পাহাড়ি ঢলে হাওরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে একের পর এক হাওর ডুবে তলিয়ে যাচ্ছে ফসলের ক্ষেত। শেষ মুহূর্তে পাকা ধান ডুবে যাওয়ায় হতাশ কৃষক।
সুনামগঞ্জে রোববার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে তাহিরপুর উপজেলার বর্ধিত গুরমার হাওরের বাঁধ ভেঙে গলগলিয়া হাওরের প্রায় ৩০০ হেক্টর ও রাতে দিরাই উপজেলার হুরামন্দিরা হাওরের বাঁধ ভেঙে আরও ৩০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ৫.৯৪ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এছাড়াও বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে ফসলরক্ষা বাঁধ।
নেত্রকোনায় সোমবার সকাল ১০টার দিকে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত জানান, জেলার ধনু নদের খালিয়াজুরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কীর্তনখোলা বাঁধের ৭ কিলোমিটার এলাকার অন্তত ২০টি স্থানে ফাটলের সৃষ্টি হয়। উপজেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে সেগুলো সংষ্কারে কাজ করা হচ্ছে। তবে এখনও বাঁধ সুরক্ষিত রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, রোববার বিকেল পর্যন্ত জেলার ৬৫ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে।
অপরদিকে কিশোরগঞ্জে ধনু, বাউলাই, মেঘনা কালনী ও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কালনী ও কুশিয়ারা নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। বাউলাই নদীর পানি ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মেঘনা ও ধনু নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান বলেন, আর কিছুক্ষণের মধ্যে ধনু নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে আগাম বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, জেলার ৭৩টি বাঁধ এখনও অক্ষত আছে। কিছু ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংষ্কার করা হচ্ছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলার ৩৫ ভাগ বোরো ধান কাটা হয়েছে। হাওরের ধান পাকতে এখনও কমপক্ষে এক সপ্তাহ সময় লাগবে।