ঝুঁকিতে পড়েছেন সাড়ে চার লাখ বাংলাদেশি ও ভারতীয়। তারা এখন আমেরিকায় উদ্বেগের মধ্যে বাস করছেন। কখন তাদের আমেরিকা ছাড়তে হয় তা নিয়েই তাদের এই উদ্বেগ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের তাড়াতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছেন। গতকাল শুক্রবার কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকায় এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসীদের তাড়াতে অঙ্গীকার করলেও তিনি নিজে একজন অভিবাসী। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মায়ের জন্ম স্কটল্যান্ডে। পিতার প্রথম আলো দেখা জার্মানিতে। ইউরোপের বাস গুটিয়ে ক্রমে আমেরিকায়। শরণার্থী হয়ে সম্পদ নির্মাণের স্বপ্ন। সাফল্য ট্রাম্পের সময়কালে। আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে ধনী প্রেসিডেন্ট তিনি।
সরকারি হিসেবে প্রথম ১১৩ ধনীর একজন। যার নিজস্ব সম্পদ ৪৫০ কোটি ডলার। তার বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৫০০ মামলাও ঝুলে আছে। যার অধিকাংশ জুয়াখেলা সংক্রান্ত। তিনি প্রথম আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যিনি বিশাল জুয়াখানা এবং সবচেয়ে বেশি গলফ কোর্সের মালিক। তার রিয়েল এস্টেটের বাণিজ্য আকাশ ছোঁয়া। হোটেলের কারবারের হিসেব রাখতে তিনি নিজেই জেরবার।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ব্যবসা দেখার সময় কই। হৃদয়ের খাঁচায় পোষাপাখির মতো ডাকছে পুরোনো ইচ্ছে। খালি বলছে, আমেরিকা ফার্স্ট। সাদারা থাকবে শীর্ষে। কালোরা ধুলোয় গড়াগড়ি দেবে। তার পরিবার উদ্বাস্তু হলেও শ্বেতাঙ্গ। তিনি কালোদের ছাঁটবেন, সাদাদের রাখবেন। বর্ণবিদ্বেষের শক্তিতেই আমেরিকা মাথা তুলবে নতুন করে।
নির্বাচনের আগের প্রতিশ্রুতি পূরণে ট্রাম্প অবিচল। প্রেসিডেন্ট হয়েই তিনি বুঝিয়েছেন, যা বলেছেন তা করেই ছাড়বেন। কৃষ্ণাঙ্গ উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদ করাটাই হবে তার প্রথম কাজ। যাদের আমেরিকায় বসবাসের বৈধ কাগজপত্র নেই তারা পার পাবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ছাড়তেই হবে। এমন মানুষের সংখ্যা দেড় কোটিরও বেশি।
ট্রাম্প সবচেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক মেক্সিকানদের বিরুদ্ধে। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বাস করা আর অবৈধ কাজে যুক্ত থাকাটা এক কথা নয়। আমেরিকার ৩০ লাখ লোক অবৈধ কাজ করে। সে কাজে ড্রাগ থেকে অন্য পণ্যের চোরাই চালান আছে।
বাংলাদেশি-ভারতীয়দের বেলাতেও এমনটা হচ্ছে। অবৈধ অভিবাসী হওয়ার অভিযোগে এক লাখ বাংলাদেশি, সাড়ে তিন লাখ ভারতীয়র মাথার উপর খাঁড়া ঝোলান হয়েছে। তাদের ভিসা না থাকলেও কেউ অবৈধ কাজ করে না। যথেষ্ট পরিশ্রম করে অর্থ দেশে পাঠায়। আমেরিকায় সংসার চালাতেও খরচ আছে। যারা বৈধভাবে আমেরিকায় আছে তারাই বা কত দিন থাকতে পারবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
চাপটা বেশি নিউইয়র্কে। ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, শিকাগো, জর্জিয়া, নিউজার্সি, পেনসিলভানিয়ায় বিদেশি বিতাড়নের পর্ব শুরু হয়েছে। আমেরিকার সব রাজ্যের নিজস্ব সংবিধান আছে। রাজ্য কোন পথে চলবে, রাজ্যের আইনসভা সেটা ঠিক করে। আদালতের হাতেও যথেষ্ট ক্ষমতা। তাছাড়া ট্রাম্প আইন আদালতকে টপকে একা এগোতে পারবেন না।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১: ৩১ এএম, ১৮ মার্চ ২০১৭, শনিবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur