জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিনিধি লুইস আরবোর জানিয়েছেন,‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনের জন্য বিশেষ অবদান রেখেছেন প্রবাসীরা। ২০১৬ সালে প্রবাসীরা নিজ নিজ দেশে ৪২৯ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন । এ অর্থের পরিমাণ হচ্ছে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত উন্নয়ন সহায়তার ৩ গুণ বেশি। বেসরকারিভাবে অর্থনৈতিক স্থিতি অর্জনের পথে এ রেমিটেন্স প্রক্রিয়ার ভূমিকা অপরিসীম।’
জাতিসংঘ প্রস্তাবিত ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর সেফ,অর্ডারলি অ্যান্ড রেগুলার মাইগ্রেশন’র কন্সালটেশন পর্বে দু’দিনব্যাপি চতুর্থ থিমেটিক সেশনে লুইস আরবোর এসব তথ্য তুলে ধরেন। সোমবার (২৪ জুলাই) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে আয়োজিত এ সেশনে অংশ নেন জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধি,সুশীল সমাজের প্রতিনিধি,পেশাজীবী-শ্রমজীবী,অভিবাসী সমাজের প্রতিনিধিরা।
লুইস আরবোর আরও বলেন,‘উন্নয়নশীল রাষ্ট্রসমূহে বহু মানুষকে দারিদ্রসীমার ওপরে উঠতে প্রবাসীরা অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে। এ কারণে রেমিটেন্সের ফি একেবারেই কমিয়ে ফেলা উচিত। প্রবাসীদের মানবাধিকার প্রশ্নেও উন্নত দেশগুলোর সজাগ হওয়ার বিকল্প নেই। কারণ,যে সব দেশে প্রবাসীরা মেধার বিনিয়োগ ঘটাচ্ছেন এবং শ্রম দিচ্ছেন,সে সব দেশও উপকৃত হচ্ছে।’
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি সুইং বলেন,‘অভিবাসী শ্রমিকদের প্রেরিত অর্থে অনেক দেশই তার উন্নয়ন-পরিকল্পনা তৈরি করছে। এজন্যে অভিবাসীদের মানবাধিকার প্রশ্নে সকলকে সোচ্চার থাকা জরুরি। একইসাথে মূলধারার সকল কার্যক্রমেই অভিবাসীদের সম্পৃক্ততাও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’
এ সেশনে বাংলাদেশ ডেলিগেশনের পক্ষে অংশ নেন মো:ইসরাফিল আলম এমপি ও মাহজাবিন খালেদ এমপি। থিমেটিক সেশনটিকে দু’টি প্যানেলে বিভক্ত করা হয়। প্যানেল-১ এ অংশ নেন এমপি মাহজাবিন খালেদ এবং প্যানেল-২ এ অংশ নেন এমপি মো:ইসরাফিল আলম।
‘টেকসই উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে অভিবাসীদের অবদান : অভিবাসন ও উন্নয়নের যোগসূত্র’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত প্যানেল-১ এর আলোচনায় অংশ নেন এমপি মাহজাবিন খালেদ। তিনি এসডিজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সামষ্টিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নারী অভিবাসীদের উপার্জন সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা তুলে ধরেন। এ ক্ষেত্রে তিনি প্রচলিত সামাজিক সংকীর্ণতা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী আইন-কানুনের উর্ধ্বে উঠে বিশ্ব সম্প্রদায়কে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্যানেল-২ এর প্রতিপাদ্য ছিল ‘টেকসই উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে অভিবাসী ও প্রবাসীদের অবদান : সহায়ক পরিকাঠামো নির্মাণ’। মো.ইসরাফিল আলম এমপি এ সেশনে অংশ নিয়ে প্রবাসী কমিউনিটির জন্য দেশে বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা এবং তাদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ব্যবহারের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
উভয় সংসদ সদস্য দেশের উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। তারা প্রস্তাবিত গ্লোবাল মাইগ্রেশন কমপ্যাক্টের মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রেরণে খরচ কমানো,রেমিট্যান্সের নিরাপত্তা বিধান,অভিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণ,বৈষম্য দূরীকরণ,সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং উন্নয়নের মূলধারায় অভিবাসী ও প্রবাসী কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, মো:ইসরাফিল আলম এমপি ৭ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশের মাইগ্রেশন ককাস এর সভাপতি এবং মাহজাবিন খালেদ এমপি এর সদস্য।
ডেস্ক নিউজ
:আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৬:২০ পিএম,২৫ জুলাই ২০১৭,মঙ্গলবার
এজি