কুমিল্লা করেসপন্ডেন্ট || আপডেট: ০৪:১০ অপরাহ্ন, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার
রাত পোহালেই ঈদের দিন। তাই ট্রেনে অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মানুষ নাড়ির টানে বাড়ি ফিড়ছে ঘরমুখী মানুষ। কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটসহ বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটছে মানুষ। ট্রেনের ভেতরে জায়গা না পেয়ে ছাদে পুরুষের পাশাপাশি নারী ও শিশুসহ নানা পেশার মানুষকে বৃষ্টিতে ভিজে চরম ভোগান্তি মাথায় নিয়ে যাত্রা করেছে মানুষ। বৃহস্পতিবারের ট্রেনগুলোতেও এমনই চিত্র।
সরকারি- বেসরকারি অফিসের শেষ কার্যদিবস ছিল বুধবার। অনেকে অফিসে হাজিরা দিয়েই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে ঘরমুখো হয়েছেন। আবার অনেকে আগাম ছুটি নিয়ে রওনা দিয়েছেন বাড়ির উদ্দেশে। ফলে বুধবার সকাল থেকে মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল কুমিল্লা রেলস্টেশনে। তবে রাতের চিত্র ছিলো আরো করুন। একসঙ্গে এতো মানুষ ঘরের পথে রওনা দেয়ায় স্টেশনে ব্যাপক জটলার সৃষ্টি হয়। সে সঙ্গে দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি ঈদ যাত্রায় বাড়তি বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে।
ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী বুধবার রাতে কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন নির্ধারিত সময়ের ১ থেকে ২ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়লেও ক্ষোভ নেই যাত্রীদের। প্রতিটি ট্রেন অসম্ভব চাপ নিয়ে ছুটছে গন্তব্যে।
ট্রেনের ভেতরে গিজ গিজ করছে মানুষ। ছাদেও মানুষের মাথা আরা মাথা। কোথাও তিলধারণের ঠাঁই নেই। আবার বৃষ্টিতে ভিজেই শিশু ও নারী সবাই ছাদে উঠেছেন। বিশেষ করে গার্মেন্টে চাকুরী জীবী নারীরাই যথাসময়ে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহে ব্যর্থহয়ে ট্রেনের ছাদেই উঠতে বাধ্য হয়েছেন। এমনটাই জানালেন চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনের ছাদে চড়ে বৃষ্টি ভিজে আর জীবনের ঝুঁকির বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা কয়েকজন নারী গার্মেন্ট কর্মী।
বুধবার রাতে সিলেটের ট্রেনের অপেক্ষায় কুমিল্লা রেল স্টেশনে দাড়িয়ে থাকা কয়েকজন স্বল্প আয়ের লোকের সাথে কথা হয়। তারা জানান, স্বল্প আয়ের লোকজনে বাড়ি ফেড়ার প্রধান মাধ্যম ট্রেন। টিকিট না মিললেও তারা ট্রেনকেই বেছে নিয়েছেন। তাই প্রতিটি ট্রেন নির্ধারিত আসনের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ যাত্রী নিয়ে স্টেশন ত্যাগ করেছে। ভেতরে গাদাগাদি করে মানুষ কোনো রকমে দাঁড়িয়ে এমনকি ট্রেনের টয়লেটের মধ্যেও। একই চিত্র বৃহস্পতিবারের ট্রেনগুলোতেও।
এদিকে কয়েকটি ট্রেন কুমিল্লা পৌছাতে বেশ বিলম্বিত। তবে এর কার হিসেবে রেল কর্মকর্তারা দেখলেন ভিন্ন যুক্তি। তারা বলেছেন এটি কোনো শিডিউল বিপর্যয় কিংবা যাত্রা বিলম্ব নয়।
কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মো: আবু তাহের জানালেন, অতিরিক্ত চাপের কারণে যাত্রীদের ওঠা-নামার সুবিধার্থে ট্রেন গুলো প্রতিটি স্টেশনে ৭-৮ মিনিট করে বিলম্বিত হয়েছে।
ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের কাছে হার মেনেছে দুর্ভোগ। ক’দিন ধরেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। তারপরও ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষ সব কষ্ট-দুর্ভোগ বাড়ি ফেরার আনন্দের কাছে হার মানছে।
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ এমআরআর/২০১৫