক ড্রেনের কাজ করা হচ্ছে। তবে সড়কের এ অংশ সরু হওয়ায় লোকজন অভিযোগ করার কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে যা ভালো হয় তাই করবো।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী জানান, আমি সরেজমিনে কাজ পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ১১ আগস্ট ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur