Home / চাঁদপুর / ডাকাতিয়া খনন শুরুতেই ব্ন্ধ : হামলায় ৫ শ্রমিক আহত
ডাকাতিয়া খনন শুরুতেই ব্ন্ধ : হামলায় ৫ শ্রমিক আহত

ডাকাতিয়া খনন শুরুতেই ব্ন্ধ : হামলায় ৫ শ্রমিক আহত

চাঁদপুরে নৌ-মন্ত্রণালয়ের ১৫ কোটি টাকার প্রকল্প ভেস্তে যাওয়ার আশংকা, নদী খননের প্রথম দিনেই শ্রমীকদের ওপর হামলা

চাঁদপুর থেকে হাজীগঞ্জের নৌ চ্যানেলের নাব্যতা সংকট নিরসন ও ডাকাতিয়ার নৌ-রুট সচল রাখার লক্ষ্যে সরকার টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ এর তত্ত্বাবধানে নৌ চ্যানেল খননের উদ্যোগ নেয়। পুলিশ পাহারায় এ খনন কাজ শুরু করার প্রথম দিন বুধবার (২০ এপ্রিল) চাঁদপুর শহরের ইচলি ঘাট এলাকায় বঙ্গ খনন ড্রেজার ভাংচুর এবং ৪ শ্রমিককে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।

এ ঘটনায় খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অতিরিক্ত পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ১ যুবককে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া আহত ৪ ড্রেজার শ্রমিককে পুলিশের পিকাপ ভ্যানে করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছে।

বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছে। আহত শ্রমিকরা হলেন চট্টগ্রামের কামাল উদ্দিন (৫২), গোপাল গঞ্জের মো. আনাছ (১৮) একই জেলার মাহাবুব (২৫ এবং পঞ্চগর জেলার মজনু মিয়া (২৭) ও ইসহাক শেখ (৫০)।

চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. নুরুল ইসলাম জানায়, ডাকাতিয়ার নৌ-রুট সচল রাখার লক্ষ্যে বিআইডব্লিউটিএ এর তত্ত্বাবধানে বঙ্গ খনন ড্রেজার নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সকাল থেকে কাজ শুরু করে।

কাজ চলাকালিন সময়ে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই (উপপরিদর্শক) ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ ৫০/৬০ জনের একদল রাজনৈতিক পরিচয়ধারী যুবক লাঠি-সোটা নিয়ে ড্রেজারে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।

এসময় ড্রেজারের ৫ শ্রমিককে পিটিয়ে আহত করা হয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে এক যুবককে আটক করতে সক্ষম হই। এছাড়াও আহত শ্রমিকদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠোনো হয়েছে।

আহত শ্রমিক মজনু মিয়া জানায়, সকালে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হয়। বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ একদল যুবক লাঠি-সোটা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায় এবং আমাদের ব্যাপক মারধর করে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুর থেকে হাজীগঞ্জের নৌ চ্যানেলের নাব্যতা সংকট নিরসন ও ডাকাতিয়ার নৌ-রুট সচল রাখার লক্ষ্যে সরকার টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ এর তত্ত্বাবধানে নৌ চ্যানেল খননের উদ্যোগ নেয়।

গত কয়েকমাস আগে সর্বনি¤œ ১৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়ে দেশের প্রখ্যাত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বঙ্গ খনন ড্রেজার কোম্পানী কাজটি পায়। দীর্ঘ একমাস পূর্বে শহরের ইচলীঘাট এলাকায় বঙ্গ খনন ড্রেজার কোম্পানীর নদী খননের সরঞ্জামাদি এসে পৌছলেও এখন পর্যন্ত তারা কাজ শুরু করতে পারেনি।

অভিযোগ রয়েছে চাঁদপুরের একটি নামধারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হয়ে কাজ নিতে না পেরে চাঁদপুর হাজিগঞ্জ নৌ রুটের ড্রেজিং কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি চাঁদা দাবি করে। তাদের কাজ করতে হলে ৩ কোটি টাকা চাঁদা দিয়ে কাজ করতে হবে।

ড্রেজিং এর ব্যপারে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে মার্চের ২৪ তারিখে প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম তালুকদার স্বাক্ষরিত চিঠি আসার পরও জেলা প্রশাসন এখন পর্যন্ত অজানা অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ।

জানা গেছে, কিছুদিন পূর্বে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেড থেকে চাঁদপুর-হাজীগঞ্জ নৌ-রুটের চাঁদপুর সদরের সাহেব বাজার পর্যন্ত নদী ড্রেজিং করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানদের টেন্ডার আহব্বান করা হয়।

এসময় চাঁদপুরের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি নেওয়ার জন্য তদবির করে। নদী খননের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, ড্রেজার, দক্ষতা ও দরপত্র বেশি দেওয়ায় তাদেরকে নৌ মন্ত্রনালয় কাজটি দেয়নি।

সর্বনিম্ন দরপত্র হিসেবে বঙ্গ খনন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. রেজাউল প্রায় ১৫ কোটি টাকায় খনন কাজ পায়। কাজ পাওয়ার পরপরই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি গত ১মাস পূর্বে জনবল নিয়ে ড্রেজিং এর সরঞ্জামাদিসহ চাঁদপুর আসে।

প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করতে গেলে গুনরাজদী এলাকার কতিপয় যুবক রাজনৈতিক দলের নেতা পরিচয় দিয়ে কাজে বাধা প্রদান করে। নেতাদের অনুমতি ব্যতীত কাজ করতে দেওয়া যাবে না বলে হুমকি প্রদান করে। এছাড়া কাজ করতে হলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ৩ কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে এমন হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কাজটি বন্ধ করতে চাঁদপুরের রাজনৈতিক দলের বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতা জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে ওইস ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বঙ্গ খনন ড্রেজারের এজিএম ড্রেজিং আনিছুর জামান জানান, ‘কি ঝামেলা হচ্ছে তা আমি জানি না জানতে চাই ও না। বিআই ডরিøউটিএ আমাকে কাজ শুরু করার পরিবেশ তৈরি করে দেবে আমি কাজ শুরু করবো। যে কোন সমস্যা হলে তারাই মোকাবেলা করবে।’

চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, ‘পোর্ট (বন্দর) অফিসারে মাধ্যমে জেনেছি কে বা কারা সরকারের বরাদ্দকৃত ডাকাতিয়া নদী খনন কাজে বাধা প্রদান করেছে। এ ব্যপারে বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে।’

আশিক বিন রহিম[/author]

: আপডেট ২:০০ এএম, ২১ এপ্রিল ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ