জাতীয়

জয় দিয়ে দায়িত্বশীলতা প্রমাণ করলো মাশরাফি

২৩৮ রানের পুঁজি নিয়েও যে দুর্দান্ত লড়াই করা যায়, সেটা দেখিয়ে দিলো বাংলাদেশের বোলাররা। শুরুতে মাশরাফি ঝড়। মাঝে জনি ব্যারেস্ট এবং জস বাটলারের জুটির ওপর ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ইংল্যান্ড। এরপর তাসকিনের আঘাতে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেলো ইংলিশদের। সঙ্গে যোগ দিলেন নাসির। তাতেই ৪৪.৪ ওভারে ২০৪ রানে অলআউট ইংল্যান্ড এবং ৩৪ রানের বীরোচিত জয়ে সিরিজেহ সমতা ফিরিয়ে আনলো টিম বাংলাদেশ।

শুরুটা করেছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন ইনিংসের শেষ দিকে এসে। বল হাতে ঝড় তুললেন শুরুতেই। ২৩৮ রানের পুঁজি নিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করাটা বেশ দুরহ। এমন পরিস্থিতিতে মাশরাফি বিন মর্তুজার সামনে শুরুতেই চাপে পড়ে গেলো সফরকারী ইংল্যান্ড। মাশরাফি তোপে মাত্র ২৬ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড।

যদিও এরপর জনি ব্যারেস্ট আর অধিনায়ক জস বাটলারের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইংল্যান্ড। যে ঝড় মাশরাফি-সাকিব তুলেছিলেন, সেটা ধরে রাখতে পারেনি তাসকিন-শফিউল কিংবা নাসিররা। বরং বাংলাদেশের বোলারদের বেশ স্বচ্ছন্দেই খেলে ম্যাচ বের করে নেয়ার দিকে মনযোগি হয়েছিল ইংল্যান্ডের ওই দুই ব্যাটসম্যান।

দু’জন মিলে গড়েছিলেন ৭৯ রানের জুটি। তাদের এই জুটিতে ধীরে ধীরে যেন ম্যাচ মাশরাফিদের হাতের মুঠো গলে বের হয়ে যাচ্ছিল। ওই সময় মাশরাফি বোলিংয়ে নিয়ে আসেন তাসকিনকে। যিনি আবার প্রথম স্পেলে ২ ওভার বল করে রান দিয়েছিলেন ১৯টি। এসেই তিনি ভেঙে দিলেন ইংল্যান্ডের দুর্ধর্ষ এই জুটি। জনি ব্যারেস্টকে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন উইকেটের পেছনে।

জস বাটলারের সঙ্গে জুটি বাধতে মাঠে নামেন মঈন আলি। কিন্তু নাসির হোসেনের বলে মঈন আলির দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন সাকিব আল হাসান। এরপরই তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে পরাস্ত হন জস বাটলার। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত না দিলে রিভিউর আবেদন করা হয়। রিভিউতে জিতলেন মাশরাফিরাই। ৫৭ রান করে ফিরে গেলেন ইংল্যান্ডের শেষ ভরসা জস বাটলার।

এরপর ক্রিস ওকসকে সাজঘরে ফেরালেন তাসকিন আহমেদ। ৯ রান করা ডেভিড উইলিকে ফেরান মোসাদ্দেক হোসেন। তবে শেষ উইকেট জুটি বাংলাদেশকে বেশ ভালোই ভুগিয়েছে। আদিল রশিদ আর জ্যাক বাল মিলে ৪৫ রানে জুটি গড়ে বাংলাদেশের জয় বিলম্বিত করেন। অবশেষে মাশরাফির বলে নাসিরের হাতে জ্যাক বাল ক্যাচ দিলে শেষ উইকেটটির পতন হয় এবং দুর্দান্ত জয়টি এসে যায় বাংলাদেশের।

এর আগে জয়ের জন্য ২৩৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। সফরকারীদের সামনে খুব বেশি কঠিন লক্ষ্য ছিল না। তবে শুরুতে চেপে ধরার লক্ষ্যে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ স্পিন দিয়ে। সাকিব আল হাসানকে দিয়েই আক্রমণ শুরু করালেন মাশরাফি।

অন্য প্রান্তে মাশরাফি নিজেই বোলিং ওপেন করলেন এবং নিজের দ্বিতীয় ওভারেই ব্রেক থ্রু এনে দিলেন বাংলাদেশকে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে জেমস ভিন্স মাশরাফির বলটিতে শট খেলতে গেলেন; কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ উঠে গেলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ক্যাচটি তালুবন্দী করলেন।

পরের ওভারেই গত ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাট করা বেন ডাকেটকে সরাসরি বোল্ড করে ফেরালেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের ইনসুইঙ্গার রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে গিয়েছিলেন; কিন্তু ব্যাট ফাঁকি দিয়ে সোজা বলটি আঘাত হানে স্ট্যাম্পে।

মাশরাফি ঝড় থামার কোন লক্ষ্মণ ছিল না। তার সেই ঝড়ে উড়ে গেলেন ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় এবং গত ম্যাচে সেঞ্চুরিয়ান বেন স্টোকস। স্টোকসের তো স্ট্যাম্পই উড়িয়ে দিলেন তিনি। ইনিংসের ৮ম ওভারের পঞ্চম বলে জেসন রয়কে লেগ বিফোর আউট করে ফেরালেন মাঠের বাইরে।

এরপরের ওভারের চতুর্থ বলে বেন স্টোকসকে করলেন বোল্ড। গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ার, আজ ফিরলেন পুরো ডাক মেরে। ২৬ বলে ইংলিশদের পড়লো ৪ উইকেট।

Share