কৃত্রিম বাতাসে জ্বলে উঠছে আগুন। সেই আগুনে তৈরি হচ্ছে চাপাতি। শান দেওয়া দা, বটি, ছুরি, চাকু সাজিয়ে রাখা হয়েছে দোকানে। চারদিকে টুং-টাং-টিং-টাং শব্দে চলছে কোরবানি ঈদের পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম তৈরি।
আগামী শনিবার পবিত্র ঈদুল আযহা। আর পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কামারপাড়ায় এখন এমনই ব্যস্ততা।
মুসলমানদের অন্যতম প্রধান এ ধর্মীয় উৎসব এলে সরগরম হয়ে ওঠে উপজেলার বাজারগুলোর সবগুলো কামারপাড়া। কোরবানির ঈদ যে কামারদের দা, ছুরি-চাকু ও চাপাতিরই। উপজেলার ছেংগারচর পৌর বাজার, নিশ্চিন্তপুর বাজার, কালির বাজার, কালিপুর, মোহনপুর, নতুন বাজার, নন্দলালপুর, সুজাতপুর, এখলাছপুর,ষাটনল মালোপাড়া, গজরা বাজার কামারপাড়া ঘুরে দেখা যায়, আগুনের তাপে ঘাম ঝরছে কামারের শরীরে। ইস্পাত কঠিন হাত দু’খানা আঘাত করছে লোহার বস্তুতে। শক্ত আঘাতে বদলে যাচ্ছে লোহার ধরন। তৈরি হচ্ছে মাংস কাটার অস্ত্র।
কামারপাড়ার এ দৃশ্য নতুন নয়। তবে কোরবানির ঈদকে ঘিরেই বাড়ে এ পাড়ার ব্যস্ততা। কামারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, কোরবানির ঈদকে ঘিরেই তাদের ব্যবসা জমে। এ সময় ঋণ করে হলেও লৌহজাত সামগ্রী (ইস্পাত-লোহা) এনে মাংস কাটার সরঞ্জাম তৈরি করা হয়।
দরদামের বিষয়ে তারা জানান, এখন কামারপাড়ায় প্রতি পিস ছুরি ৫০-১০০ থেকে দেড় শ’ টাকা, চাপাতি ২০০-২৫০, দা ১৫০-৩০০, বটি দা ১২০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে লোহা থেকে ইস্পাতের সরঞ্জামের দাম বেশি। আর চাপাতিতে লৌহজাত সামগ্রী বেশি লাগে, তাই কেজি হিসেবে বিক্রি করেন। ছেংগারচর বাজারের কামার বিষু কর্মকার, দিনেশ কর্মকার ও বিপ্লব কর্মকার বলেন, রেডিমেড বিক্রি পাশাপাশি অর্ডার অনুযায়ী পশু জবাইর সরঞ্জাম তৈরি করে বিক্রি করা হয়। কাজের ওপর নির্ভর করে মেরামতে খরচ পড়ে ১০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত।
বিষু কর্মকার তিনি আরো জানান, মাংস কাটার বা চামড়া ছাড়ানোর ছোট-বড় ৮ থেকে ১০ ধরনের ছুরি-চাকু তৈরি করে থাকেন তারা। প্রকারভেদে ৫০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকেন সেসব।
এছাড়া, বটি দা ১২০ থেকে ১২০০-১৫০০ টাকা দামে বিক্রি করেন। পশু জবাইয়ের মাঝারি ছুরি ২৫০-৬৫০, বড় ছোরা ৫শ’ থেকে হাজার টাকাও বিক্রি করেন। গজরা বাজারের রাখাল কর্মকার বলেন, আমার দোকানে লোহা ও স্টিলের তৈরি সরঞ্জামও রয়েছে। এগুলোর নামে ও দামে রয়েছে ভিন্নতা।
প্রতিবেদক: খান মোহাম্মদ কামাল
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৩:৩০ এএম,৩১ আগস্ট ২০১৭, বৃহস্পতিবার
এজি