চাঁদপুরে ডিপোর লরি থেকে পথে পথে বিক্রি হচ্ছে অবৈধ জ্বালানি তেল

চাঁদপুরে ট্যাংক লড়ী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে বিভিন্ন ডিপোর লরি থেকে সড়কের পথে পথে বিক্রি হচ্ছে অবৈধ জ্বালানি তেল। এতে করে নিজ ক্রয়ের নির্দিষ্ট তেল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত ডিলারগন। যদিও ট্যাংক লরির চালক ও হেলপারের মাধ্যমে এসব চোরাই তেল বিক্রি হচ্ছে। মূলত এর পেছনে রয়েছে চাঁদপুর ট্যাংক লড়ী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাধারণ সসম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবন্দরা।

গত কয়েক বছর ধরেই চাঁদপুর শহরের বিভিন্নস্থানে এমন অবৈধ তেল বিক্রি হয়ে আসছে। শুধু সড়কের বিভিন্নস্থানেই নয়, লড়ী, ভাউচার থেকে এমন চোরাই তেল রাখছেন ডিপোর কাছে থাকা বিভিন্ন শ্রমিকরাও।

গত কয়েক মাস ধরে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, চাঁদপুর শহরের পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ডিপুতে যখন কোনো ভাউচারে তেল ভর্তি করে ডিপোর গেট থেকে বের হন। তখনই ভাউচারের চালক ও হেলপারগন পাইপ দিয়ে বিভিন্ন সাইজের গ্যালনে তেল নামিয়ে সেগুলো মজুদ করে অন্যত্র বিক্রি করে।

এছাড়া চালকরা সড়কের পথে পথে বিভিন্নস্থানে খুচরা তেল বিক্রেতাদের কাছে ৩০ লিটার ৫০ লিটার করে বিভিন্ন জ্বালানী তেল বিক্রি করে থাকেন। গত কয়েক বছর ধরে দেখা গেছে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহা সড়কের কুমারডুগি এলাকায় থাকা রাসেদ গাজী ট্রেডাস নামের একটি তেলের দোকানে প্রতিদিনই দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাউচার থেকে পাইপ দিয়ে জ্বালানী তেল নামানো হচ্ছে। তালিকাভুক্ত ডিলার না হয়েও প্রতিনিয়ত ভাউচার থেকে তেল নামাচ্ছেন রাসেদ ট্রেডাসের মালিক।

খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন দিনের বিভিন্ন সময়ে যমুনা ডিপোর ভাইচারসহ বিভিন্ন তেলের গাড়ী থেকে শত শত লিটার তেল ক্রয় করছেন ওই দোকানী। চাঁদপুর শহরের অতি নিকটে এমন অবৈধ তেল নামলেও নজরে পড়ছেনা প্রশাসনের।

শুধু তাই নয় এছাড়াও চাঁদপুরেরর হাজীগঞ্জ, বাগাদী, নানুপুর, বহরিয়াসহ জেলার বিভিন্নস্থানে প্রতিদিনই তেলের ভাউচার থেকে বিক্রি হচ্ছে অবৈধ তেল।

জানা যায়, চাঁদপুর, কুমিল্লা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর মিলিয়ে যমুনা ডিপোর তালিকাভুক্ত সর্বমোট ৫৭ জন ডিলার রয়েছে। এরমধ্যে চাঁদপুরের ৬ জন ডিলার। কিন্তু কুমার ডুগী এলাকায় যমুনা ডিপোর গাড়ি থেকে রাসেদ ট্রেডাস নামের যে ব্যবসায়ী প্রতিদিন অবৈধ তেল ক্রয় করছেন। তালিকাভুক্ত ৬জন ডিলারের তালিকায় তার নামটি নেই। তালিকাভুক্ত ডিলার না হয়েও প্রতিদিন ডিপোর গাড়ী থেকে কয়েক লিটার করে অবৈধ তেল ক্রয় করছেন ওই ব্যবসায়ী। চাঁদপুরে সড়কের পথে পথে এমন অবৈধ তেল বিক্রি হওয়ার কারনে নিজেদের মুল চালান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত ডিলারগন। তাই এ বিষয়ে তদন্ত এমন অবৈধ তেল বিক্রি ও ক্রয়ের সিন্ডিকেটদের বিরুদ্ধে দ্রুত া আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আহবান সচেতন মহলের।

এ বিষয়ে যমুনা ডিপো ইনচার্জ শরীফুল ইসলাম সহ পদ্মা মেঘনা ডিপোর ইনচার্জরা বলেন, আমাদের এখান থেকে তারা তেল বুঝে নেয়ার পর তারা কি করে সেটা আমাদের বিষয় নয়। চালকরা যদি এভাবে বিভিন্নস্থানে তেল বিক্রি করে থাকে তাহলে তো সেটা সম্পর্ণ অবৈধ।

যমুনা ডিপোর দায়িত্বে থাকা চাঁদপুর, কুমিল্লা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরের মার্কেটিং অফিসার সাইফুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, চাঁদপুর, কুমিল্লা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরে আমাদের তালিকাভুক্ত ডিলার মোট ৫৭ জন। এরমধ্যে চাঁদপুরে ৬ জন। তবে কুমার ডুগী এলাকার যে রাসেদ ট্রেডাসের নাম বলেছেন। সে নামটি আমাদের ডিলারের তালিকায় নেই। তবুও আমি আরো ভালো করে দেখবো। যদি উনি তালিয়কায় থেকে থাকে সেটাও জানাবো।

এমন অবৈধ তেল ক্রয় বিক্রির প্রসঙ্গে বক্তব্য নিতে গেলে চাঁদপুর ট্যাং লড়ী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন অনেকটা রাগন্বিত হয়ে বলেন, আপনারা জানেন আমি এবং এর সাথে জড়িত আছি। তারপরেও কেনো জিজ্ঞেস করছেন। তার বক্তব্যে সুস্পস্ট ভাবে বুঝা গেলো তার এবং সভাপতির নেতৃত্বেই চাঁদপুরের বিভিন্নস্থানে তেলের ভাউচার থেকে প্রতিদিন এভাবে অবৈধ তেল বিক্রি হয়ে আসছে।

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ২৬ জুন ২০২৪

Share