কারা সদর অধিদফতরে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন – ছবি : ইউএনবি
কারা মহাপরিদর্শক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন বলেছেন, ‘দেশের কারাগারগুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় ৬৯টির মধ্যে ১৭টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারও এ বিষয়ে জানেন। বেশ কিছু কারাগার নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
বুধবার কারাগারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কারা সদর অধিদফতরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মোতাহের হোসেন বলেন, ‘কারাবন্দীদের খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ বৃদ্ধি, অসুস্থ হলে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স সেবা, প্রতি এক মাসে তাদের আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করতে দেয়াসহ গত তিন মাসে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা।’
তিনি বলেন, ‘যোগাযোগের ক্ষেত্রে আদালতের আদেশ ছাড়াও সকল প্রকার বিচারাধীন বন্দী প্রতি ১৫ (পনের) দিনে এবং সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ৩০ (ত্রিশ) দিনে, আইনজীবীসহ একবারে পরিবারের সর্বোচ্চ পাঁচজন সদস্যের সাথে সাক্ষাত করতে পারেন।’
এছাড়া প্রত্যেক বন্দিই প্রতি সাত দিনে একবার আইনজীবীসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে তিনটি নম্বরে ১০ মিনিটের জন্য কথা বলার সুযোগ পান। শ্রেণিপ্রাপ্ত বন্দীরা দিনে দুই বেলা এবং অন্য সকল বন্দী দিনে এক বেলা আমিষ জাতীয় খাবার পান।
তিনি আরো বলেন, ‘কারাগারের অভ্যন্তরর ক্যান্টিনে পণ্যের দাম ন্যায্যতার সাথে নির্ধারণ করে ক্যান্টিন সুবিধা সকলের জন্যই উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তবে ব্যক্তি বিশেষে মাসিক সর্বোচ্চ ব্যয় নির্ধারণ করে দেয়ার উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, দেশের এই পরিবর্তিত সময়ে কারাগারগুলোতে সাময়িকভাবে বন্দীর সংখ্যা তুলনামুলকভাবে কমলেও বর্তমানে তা উর্ধ্বমুখী। তাছাড়া বিশেষ প্রকৃতির বন্দীর সংখ্যা কম নয়। তবে সকল সময়ের ন্যায় কারাবিধিসহ অন্যান্য বিধি-বিধানের আলোকে তাদের নিরাপদ আটক ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
বিএসএমএমইউতে সাবেক এমপি আসাদুজ্জামান নূরের সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যখন আমরা বন্দীদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই, তখন আমাদের রক্ষীরা উপস্থিত থাকেন। সেদিনও ছিল। তারা ওই সময় ব্যবস্থা নিয়েছে।’
কারাগারে বর্তমানে ১৫ জন উগ্রবাদী এবং ৭০ জনের মতো পলাতক আছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কাউকে উগ্রবাদী বলছি না। আদালত থেকে তারা উগ্রবাদী হিসেবে এসেছে। আমাদের অবকাঠামোগত কিছু দুর্বলতা আছে। সেগুলো সমাধানের জন্য সরকারের কাছে আমরা প্রস্তাবনা দেবো।’
কারা মহাপরিদর্শক আরো বলেন, ‘গত ৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে ৫০ হাজারের মতো বন্দী ছিল। এই সংখ্যা কমে এলেও এখন আবার তা বেড়ে ৬৫ হাজারের মতো হয়েছে।’
দেশের সব হাসপাতালে প্রিজন সেল না থাকায় বন্দীদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে কিছু দুর্বলতা থাকার কথা স্বীকার করে তা কাটিয়ে উঠার আশ্বাস দেন তিনি। সূত্র : ইউএনবি
8 ডিসেম্বর ২০২৪
এজি