চাঁদপুর

আমাদের একজন ‘ডিসি মাজেদুর রহমান খান’

কোনপ্রকার শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র, মাইন, কামান কিংবা গোলাবারুদ নয়; সামান্য একটা ভাইরাস- নাম যার ‘করোনা’। এখন আর মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে ইহুদী রাষ্ট্র নয়, গরিব রাষ্ট্রের সাথে ধনী রাষ্ট্র নয়, গোটা পৃথিবী এক হয়ে যুদ্ধ করছে মরণব্যাধি এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে। সব রাষ্ট্রেরই একটি মন্ত্র ‘বাঁচতে হবে’ মানুষ বাঁঁচাতে হবে’। প্রকৃতির অদৃশ্য নিয়মে এই যুদ্ধে বাংলাদেশকে ও অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে।

পৃথিবীর উন্নত অনুন্নত রাষ্ট্রের ন্যায় বাংলাদেশেও ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করছে মরণব্যাধি এই করোনা ভাইরাস। ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এই রোগে আক্রান্ত এবং মৃতের মিছিল। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সামাজিক, পেশাজীবি সংগঠন এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিরিও।

প্রতিটি জেলায় সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, স্থানীয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিরা। চাঁদপুরেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন পুলিশ ও চিকিৎসা বিভাগের প্রশংসিত সব উদ্যোগ জেলাবাসীকে কিছুটা হলেও আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হবার পাশাপাশি আলো দেখিয়ে আশান্বিত করেছে। বিশেষ করে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের নানাবিধ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে চাঁদপুরের জেলাবাসী।

এবার চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন প্রশংসা করেছেন খোদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খবরটা সিনিয়র সাংবাদিক জিএম শহীন ভাইয়ের মাধ্যমে জানতে পারলাম। সাম্প্রতিকালে চাঁদপুরে মরণব্যধি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং কর্মহীন ও দরিদ্র মানুষের কল্যানে চলমান সরকারি- বেসরকারি কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ করে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ত্রান যাবে বাড়ি, সততা স্টোর, ন্যার্যমুল্যের দোকান, বিনামূল্যে হোটেল গুলোতে খাবার, হোম কোয়ারান্টাইন কার্যক্রম, স্বল্প মুল্যের দোকান যাবে বাড়িসহ ইনোভেটিভ সব কার্যক্রমে তিনি মুগ্ধতা প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘চাঁদপুরেরর এই চলমান কার্যক্রম দেখে সারা দেশের কর্মকর্তারা উৎসাহিত হবে।’

এছাড়াও গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি এই ভিডিও কনফারেন্সে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের বক্তব্য ছিলো, অত্যন্ত সুন্দর, পরিচ্ছন্ন এবং মার্জিত। তাঁর এই চমৎকার বক্তব্য এবং উপস্থাপন শুধুমাত্র জেলা প্রশাসন বা পুলিশ প্রশাসনকেই নয়, পুরো চাঁদপুর বাসীকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিক্ষিত, মার্জিত এবং ভদ্র হিসাবে পরিচয় করে দিয়েছে। এক্ষেত্র বিশ্বখ্যাত সেলফ ডেভেলপমেন্ট কোচ ও লেখক ব্রায়ান ট্রেসির একটি উক্তি মনে পড়ে ‘সাধারণ মানুষ যতক্ষণ ভালো লাগে, ততক্ষণ কাজ করে। আর অসাধারণ সফল মানুষেরা ভালো না লাগলেও যতক্ষণ না কাজ শেষ হয়, ততক্ষণ কাজ বন্ধ করে না’।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান তাঁর কর্মদক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা, মানবিকতা এবং নতুন নতুন চিন্তার জন্যে ইতমধ্যেই জেলাবাসীর কাছে পরমশ্রদ্ধেয় এবং ভালোবাসার মানুষ হিসেবে হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। একজন সংবাদকর্মী ও সাহিত্যকর্মী হিসেবে চাঁদপুরের বেশ ক’জন জেলা প্রশাসক এবং তাঁদের কজকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।

যখন দেখি আমাদের জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান তাঁর গাড়ির পেছনে চালের বস্তা রাখেন এবং রাস্তায় বের হলে কোনো ভাগ্যহত ব্যক্তিকে দেখলেই তার হাতে তুলে দেন সরকারের সহায়তা। যখন দেখি পায়ে হেঁটে তিনি দরিদ্র পাড়ায় গিয়ে নিজের হাতে দুস্থ্যদের তালিকা করেন। গরীব চিকিৎসাহিনদের চিকিৎসা খরচ, অসচ্ছল মেধাবী
শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার খরচ বহন করেন। এখানকার শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্যে দু’হাত খুলে পৃষ্ঠপোষকতা করেন। তখন সে অভিজ্ঞতা থেকে একথা বলতেই পারি, ‘আমরা গর্বিত, আমাদের একজন’ডিসি মাজেদুর রহমান খান’ আছেন। আমাদের জেলা প্রশাসক অন্যসব জেলা প্রশাসকের চেয়ে একটু আলাদা, একটু বেশিই ভালো মনের মানুষ।

লেখক : আশিক বিন রহিম। সাহিত্য ও সংবাদকর্মী

Share