ডিএনএ প্রতিবেদন চিকিৎসককে প্রদানের নির্দেশ

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর শরীর ও কাপড়ের সকল ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে প্রদানের জন্য নির্দেশ দিয়েছে কুমিল্লার আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের আবেদনের প্রেক্ষিতে রবিবার কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জয়নাব বেগম এ আদেশ দেন। গত বৃহস্পতিবার অপরাহ্নে এ আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তা।

এর আগে গত ২৯ মে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক মুস্তাইন বিল্লা নিহত তনুর দাঁত ও সোয়াবের ডিএনএ প্রতিবেদন চিকিৎসকদের সরবরাহ করা নির্দেশ নিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে গত ৩০ মার্চ কবর থেকে তনুর মরদেহ উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয় এবং আদালতের নির্দেশেই তনুর পরিহিত পোষাকসহ ৭টি বিষয়ের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।

কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা বাদল বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আদালত সবগুলো ডিএনএ প্রতিবেদন সরবরাহের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

সিআইডি সূত্র জানায়, সিআইডির ডিএনএ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম আদালতে বৃহস্পতিবার অপরাহ্নে এ আবেদন জানান। সূত্র জানায়, তনুর বিভিন্ন বিষয়ের উপর যে ডিএনএ প্রতিবেদন তৈরি করা হয় সেগুলো থেকে দাঁত ও সোয়াবের ডিএনএ প্রতিবেদন প্রদান করা কষ্টসাধ্য। একটির প্রতিবেদন আরেকটির সাথে সম্পর্কিত এ কারণে সবগুলো বিষয়ের উপর ডিএনএ প্রতিবেদন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে প্রদানের আবেদন জানানো হয়। আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করে।

সূত্র জানায়, নিহত তনুর দাঁত ও সোয়াবের পরীায় ডিএনএ পাওয়া যায় নি। তবে তার কাপড়ে তিনজন পুরুষের শুক্রানু পাওয়া যায়। সে শুক্রানু থেকে তিনজন পুরুষের পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল পাওয়া গেছে। যেহেতু তনুর মরদেহ ধোয়া মোছা হয়েছে এবং প্রথম ময়নাতদন্ত করার ১০ দিন পর আবার কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে সে ক্ষেত্রে অনেক প্রমাণ ধুয়েমুছে গেছে। কিন্তু কাপড়েরগুলো থেকে গেছে।

দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা রোববার রাতে জানান, তিনি এখনো ডিএনএ প্রতিবেদন পান নি। পাওয়ার পর তনুর মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রদান সম্ভব হবে।

এর আগে ডা. কামদা প্রসাদ সাহা এ চাঁদপুর টাইমসকে জানিয়েছিলেন ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়ার দুই কার্য দিবসের মধ্যে তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাস এলাকার ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয় সোহাগী জাহার তনুর মরদেহ। এ ঘটনায় সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ২১ মার্চ প্রথম ময়ানাতদন্তে ধর্ষণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি বলে রিপোর্ট দেয় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ।

আদালতের নির্দেশে ৩০ মার্চ কবর থেকে তনুর মরদেহ উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়। এখনও দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি ময়নাতদন্তকারী দল।
কুমিল্লা করেসপন্ডেন্ট : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৪:৫০ পিএম, ৬ জুন ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ

Share