ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৫ খাবার এবং উপকারী ১০ ফল


সারাবিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে। আমাদের সমাজে রোগটি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। ডায়াবেটিস নির্মূল সম্ভব নয় তবে একটু সচেতন থাকলেই রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সাধারণ কিছু খাবারের মাধ্যমেই রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে তেমনি পাঁচ খাবার হলো-

খেজুর: খেজুরে একটি আঁশ সমৃদ্ধ খাবার। খেজুর ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। গবেষণায় জানা গেছে, আঙুর, কমলা, ব্রকলি এবং মরিচের তুলনায় খেজুরে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। শুকনো খেজুর সংরক্ষণ করে অনেক দিন পর্যন্ত খাওয়া যায়।

দুধ: ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি এর উৎকৃষ্ট একটি উৎস হলো দুধ। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে দুধ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। এছাড়া দুধ দিয়ে ঘরে তৈরি পনির ও দই ডায়াবেটিস প্রশমিত করে। দুধ সকালের নাস্তায় আর পনির স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়া যায়।

তিল: আরেকটি আঁশ সমৃদ্ধ খাবার হলা তিল। তিল রক্তে শর্করার পরিমাণ ও কোলেস্ট্রেরল কমিয়ে থাকে। এছাড়া হৃদযন্ত্রের জটিলতা, হার্টঅ্যাটাকসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি থেকে মুক্ত করে এ খাবার। সকালের নাস্তায় যবের ছাতু কিংবা পনিরের সাথে তিল খেতে পারেন।

তুলসি: ঔষধি ক্ষমতাসম্পন্ন এ গাছ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। এছাড়া টাইপ-২ ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে রাখে। পাশাপাশি তুলসি কিডনির কার্যক্ষমতা সচল রাখাসহ শরীরের অন্যান্য কাযক্রম ঠিক রাখে। এক গবেষণায় জানা গেছে, খালি পেটে তুলসির রস খেলে রক্তের শর্করার পরিমাণ ঠিক থাকে। তাতে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিও কম থাকে। এছাড়া তুলসি চা’ও বেশ উপকারী।

বরবটি: বরবটিও উচ্চ আঁশ সম্পন্ন খাবার। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায় এছাড়া কোলেস্ট্রেরলেও পরিমাণ কম রাখে। বরবটিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে। এছাড়া এটি শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে। বরবটি সালাদ কিংবা এর স্যুপ বানিয়ে খাওয়া যায়।
এছাড়াও রয়েছে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী ১০টি ফল

ডায়াবেটিস এখন বহুল পরিচিত একটি রোগ। বলতে গেলে রীতিমত ঘরে ঘরে এই রোগ এখন। ডায়াবেটিক রোগীরা তাদের তালিকাভুক্ত খাবার একটা রুটিন মেনে খেয়ে থাকেন। ভাত খেলেও তা পরিমাপ মত খেয়ে থাকেন এছাড়া তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রুটি খেয়ে থাকেন। আর সমস্যায় পড়েন হালকা ধরণের নাস্তা বা ক্ষুধা মেটানো। জেনে নিন সেই ফলগুলো সম্পর্কে যেগুলো একজন ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী, সাহায্য করে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণেও রাখতে।

ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী ১০টি ফল
১. কিউই :
কিউই একটি মজাদার ফল। গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ফলটি দেহের সুগারের স্তরকে কমিয়ে আনতে সহায়তা করে। ফলে এই ফলটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বেশ কার্যকরী।

২. কালো জাম :
এই কালো জাম নিঃসন্দেহে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী একটি ফল। এতে থাকা বিভিন্ন উপাদার সুপারের পরিমাণ বৃদ্ধি থেকে দেহকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ফলে ডায়াবেটিক রোগীরা তাদের দেহের অতিরিক্ত সুগারকে নিয়ন্ত্রণে আনতে কোনো চিন্তা ছাড়াই এই ফলটি খেতে পারেন।

৩. কামরাঙ্গা :
কামরাঙ্গা ফলটি স্বাদে টক ও মিষ্টি দুই ধরনেরই হয়ে থাকে। কালো জামের মত এটিও দেহে তৈরি হওয়া অতিরিক্ত সুগারের স্তরকে নিয়ন্ত্রণে আনে। ফলে ডায়াবেটিক রোগীরা তাদের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ফলটি তাদের খাবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

৪. পেয়ারা :
পেয়ারা খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। পেয়ারা ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং পাশাপাশি এটি কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়তা করে। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি রয়েছে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে। এতে জিআই খুবই কম পরিমাণে আছে। ডায়বেটিক রোগীরা এই পেয়ারা ফলটি নানাভাবে বিভিন্ন সময়ে খেতে পারেন এতে করে তাদের ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।

৫. আনারস :
আনারস অ্যান্টি ভাইরাল, অ্যান্টি ইনফ্ল্যামাটরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটরিয়াল সমৃদ্ধ একটি ফল। আনারস খেলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সাধারণত ভাইরাস জ্বরে আনারস অনেক বেশি কাজে দেয়। এছাড়া ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণেও আনারস বেশ কার্যকরী।

৬. পেঁপে :
পেঁপেতে ভিটামিন এবং মিনারেল রয়েছে। এ কারণে পেঁপে ডায়বেটিক রোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। ডায়বেটিক রোগীরা চাইলে তাদের খাবার তালিকায় পেঁপে ফলটিকে রাখতে পারেন।

৭. কমলা :
কমলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এই সাইট্রাস ফলটিও ডায়বেটিস রোগটিকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম। ভিটামিন সি দেহের সুগারের স্তরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

৮. তরমুজ :
যদিও তরমুজে জিআই লেভেলটা অনেক বেশি পরিমাণে থাকে তবে গ্লাইসেমিকের পরিমাণটি নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ কারণে এটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বেশ কার্যকরী।

৯. ডালিম :
ডায়বেটিক রোগীদের রক্তে সুগারের নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে এই ফলটি অর্থাৎ ডালিম। ডালিম এমনিতেই অনেক রোগের কার্যকরী ওষুধ হিসেবে কাজে দেয়। তবে ডায়াবেটিস রোগটি নির্মূলে এটি বেশ সহায়তা করে।

১০. কাঁঠাল :
কাঁঠাল এমন একটি ফল যেটিতে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, থাইমিন, রিবোফ্লেভিন, নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ এবং ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। এসব কারণে কাঁঠালে অন্যান্য ফলের তুলনায় গুণাগুণও অনেক বেশি। তাই রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে বলে কাঁঠাল ডায়াবেটিস রোগের জন্যও কার্যকর।

চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/2015
Saturday, ‎04 ‎April, ‎2015 02:03:18 PM

Share