চাঁদপুর শহরে দু’রাতের টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতা হয়ে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন রাস্তা ঘাট। এতে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহন চালকরা। এ সময়ে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় চাঁদপুরে ১৫৩ মিলিমিটার।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে চাঁদপুর পৌর এলাকার অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টির পানি জমে জলাদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পৌর এলকার নিচু স্থলে থাকা অনেক বাড়ি ও বসত ঘরে পানি উঠে পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। পাশিপাশি পানিতে ভেসে গেছে বিভিন্ন চাষীদের মৎস্য প্রকল্প।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে এবং শুক্রবার রাতের চাঁদপুরে দুদিন টানা বৃষ্টি হয়। শনিবার দিন ভোরেও থেমে থেমে এ বৃষ্টি হতে দেখা গেছে।
দুদিনের এ টানা বৃষ্টিতে ঠিকমতো পানি নিস্কাসন না হওয়ায় এবং বর্ষা সৌসুমে সকল খাল, বিল, ডোবা, নালা ভরপুর থাকার কারণে চাঁদপুর শহরের অধিকাংশ এলকা বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে।
বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লাতে পানি জমে থাকায় কোথাও কোথাও পানিবন্দি হয়ে আছে অনেক পরিবার। কিছু কিছু এলকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে পড়ে আছে। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের।
৭ আগস্ট শনিবার সরোজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শহরের বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোড, বঙ্গবন্ধু সড়ক, চেয়ারম্যান ঘাটা, জিটি রোড, ষোলঘর পাকা মসজিদ, নাজির পাড়া, বকাউল বাড়ি রোড, কোড়ালিয়া, মমিন পাড়া, প্রফেসর পাড়া, পালপাড়া নিউ ট্রাক রোড, দক্ষিণ গুনরাজদী, রহমতপুর কলোনী ও মধ্য ইচলিসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি রাস্তায় জমা আছে।
এসব এলাকার অধিকাংশ বাড়ি ঘরের সামনে থাকা উঠোনেও বৃষ্টির পানি জমে থাকতে দেখা যায়। বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে সড়ক দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায়।
এছাড়াও যেসব বাড়ি ঘরে বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে তারাও ওই বৃষ্টির পানি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেক দুর্ভোগে পড়েন।
দক্ষিণ গুনরাজদী যুব মৎস্য প্রকল্পের মালিক ও মধ্য ইছলী ঝিলে মাছ চাষী আব্দুল মালেক ভূঁইয়া চাঁদপুর টাইমসকে জানান, দুদিনের টানা বৃষ্টির কার আমাদের কয়েক হাজার বিঘা মৎস্যঘের তলিয়ে গেছে। এতে আমাদের চাষকৃত অনেক মাছের পোনা পানিতে ভেসে যায়।
তারা বলেন,‘গত বছরের মৎস্য হ্যাচারী রেনুর টাকা এখনও পরিশোধ করতে পারিনি। টানা বৃষ্টির জলাবদ্ধতায় আবারও আমরা চরম লোকসানে পড়লাম। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া শনিবার পর্যন্ত গত দু’দিনের ভারী বর্ষণে শহরের বেশির ভাগ পাড়া-মহল্লায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নিচু এলাকাগুলো এখনো হাঁটুপানিতে নিমজ্জিত।’
দক্ষিণ গুনরাজদী এলাকার মামুন নামে এক যুবক জানান, চাঁদপুর পৌরসভার আধীনে আমরা প্রায় ১৫ বছর বসবাস করছি। অথচ আজও ওই এলাকাতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাঁদাপানি জমে থাকে। তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে শহরের নাজীর পাড়া ও রহমতপুর কলনী। সেখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকার পরে হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে শহরের এ এলাকাগুলো ।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ৭ আগস্ট ২০২১