ডুবে যাওয়া শিশুকে পানির নিচে জীবিত দাবি

জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউপির ইছাপুর গ্রামে কুশিয়ারা নদীতে রবিবার নিখোঁজ হওয়া নাহিদ আহমদের মরদেহ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। দুই দফায় জকিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ৫ সদস্যর ডুবুরি দল উদ্ধার কার্যক্রম চালালেও মরদেহ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে সোমবার সন্ধ্যায় অভিযান সমাপ্তির ঘোষণা দেয়।

এদিকে নাহিদ আহমদ এখনো নদীতে জীবতে রয়েছে বলে দাবি করেছেন জনৈক এক পীর। নদীর পাড়ে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, ‘নাহিদ এখনো মৃত্যুবরণ করেনি। পানির নিচে সে জীবিত রয়েছে।’ তাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে তিনি সোমবার সন্ধ্যায় একটি তাবিজ পানিতে দিয়েছেন। তাবিজের ফলাফল মঙ্গলবার ভোরে পাওয়া যাবে বলে তিনি দাবি করেন। তবে এই পীর নিজের নাম বলতে রাজি হননি।
তবে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা এসব কথাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

নাহিদ নিখোঁজের পর থেকে কুশিয়ারা নদীর পাড়ে নাহিদের বৃদ্ধ বাবা, আত্মীয়স্বজন, উৎসুক জনতা ভীড় করে নাহিদের অপেক্ষায় রয়েছেন। বাবা মায়ের বুকফাটা কান্নায় বাতাস ভারি করে তুলেছে।

যেভাবে পানিতে ডুবলো নাহিদঃ

কুশিয়ারা নদীতে ডু (মাছের হগরা) তুলতে গিয়ে ডুবে যায় জকিগঞ্জের ইছাপুর গ্রামের আবুল কালাম ওরফে হাছন আলীর পুত্র নাহিদ আহমদ (১৭)। রোববার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাকে বাঁচানোর জন্য বন্ধুদের বহু চেষ্টার পরও ডুবে যায় নাহিদ। রাত ৯টার দিকে জকিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কুশিয়ারা নদীতে অভিযানে নামে। অনেক খুজাখুজির পরও সন্ধান পায়নি তারা। কিছুক্ষণ পর পর বিরতি দিয়ে টানা প্রায় ৪ঘন্টা চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে রাত সাড়ে ১২টায় উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে দেয়।

গ্রামের বদরুল হক তাপাদার জানান, প্রতিদিনের মতো তার বন্ধুদের নিয়ে ডু তুলতে যায় নাহিদ। নদীতে ডু (হগরা) তোলার পর ফের ঐ স্থানে রেখে আসার সময়ে বন্ধুদের ডাক দেয় তাকে উদ্ধারের জন্য। ডাক শুনে সাফওয়ানুল হক তাপাদার তাকে টেনে আনার চেষ্টা করেন। টেনে আনতে বার বার চেষ্টা ব্যর্থ হলে নাহিদের সহপাঠি আলীসহ নদী পাড়ে উপস্থিত আব্দুস শহীদ ও আব্বাস উদ্দিন নদীতে নামেন। ততক্ষণে নাহিদ আহমদ ডুবে যায়।

সাফওয়ানুল হক তাপাদারের বরাত দিয়ে তারই বড় ভাই বদরুল আরো বলেন, চোখের সামনে সে ধীরে ধীরে চলে গেল। ঠাই হওয়া পানিতে কিভাবে নীচের দিকে চলে গেল তা বোধগম্য হচ্ছে না সাফওয়ানের। প্রতিদিন সেই ডু’টি নদীতে নেমে তুললেও ঐ দিনের ঘটনার

প্রত্যক্ষদর্শীরা বিস্মিত হয়েছেন সাফওয়ানসহ অন্যরা। ২ ভাই, ২ বোন তার। পরিবারের বড় হিসেবে ছোট্র একটি দোকান দিত নাহিদ। অসহায়-গরীব পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পুত্র হারিয়ে বৃদ্ধ মা-বাবা পাগল প্রায়। বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন তারা। ভাই-বোনের আহাজারী বাতাস ভারি করে তুলেছে। স্বজনদের কান্না থামছে না।

তবে ছেলেটির সন্ধান দিতে মা-বাবা আকুল আবেদন জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও এলাকার মানুষের কাছে। ডুবে যাওয়ার পর হাজার হাজার উৎসুক জনতা ডাইকে অবস্থান করছিলেন।
চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক: ।। আপডেট ১১:৫০ এএম ২৬ অক্টোবর, ২০১৫ সোমবার
প্রতিনিধি/ডিএইচ

Share