ঈদে চাঁদপুর-সিলেট বিশেষ ট্রেনের সময়সূচি

আসন্ন ঈদুল ফিতরে পাঁচ রুটে বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি রুটে বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। এসব ট্রেনে আসন রয়েছে ২ হাজার ৪০০টি। এ ছাড়া ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাওয়ারও সুযোগ রয়েছে।

রেলওয়ের পরিবহন ও কর্মাসিয়াল বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এবারের ঈদযাত্রায় চট্টগ্রাম থেকে ১০টি আন্তঃনগর, মেইল এবং সাতটি বিশেষ ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করে প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। এ লক্ষে শুক্রবার (৭ এপ্রিল) থেকে রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে, চলবে আগামী পাঁচদিন।

ঈদে ট্রেনের টিকিট পেতে যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করতে এবার অনলাইনে টিকিট বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে। শুধু ১০টি আন্তঃনগর ট্রেনের সাড়ে ৭ হাজার টিকিট বিক্রি হবে অনলাইনে। অন্যান্য মেইল ট্রেন ও স্পেশাল ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে কাউন্টারে। এ ছাড়া ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে শোভন শ্রেণির (নন এসি) মোট আসনের ২৫ শতাংশ আসনবিহীন টিকিট (স্ট্যান্ডিং) যাত্রার দিন কাউন্টার থেকে কিনতে পারবেন যাত্রীরা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে প্রতিবারের মতো এবারও দুইটি বিশেষ ট্রেন চলবে। প্রতিটিতে ৫১৪টি করে দুই ট্রেনে আসন সংখ্যা ১ হাজার ২৮টি। দুটি বিশেষ ট্রেনের মধ্যে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল-১ চাঁদপুরের উদ্দেশে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ছেড়ে যাবে প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টায় আর চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছাড়বে বিকাল সাড়ে তিনটায়। চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল-২ চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যাবে বিকাল তিনটা ২০ মিনিটে এবং চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছাড়বে সকাল ৬টায়। স্বাভাবিক সময়ে এই রুটে দুটি ট্রেন চলাচল করে।

চাঁদপুর-সিলেট রুটে বিশেষ ট্রেনটি সিলেট থেকে বিকাল চারটা ৪০ মিনিটে ছেড়ে চাঁদপুরে পৌঁছাবে রাত সোয়া ১২টায়। আর চাঁদপুর থেকে বিকাল ৪টায় ছেড়ে সিলেটে পৌঁছাবে রাত ১২টায়। ট্রেনে আসন রয়েছে ৪৮৮টি।

চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে বিশেষ ট্রেনটি ময়মনসিংহের উদ্দেশে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে রাত ১০টায় ছাড়বে। আর ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবে সকাল ১১টায়। এই ট্রেনে আসন রয়েছে ৪০০টি। স্বাভাবিক সময়ে এই রুটে দুটি ট্রেন চলাচল করে।

ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রুটে বিশেষ ট্রেনটি ঢাকা থেকে সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ছেড়ে দেওয়ানগঞ্জ পৌঁছাবে বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে। আর দেওয়ানগঞ্জ থেকে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে রওনা হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ১১টা ১০ মিনিটে। ট্রেনে আসন রয়েছে ৪৬৬টি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ঈদে চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেতে ১৭-১৮ হাজার যাত্রীর টিকিটের চাহিদা থাকে। নিয়মিত, বিশেষ ট্রেনসহ অতিরিক্ত বগি সংযোজন করে সর্বোচ্চ ১০ হাজারের মতো টিকিট দেওয়া যেতো। তাই এবার বিশেষ ট্রেন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে এবারের ঈদে অন্তত ১২-১৩ হাজার টিকিটের চাহিদা মেটানো যেতে পারে।

এদিকে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রথম দিন গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তেমন ভিড় ছিল না। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জাফর আলম বলেন, ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। যা আগামী ৫ দিন চলবে। এখন অনলাইনে শতভাগ টিকিট বিক্রি হওয়ার কারণে স্টেশনে ভিড় নেই। তবে ঈদের সময় ভিড় হবে। ১৫ এপ্রিল থেকে ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঈদযাত্রার আনন্দকে আরও রাঙিয়ে তুলতে এবার পাঁচটি রুটে বিশেষ ট্রেন চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে চাঁদপুর-সিলেট রুট এবং চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে এবারই প্রথম ঈদে বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। আগে ঈদের সময় এই দুই রুটে আগে কখনো বিশেষ ট্রেন চলাচল করেনি।

তিনি বলেন, মূলত ঈদের সময় যাত্রীদের ভোগান্তি কমানোর লক্ষে এসব বিশেষ ট্রেন চালু করেছে রেলওয়ে। এসব বিশেষ ট্রেন ১৮ এপ্রিল থেকে চলাচল করবে। ঈদের দিন ছাড়াও ঈদ পরবর্তী আরো দুয়েকদিন যাত্রী পরিবহন করবে।

টাইমস ডেস্ক, ৭ এপ্রিল ২০২৩

Share