Home / চাঁদপুর / ডাকাতিয়ার নীরব ভাঙন আতঙ্কে হাজারও পরিবার
ডাকাতিয়ার

ডাকাতিয়ার নীরব ভাঙন আতঙ্কে হাজারও পরিবার

চাঁদপুর পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের উত্তর গুণরাজদী দর্জিঘাট এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর থেমে থেমে ভাঙ্গনে ওই এলাকার দর্জিঘাট হতে আলআমিন স্কুল ও ঘোড়ামারা আশ্রয়ন এলাকার প্রায় ১শ’ মিটার জায়গা বিলীন হয়েছে। ফলে ভাঙন আতঙ্কে দিনপার করছে স্থানীয় শত শত পরিবার। ভাঙনরোধে বরাবরের মতো আশ্বাস দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তবে স্থানীয়রা আশ্বাস নয়, চায় স্থায়ী প্রতিকার।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের ঘোড়ামারা আশ্রয়ন কেন্দ্র থেকে শুরু করে উত্তর গুণরাজদী এলাকার তালুকদার বাড়ি, গাজী বাড়ি,তশিলদার বাড়ি এবং ঢালীবাড়ি এলাকার ডাকাতিয়া নদীর তীরে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ওই এলাকায় প্রায় ১শ’ মিটার জায়গা তলিয়ে গেছে নদীতে। এছাড়া ফসলি জমি, পারিবারিক কবরস্থান,গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হুমকিতে রয়েছে অনেক বসতভিটা।

স্থানীয়রা জানায়, ডাকাতিয়া নদীতে অসংখ্য ডুবচর ছাড়াও অহেতুক কয়েকটি চর পড়ে আছে। এছাড়া দক্ষিণ পাশে দেশ এনার্জি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ নদী তীরে বালু ভরাট করে রেখেছে।‌ ভরাটকৃত সেই জায়গাটির কারণে নদীর পানি স্রোত বাধাগ্রস্ত হয়ে

উত্তর-পূর্বদিকে গুনরাজদি এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ।‌ জোয়ার-ভাটার এই তীব্র স্রোতের কারণে দর্জিঘাট এলাকা দিয়ে নদীর পাড়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীর উত্তর পাড়ের চরগুলো ড্রেজিং করতে এসেও কাজ সম্পন্ন না করে ফিরে গিয়েছে। কি কারণে ড্রেজিং কাজ সম্পূর্ণ না করে কর্তৃপক্ষ ফিরে গিয়েছে তা নদীর পাড়ের এলাকার মানুষ জানেন না।

গুনরাজদী এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম ও রাহিম তালুকদার জানান, প্রতিবছরই এখান দিয়ে নদী ভাঙছে।

২০১৭ সাল থেকে ডাকাতিয়া নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। এপাড় নদী ভাংতেছে ওপাড় বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের কাছ দিয়ে আবার চর পড়তাছে। এখানকার নদী ভাংগন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। নদী ভাঙন রোধে এখনই যথাযথ কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে রেললাইন সড়কসহ কয়েকটি এলাকা বিলীন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই, নদী ভাঙনরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, আমরা ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছি। নদীর তীরে ভাঙন এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ভাংগন জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সেখানে ভাংগনরোধের কাজ হবে।

১২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক শরিফ উদ্দিন আহমেদ পলাশ বলেন, ওই এলাকার বাসিন্দারা আমাকে তাদের এলাকার নদী ভাঙন বিষয়টি জানিয়েছে। ডাকাতিয়ার ভাংগনে দর্জি ঘাট হতে ঘোড়ামারা আশ্রয়ণ কেন্দ্র পর্যন্ত এলাকাটি হুমকির সম্মুখীন। নদীর কাছেই রেললাইন এবং বঙ্গবন্ধু সড়ক। আশপাশে বহু বাড়িঘর,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেকগুলো স্থাপনা রয়েছে এখানে। এই এলাকা রক্ষায় নদীর পাড় সিসি ব্লক ডাম্পিং ও ব্লকবাঁধের কাজ করা খুবই জরুরি।

প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম, ২৮ অক্টোবর ২০২৪