একাদশ জাতীয় সংসদের সংসদ নেতা নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে দলের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা তাকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করেছেন। এর মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো সংসদ নেতা হলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
সংসদীয় দলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে।
সভায় সংসদ নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং প্রস্তাব সমর্থন করেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু।
এর আগে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বেলা ১১টার পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে শপথ নেন। শপথের পর সংসদ ভবনের নবম তলায় সরকারি দলের সভাকক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সদস্যদের বৈঠক হয়। বৈঠকে টানা তৃতীয়বার এবং সংসদ নেতা হিসাবে চতুর্থবার নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা।
২০০৯ সালে নবম সংসদ এবং ২০১৪ সালে দশম সংসদের পর এবার টানা তৃতীয় মেয়াদে সংসদ নেতা নির্বাচিত হলেন শেখ হাসিনা। এর আগে ১৯৯৬ সালেও সপ্তম সংসদেও তিনি সংসদ নেতা ছিলেন।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ বলেন, আমরা সংসদ সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ফের সংসদীয় নেতা নির্বাচিত করেছি।
নিয়মানুযায়ী এমপিদের গেজেট হওয়ার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা রাষ্ট্রপতির কাছে মন্ত্রিসভা গঠনের অনুমতি চাইবেন। রাষ্ট্রপতি অনুমতি দিলে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা মন্ত্রিসভা গঠন করবেন।
রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর শপথ পড়াবেন। এর পর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দফতর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
আজই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন একাদশ সংসদের সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টায় নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। এর মধ্য দিয়ে দশম সংসদ বিলুপ্ত এবং একাদশ জাতীয় সংসদের যাত্রা শুরু হল।
বেলা ১১টার কিছু সময় পর শেরেবাংলা নগরের সংসদ ভবনের পূর্ব ব্লকের প্রথম লেভেলের শপথকক্ষে এ শপথ অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত সাত জনপ্রতিনিধি শপথগ্রহণ করেননি। শপথ অনুষ্ঠানে তাদের দেখা যায়নি।
শপথ নেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ একাদশ সংসদের এমপিরা নিজ নিজ নাম উচ্চারণ করে স্পিকারের সঙ্গে সঙ্গে পড়তে থাকেন- ‘সশ্রদ্ধচিত্তে শপথ (বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা) করিতেছি যে, আমি (যার যার নাম) যে কর্তব্যভার গ্রহণ করিতে যাইতেছি, তাহা আইন অনুযায়ী ও বিশ্বস্ততার সহিত পালন করিব; আমি বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস ও আনুগত্য পোষণ করিব; এবং সংসদ সদস্যরূপে আমার কর্তব্য পালনকে ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হইতে দেব না।’
শপথ অনুষ্ঠানে এমপিদের মধ্যে প্রথম সারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডান পাশে ছিলেন আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর বাঁ পাশে ছিলেন সাজেদা চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওবায়দুল কাদের, মোহাম্মদ নাসিম, আবদুর রাজ্জাক।
এর আগে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮ আসনে জয়লাভ করে। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৭ আসনে জয়ী হয়। মঙ্গলবার ২৯৮ সংসদ সদস্যের নামে গেজেট জারি করা হয়।
বাকি দুটির মধ্যে গাইবান্ধা-৩ আসনে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় সেখানে নির্বাচন হয়নি। এ ছাড়া ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনের তিনটি কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচন করতে হবে বলে সেখানে ফল স্থগিত রয়েছে। (যুগান্তর)
বার্তা কক্ষ
৩ জানুয়ারি,২০১৯