খেলাধুলা

টি টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দুর্দান্ত বিজয়

ব্যাটসম্যানদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকরা এগিয়ে গেছে চার ম্যাচের এই সিরিজে।

হ্যামিল্টন মাসাকাদজার রেকর্ড গড়া ইনিংসে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৩ রান করেছিল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ এই লক্ষ্য টপকে যায় বল ৮ বাকি থাকতেই। ম্যাচ জুড়ে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স অবশ্য দাপুটে ছিল না। ব্যাটে-বলে অনেক সময়ই দলকে মনে হয়েছে খাপছাড়া। তবে শেষ পর্যন্ত সঙ্গী হয়েছে জয়ের স্বস্তি।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তামিম ইকবালের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন সৌম্য সরকার (৭)। লেগ স্পিনার গ্রায়েম ক্রেমারের বল এগিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ভুসি সিবান্দার ক্যাচে পরিণত হয়ে ফিরে যান তামিম ইকবাল (২৪ বলে ২৯)।

শন উইলিয়ামসের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন টি-টোয়েন্টিতে অভিষিক্ত শুভাগত হোম। মুশফিকের সঙ্গে চতুর্থ উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ার পর ফিরে যান সাব্বির রহমান (৪৬)।

মুশফিকুর রহিমের (২৬) পর মাহমুদউল্লাহর বিদায় চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। সাকিব ও অভিষিক্ত নুরুল হাসান বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান

এর আগে টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংসের নিজের রেকর্ড স্পর্শ করেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। চার ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৩ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে।

শতরানের উদ্বোধনী জুটির পর অবশ্য আরও বড় স্কোরের হাতছানি ছিল জিম্বাবুয়ের সামনে। কিন্তু শেষ দিকে বাংলাদেশের বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে কিছুটা ফিরে আসে বাংলাদেশ। শেষ ৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২১ রান তুলতে পারে জিম্বাবুয়ে। শেষ দুই ওভারে জোড়া উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান ও আল আমিন হোসেন।

শেষে পথ হারানোর আগে জিম্বাবুয়েকে বড় স্কোরের পথে রেখেছিলেন মাসাকাদজা। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের ফর্ম বয়ে আনলেন বাংলাদেশেও। গত নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরের জিম্বাবুয়ে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। পরে আফগানিস্তান সিরিজে দলে ফিরে বইয়ে দিয়েছেন রানের জোয়ার। ৪ ওয়ানডে খেলে করেছিলেন সিরিজের সর্বোচ্চ ২৬৬ রান, দুই টি-টোয়েন্টিতে করেছিলেন ৩৩ ও ৬৩। এবার আরও ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকে।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই মাশরাফিকে তিনটি চার মেরে ইঙ্গিতটা দিয়েছিলেন মাসাকাদজা। সময় যত গড়িয়েছে, ততই ছড়ি ঘুরিয়েছেন বাংলাদেশের বোলারদের ওপর। আরেক প্রান্তে দলে ফেরা ভুসি সিবান্দাও দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন মাসাকাদজাকে। দুজনে গড়েন রেকর্ড ১০১ রানের জুটি।

জিম্বাবুয়ে হয়ে এটিই টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি। আগের সেরা ছিল গত অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চামু চিবাবা ও সিকান্দার রাজার ১০০। লং অনে সৌম্য সরকারের ক্যাচ মিসে ছক্কা হজম করার পরের বলেই সিবান্দাকে (৩৯ বলে ৪৬) ফিরিয়ে এই জুটি ভেঙেছেন সাকিব।

দারুণ এই শুরুটাকে কাজে লাগাতে পারেননি জিম্বাবুয়ের পরের ব্যাটসম্যানরা। দুই ওপেনারের পর তিনে নামা ম্যালকম ওয়ালার (১৪) ছাড়া দুঅঙ্ক ছুঁতে পারেননি আর কেউ। বলতে গেলে একাই দলকে টেনেছেন মাসাকাদজা। ৩৪ বলে ছুঁয়েছিলেন অর্ধশতক।

শেষ পর্যন্ত ৫৩ বলে ৭৯ রান করে মাসাকাদজা আউট হয়েছেন অভিষিক্ত উইকেটকিপার নুরুল হাসানের দুর্দান্ত সরাসরি থ্রোতে। শেষ ওভারে পিটার মুরের ছক্কার পরও জিম্বাবুয়ে আটকে যায় ১৬৩ রানে।

শেষ ৫ ওভারের আগে ইনিংস জুড়ে বাংলাদেশের বোলিং ছিল সাদামাটা, ফিল্ডিংও ছিল হতাশাজনক। শতরানের ওপেনিং জুটি ভাঙলেও ৪ ওভারে ৪৫ রান গুণেছেন সাকিব। টি-টোয়েন্টিতে যেটি তার সবচেয়ে খরুচে বোলিং, ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ ওভারে দিয়েছিলেন ৪০ রান। ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য অধিনায়ক মাশরাফি।

৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ, ২৪ রান দিয়ে দুটি আল আমিন হোসেন।

অভিষেকে বোলিং পাননি শুভাগত হোম। তবে দারুণ কিপিং করে নজর কেড়েছেন আরেক অভিষিক্ত নুরুল হাসান।

৪৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ক্যারিয়ারে এই প্রথম কিপিং করছেন না মুশফিকুর রহিম। তবে দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের কাছে বড় রানের দাবি থাকবে দলের। চাওয়াটা অবশ্য থাকবে দলের সব ব্যাটসম্যানদের কাছেই।

নিউজ ডেস্ক ।।আপডেট : ০৬:১৪ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৫, শুক্রবার
ডিএইচ

Share