চাঁদপুর

ঠিকাদারের অনিয়মে চাঁদপুর স্বাস্থ্য বিভাগের কোটি টাকা ফেরত

ঠিকাদারদের অনিয়ম ও অর্থ লোপাটের আশংকায় চাঁদপুরের সিভিল সার্জন মোঃ মতিউর রহমান বিশেষ বরাদ্দের এক কোটি টাকা ফেরত পাঠিয়েছেন।

সরঞ্জাম ক্রয়ের আলাদা আলাদা নির্দেশনা এবং সময় স্বল্পতা ও অর্থ লোপাটের আশংকায় তিনি এ বরাদ্দ দেন ফেরত দেন বলে চাঁদপুর টাইমসকে জানিয়েছেন।

অনিয়মের কারণে ক্রয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ মালামাল ক্রয় না করে অর্থ ফেরত দেয়া হয়েছে। এছাড়া ক্রয়ের বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন কিংবা দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায, চাঁদপুরের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ২২ নম্বর স্মারকে চলতি বছরের ২ফেব্রেুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে বিশেষ বরাদ্দের জন্যে আবেদন করেন। আবেদনে যন্ত্রপাতি ক্রয় ৫০ লাখ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ২০লাখ, গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা বাবদ ২০লাখ টাকা, লিলেন সামগ্রী ২০লাখ টাকা এবং আসবাবপত্র বাবাদ ৪০লাখ মোট কোটি ৬০ লাখ টাকার জন্যে বিশেষ কিস্তি অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়।

এসব উপকরণ তিনটি ৫০ শয্যা হাসপাতাল (কচুয়া, মতলব দক্ষিণ ও হাজীগঞ্জ), ৪টি ৩১শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল (শাহরাস্তি, হাইমচর, ফরিদগঞ্জ ও মতলব) এবং জেলার মোট ২০টি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিতরণ হওয়া কথা ছিলো।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (বাজেট) ডা. মো. আনিছুর রহমান কর্তৃক স্বাক্ষরিত চিঠিতে সিভিল সার্জন চাঁদপুর এর নিয়ন্ত্রণাধীন উপজেলা হাসপাতাল সমূহের জন্যে ৪৮৬৮ এমএসআর খাতে অতিরিক্ত এক কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

গত ২৯ মে এমএসআর সামগ্রী ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির সিদ্ধান্ত মতে সকল নিয়ম নীতি অনুসরণ করে স্বল্প সময়ে এক কোটি টাকা খরচ করা সম্ভব হবে না মর্মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠায়।

এ সিদ্ধান্ত কারণে চাঁদপুর স্বাস্থ্য বিভাগ প্রায় কোটি টাকা লোপাট থেকে মুক্তি পায়।

এ বিষয়ে চাঁদপুর বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহমুদুন্নবী মাসুম স্থানীয় এক গণমাধ্যমকে জানায়, ‘এ বরাদ্দের বিষয়টি আমরাও জানতাম না। এক রকম লুকোচুরি খেলার মধ্যেই এটি বৈধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। শেষ সময়ে সিভিল সার্জনের সিদ্ধান্তে তা বুমেরাং হয়।’

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন মোঃ মতিউর রহমান এ বিষয়ে চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘গত ২৩ ফেব্রুয়ারিতে মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষরিত একটি বরাদ্দের চিঠি আমার কাছে গত ৯ মে তিনজন ঠিকাদার নিয়ে আসেন। ওই পত্রে আমার নামে বরাদ্দ দেয়া কিছু মালামালের তালিকা দেখি। যা আমার কাছে অফিসিয়াল পদ্ধতিতে আরো আগে আসার কথা ছিলো। এতোদিন পর এবং অফিসিয়াল পদ্ধতিতে না এসে তাদের মাধ্যমে আসায় বিষয়টি নিয়ে আমার গড়মিল মনে হয়। ওই পত্রে উল্লেখিত ‘‘স্মারকদ্বয়’’ শব্দ উল্লেখ দেখে মনে হয় এখানে আরেকটি পত্র রয়েছে যা ঠিকাদার গোপন করেছে। এছাড়া আরো কিছু বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলে তা যাচাইয়ের জন্য ঠিকাদারদের কাছে সময় চাই। তখন তারা বিষয়টি তাড়াহুড়ো করে করতে বলেন এবং মালামাল ক্রয়ের জন্য তাদের নির্দেশ দিতে অনুরোধ করেন। বিষয়টি আমি ক্রয়সংক্রন্ত এমএসআর ও স্পিসেফিকেশন কমিটিকে অবহিত করি। এছাড়া সাবেক সিভিল সার্জন ও ঊর্ধ্বতন ক’জন কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে বরাদ্দ দেয়া ওই পত্র যাচাই করে আমার কাছে বিষয়টি অনিয়ম মনে হয়।’

তখন ক্রয় কমিটির পরামর্শে অনিয়মযুক্ত বরাদ্দটি বাতিলে চিটি ইস্যু করা হয় বলে জানান এ কর্মকর্তা।

চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮: ০০ পিএম, ৫ জুন ২০১৭, সোমবার
ডিএইচ

Share