Home / সারাদেশ / বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুপথযাত্রী মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক
বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুপথযাত্রী মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক

বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুপথযাত্রী মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক

মুক্তিযুদ্ধে এসএমজি হাতে রণাঙ্গনের অকুতোভয় লড়াকু বীর সৈনিক আব্দুল মালেক আজ বিনা চিকিৎসায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার মুক্তিবার্তা নম্বর ০৩১৬০৬০২৭২, গেজেট নম্বর ২৩২৫, কল্যাণ ট্রাস্ট নম্বর ৩৯৪৮৭ এবং মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক সনদপত্র নম্বর ৬৬৮৭১।

রাষ্ট্রীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের ‘জাতীর সম্পদ’ হিসেবে মর্যাদা দিলেও আব্দুল মালেকের খবর কেউ নেন না। মুমূর্ষু অবচেতন অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকলেও পরিবার থেকে তার চিকিৎসক দেখানোর মতো কোনো সামর্থ্য নেই।

সরেজমিন সোমবার নাগেশ্বরী উপজেলার ৯ নম্বর ভিতরবন্দ ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি অবচেতন অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছেন। স্ত্রী হামিজন বেগম জানান, ২০১২ সালে তার স্বামীর প্রথম স্ট্রোক হয়। ওই সময় তাকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে প্রাইম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত, তার দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা দরকার। কিন্তু ১৫ দিন চিকিৎসা করার পর টাকার অভাবে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে বাড়িতে স্থানীয় ডাক্তার ও কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা চলছিল।

তিনি আরও জানান, ৮ ফেব্রুয়ারি তার দ্বিতীয় স্ট্রোক হয়। টাকার অভাবে এবার হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি। তিন দিন থেকে তার কথা বন্ধ। চিকিৎসা করার টাকা নাই। একটা স্যালাইন দেওয়ার টাকাও জোগাড় করতে পারেননি।

হামিজন বেগম কেঁদে কেঁদে জানান, প্রতিমাসে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আট হাজার টাকা পান। তাই দিয়ে অতি কষ্টে সংসার চালান।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর মালেকের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে শফিকুল ইসলাম বিএসএস পাস করে বেকার। ছোট মেয়ে নবম শ্রেণিতে এবং ছোট ছেলে ইয়াছিন ইসলাম পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। জমিজমা বলতে শুধু ছয় শতাংশ ভিটাবাড়ি ছাড়া কিছু নেই। বড় ছেলে বিএসএস (ডিগ্রি) পাস করে দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোথাও চাকরি জোটেনি।

এ ব্যাপারে ভিতরবন্দ মুক্তযোদ্ধা ইউনিয়ন কমান্ডার নাজিমুদ্দিন জানান, তারা একসঙ্গে তিস্তামুখঘাট, ভরতখালী, নীলফামারী এলাকায় যুদ্ধ করেছেন। আব্দুল মালেক জীবনবাজি রেখে মুখোমুখি যুদ্ধে অংশ নেয়। মুক্তিযুদ্ধে সফল এ সৈনিক জীবনযুদ্ধে ব্যর্থ।
তিনি আরও জানান, প্রথমবার স্ট্রোকের সময় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড থেকে এক হাজার টাকা সাহায্য করেছিলাম। এবারও উপজেলা কমান্ডকে জানিয়েছি, দেখি কী করে।

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ১০:০৫ অপরাহ্ন, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, সোমবার

এমআরআর