সোমবার (০২ জানুয়ারি) দিবাগত রাত আড়াইটায় আগুন লাগে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ারের কর্মীরা জানান, মার্কেটের পূর্ব দিক থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে পুরো মার্কেটে ছড়িয়ে পড়ে।
গভীর রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুনের কারণে মার্কেটের একাংশ ধসে পড়েছে। এ অংশে প্রায় আড়াইশ কাঁচামালের দোকান ছিল।
এদিকে, মধ্যরাতে আকস্মিক আগুনের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মার্কেটের কর্মচারীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে মার্কেট চত্বরে ভিড় জমাতে থাকেন। এ সময় তাদের আর্তনাদে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। যে যার মতো আগুনে বেঁচে যাওয়া সরঞ্জাম বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন তারা।
মার্কেটের ব্যবসায়ীরা আগুন লাগার ঘটনাকে ইচ্ছাকৃত বলে অভিযোগ করেন। তারা বলেন, মার্কেট সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র করে আগুন লাগানো হয়েছে।
তবে ডিসিসি মার্কেটের সভাপতি রিজভী বলেন, সরকার মার্কেট সরানোর চেষ্টা করছে। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে আমাদের কথা চলছে। আজকের আগুনের ঘটনা আকস্মিক,এর সঙ্গে কারো কোনো হাত নেই।
এ মার্কেটে এক হাজারের মতো দোকান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
পৌনে তিনটায় মার্কেটের দারোয়ানের ফোনে ঘুম ভেঙে ফর্নিচার ব্যবসায়ী মমিন মোল্লা ডিসিসি চত্বরে আসেন। সব শেষ, সব শেষ বলে আর্তনাদ করতে করতে তিনি বলেন, ‘কিচ্ছু বাকি নেই, সব শেষ! মার্কেটের ভেতরে নিউ হাজী ফার্নিচার নামে একটি দোকান ছিলো তার।’
মমিন বলেন, জমি-জমা বিক্রি করে এ দোকান দিয়েছিলাম। পুরো দোকান পুড়ে গেছে। এখন আমার ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মার্কেটটি দুই অংশে বিভক্ত। এর মধ্যে এক অংশে কাঁচাবাজার, অন্য অংশে ফার্নিচার ও কসমেটিকসের দোকান রয়েছে।
আগুন নেভাতে প্রায় ৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট কাজ করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
এদিকে ব্যবসায়ীরা ফায়ার সার্ভিসের কর্মচারীদের ওপর চড়াও হন। অনেকে লাঠি হাতে নিয়ে তাদের দিকে তেড়ে আসেন। তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবসায়ীদের বুঝিয়ে শান্ত করেন।
ব্যবসায়ীদের দাবি, ফায়ার সার্ভিস ইউনিট দায়িত্ব পালনে অবহেলা করছে। এ কারণে এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। মার্কেটের চারদিকে রাস্তা রয়েছে, আগুন নেভাতে এতো সময় লাগার কথা নয়।
আগুন লাগার এক ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস ইউনিট মার্কেটের মূল গেট ভেঙে ফেলে। প্রথমে কেনো গেট ভাঙলো না সে প্রশ্ন তুলে জুলহাস নামে এক মসলা ব্যবসায়ী বলেন, প্রথমে ফায়ার সার্ভিস কষ্ট করে গেট দিয়ে গাড়ি ঢুকাচ্ছিলো। শুরুতে কেনো গেট ভাঙ্গা হলো না। এতেই বুঝা যায় তারা আগুন নেভাতে আন্তরিক নয়।
তারা কেউ বুঝতেছে না আমাদের কতটা ক্ষতি হয়ে গেলো। আমাদের যে সব শেষ হয়ে গেলো, কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন জুলহাস।
ব্যবসায়ীরা জানান, এই মার্কেটে কাঁচাবাজারের সঙ্গে ফার্নিচার, কসমেটিকস ও অলঙ্কারের দোকানের সংখ্যা বেশি। -বাংলানিউজ
নিউজ ডেস্ক
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৮ : ০০ এএম, ৩ জানুয়ারি ২০১৭ সোমবার
ডিএইচ